মুসলিমগণের ধারণায় এ চিন্তা মোটেই ছিল না যে, যুদ্ধপ্রিয় এরূপ এক বিশাল বাহিনীর সম্মুখীন তাঁদের হতে হবে। এ দীর্ঘ ও দুর্গম পথ অতিক্রম করার পরে হঠাৎ এ সমস্যার মুখোমুখী হয়ে তাঁরা চিন্তায় একদম জর্জরিত হয়ে পড়লেন। তাঁদের সামনে এখন যে প্রশ্নটি সব চাইতে বড় হয়ে দেখা দিল তা হচ্ছে, দু’ লক্ষ সৈন্যের সমুদ্র সমতুল্য এ বিশাল বাহিনীর সঙ্গে মাত্র তিন হাজার সৈন্য নিয়ে তাঁরা মোকাবেলা করবেন কিনা। চিন্তায় চিন্তায় তাঁরা যেন অস্থির ও দিশেহারা হয়ে পড়লেন এবং দারুন দুশ্চিন্তা ও আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে দু’ রাত্রি সেখানে অতিবাহিত করলেন। কিছু সংখ্যক মুজাহিদ এ রকম একটি চিন্তাভাবনা করছিলেন যে, একটি পত্র লিখে শত্রু সৈন্যের সংখ্যা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে অবহিত করা হোক। এর ফলে তাঁর নিকট থেকে সঠিক নির্দেশনা লাভ কিংবা অধিক সাহায্য লাভের সম্ভাবনা থাকবে।
কিন্তু আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা (রাঃ) এ মতের বিরোধিতা করে বললেন, ‘হে ভ্রাতৃবৃন্দ! আল্লাহর কসম! যে ব্যাপারটিকে আপনারা ভয় করছেন সেটি হচ্ছে সেই শাহাদাত যার খোঁজে আপনারা বের হয়েছেন। এটা অবশ্যই স্মরণ রাখবেন যে, শত্রুর সঙ্গে আমাদের যুদ্ধ হবে সৈন্য সংখ্যা, শক্তি কিংবা সমরাস্ত্রের আধিক্যের ভিত্তিতে নয়, বরং তাদের সঙ্গে আমাদের যুদ্ধ হবে শুধুমাত্র আল্লাহর দ্বীনের খাতিরে, যার দ্বারা আল্লাহ আমাদেরকে সম্মানিত করেছেন। কাজেই, চলুন আমরা অগ্রসর হই। আল্লাহর দ্বীনের খাতিরে যুদ্ধ করতে গিয়ে আমাদের জন্য রয়েছে দুটি কল্যাণ এবং এর যে কোন একটি আমরা পাবই। আমরা বিজয়ী হলে বিজয়ের সম্মান লাভ করব, আর যদি শহীদ হয়ে যাই তাহলে শাহাদতের মর্যাদা লাভ করব।’ অবশেষে আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহাহর প্রস্তাবকৃত কথার উপর সিদ্ধান্ত হয়ে গেল।