ইবাদত বা নেক আমল, বিশেষত অর্থসম্পদ-নির্ভর নেক আমল কবুল হওয়ার শর্ত হালাল ভক্ষণ ও হালাল সম্পদ দ্বারা ইবাদত পালন। আল্লাহ বলেন:


يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ


‘‘হে রাসূলগণ, তোমরা পবিত্র বস্ত্ত হতে আহার কর এবং সৎকর্ম কর। তোমরা যা কর সে বিষয়ে আমি অবহিত।’’[1]

এখানে মহান আল্লাহ সৎকর্ম করার পূর্বেই পবিত্র খাদ্য আহার করার কথা উল্লেখ করেছেন। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন:


يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ وَاشْكُرُوا لِلَّهِ إِنْ كُنْتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُونَ


‘‘হে মুমিনগণ, তোমাদেরকে আমি যে সব পবিত্র বস্ত্ত দিয়েছি তা থেকে আহার কর এবং আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর, যদি তোমরা শুধু তাঁরই ইবাদত কর।’’[2]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:


أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ اللَّهَ طَيِّبٌ لا يَقْبَلُ إِلا طَيِّبًا وَإِنَّ اللَّهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ .... ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ يَا رَبِّ يَا رَبِّ وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ


‘‘হে মানুষেরা, নিশ্চয় আল্লাহ পবিত্র। তিনি পবিত্র ছাড়া কোনো কিছুই কবুল করেন না। আল্লাহ মুমিনগণকে সে নির্দেশ দিয়েছেন যে নির্দেশ তিনি রাসূলগণকে দিয়েছেন ...(পবিত্র খাদ্য ভÿণের)... এরপর তিনি একজন মানুষের কথা উল্লেখ করেন, যে ব্যক্তি (আল্লাহর পথে) দীর্ঘ সফরে রত থাকে, ধূলি ধূসরিত দেহ ও এলোমেলো চুল, তার হাত দু’টি আকাশের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে সে দোয়া করতে থাকে, হে প্রভু! হে প্রভু!! কিন্তু তার খাদ্য হারাম, তার পোশাক হারাম, তার পানীয় হারাম এবং হারাম উপার্জনের জীবিকাতেই তার রক্তমাংস গড়ে উঠেছে। তার দু‘আ কিভাবে কবুল হবে?!’’[3]

অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,


لاَ يَقْبَلُ الله صَلاَةً بِغَيْرِ طُهُورٍ، وَلاَ صَدَقَةً مِنْ غُلُولٍ


‘‘ওযু-গোসল ছাড়া কোনো সালাত আল্লাহ কবুল করেন না, তেমনি গুলূল বা ফাঁকি, ধোঁকা ও অবৈধ সম্পদের কোনো দান আল্লাহ কবুল করেন না।’’[4]

বিভিন্ন হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কেউ অবৈধ সম্পদ উপার্জন করে তা থেকে দান করলে তার দানের কোনো সাওয়াব সে পাবে না এবং তার পাপের বোঝাও হালকা হবে না। এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন:


مَنْ جَمَعَ مَالاً حَرَاماً ثُمَّ تَصَدَّقَ بِهِ لَمْ يَكُنْ لَهُ فِيْهِ أَجْرٌ وَكَانَ إِصْرُهُ عَلَيْهِ


‘‘যে ব্যক্তি অবৈধভাবে সম্পদ সঞ্চয় করে এরপর তা দান করবে, সে দানের জন্য কোনো সাওয়াব পাবে না এবং তার পাপ তাকে ভোগ করতে হবে।’’[5]

[1] সূরা (২৩) মুমিনূন: ৫১ আয়াত।

[2] সূরা (২) বাকারা: ১৭২ আয়াত।

[3] মুসলিম, আস-সহীহ ২/৭০৩ (কিতাবুয যাকাত, বাবু কাবুলিস সাদাকাতি মিনাল কাসবিত...)।

[4] মুসলিম, আস-সহীহ ১/২০৪ (কিতাবুত তাহারাহ, বাবু উজূবিত তাহারাতি লিস সালাত)।

[5] ইবনু হিব্বান, আস-সহীহ: মাওয়ারিদুয যামআন ৩/১৯, ১৩৩। হাদীসটির সনদ শক্তিশালী।