তাকফীর বা মুমিনকে কাফির কথনের দ্বিতীয় দিক ঈমানের পরিধি বাড়িয়ে মুমিনকে কাফির বানানো। শীয়া, মুতাযিলা ও অন্যান্য বিভ্রান্ত দল এ নীতি অনুসরণ করে। ঈমানের ভিত্তি ওহীর জ্ঞান। কুরআনে বা সুপ্রসিদ্ধ সহীহ হাদীসে যে বিষয়গুলো সুস্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীনভাবে উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলোর বাইরে অনেক বিষয়কে এ সকল বিভ্রান্ত সম্প্রদায় ‘‘ঈমানের অংশ’’ বানায় এবং এসকল বিষয় অস্বীকার বা অমান্য করার কারণে বিরোধীদেরকে কাফির বলে আখ্যায়িত করে।
যেমন শীয়াগণ দাবি করেন যে, (১) আলী (রা)-কে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর পর মুসলিম উম্মাহর রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয় নেতৃত্বে তাঁর একমাত্র উত্তরাধিকারী ও ওসিয়তপ্রাপ্ত বলে বিশ্বাস করা, (২) সাহাবীগণ যেহেতু রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর ওফাতের পরে আলী (রা)-কে খিলাফত প্রদান করেন নি সেহেতু তাঁদেরকে অবিশ্বাসী বা বিভ্রান্ত বলে বিশ্বাস করা, (৩) সাহাবীগণকে বিদ্বেষ করা ও তাঁদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দেওয়া, (৪) আলী ও তাঁর বংশের ইমামগণের ইমামতে, নিষ্পাপত্বে, গাইবী ইলমে ও অলৌকিক ক্ষমতায় বিশ্বাস করা... ইত্যাদি বিষয় ঈমানের অংশ। এগুলো অস্বীকার করা কুফর।
এ সকল আকীদার কোনো কিছুই সুষ্পষ্টভাবে কুরআনে উল্লেখ করা হয় নি। আমরা আগেই বলেছি, শীয়গণের নিকট কুরআন ‘‘আকীদা’’ বা বিশ্বাসের উৎস নয়। তাদের বিশ্বাস যে, তাদের ভক্তিকৃত ইমাম, বুজুর্গ ও নেতৃবৃন্দ ‘ইলম লাদুন্নী’ অর্থাৎ আল্লাহ, তাঁর রাসূল ﷺ বা আলী-বংশের ঈমামগণের নিকট থেকে প্রাপ্ত বিশেষ জ্ঞানের অধিকারী। কাজেই তাদের ‘তাফসীর’ বা মতই বিশ্বাসের ভিত্তি। এরপর বিভিন্ন ফযীলত বিষয়ক আয়াত, হাদীস, ঐতিহাসিক ঘটনা, জাল হাদীস, যুক্তিতর্ক ইত্যাদির মাধ্যমে তারা এগুলো প্রমাণের চেষ্টা করেন। সর্বশেষ এগুলো অস্বীকার করাকে কুফর বলে গণ্য করে। অন্যান্য সকল বিভ্রান্ত ফিরকাও এ পদ্ধতি অনুসরণ করে।