ইসলামী সৈন্যদল যখন যাত্রার জন্য প্রস্তুত হল তখন লোকেরা এসে রাসূলে কারীম (ﷺ) কর্তৃক নিযুক্ত সেনাপতিদেরকে বিদায়ী সালাম জানালেন। ঐ সময় অন্যতম সেনাপতি রাওয়াহা ক্রন্দন করতে লাগলেন। জনগণ বললেন, ‘আপনি কেন ক্রন্দন করছেন?’
উত্তরে তিনি বললেন, ‘দেখ, আল্লাহর শপথ! (এর কারণ পৃথিবীর মায়া মহববত কিংবা তোমাদের সঙ্গে আমার মধুর সম্পর্ক এ জন্য নয়, বরং আমি রাসূলে কারীম (ﷺ)-কে আল্লাহর কিতাবের একটি আয়াত পড়তে শুনেছি যাতে জাহান্নামের উল্লেখ আছে। আয়াতটি হচ্ছে :
:(وَإِن مِّنكُمْ إِلَّا وَارِدُهَا كَانَ عَلٰى رَبِّكَ حَتْمًا مَّقْضِيًّا) [مريم:71]،
‘তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যাকে জাহান্নাম অতিক্রম করতে হবে না, এটা তোমার প্রতিপালকের অনিবার্য ফায়সালা।’ [মারইয়াম (১৯) : ৭১]
আমি জানি না যে, জাহান্নামের নিকট আগমনের পর কেমন করে ফিরে আসতে পারব?
অন্যেরা বললেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা আপনার সঙ্গী হয়ে, নিরাপত্তা দান করবেন, আপনার পক্ষ হতে শত্রুদের প্রতিহত করবেন, আপনাকে সওয়াব দ্বারা পুরস্কৃত করবেন এবং ফিরে এসে গণীমত দান করবেন। আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা আবৃত্তি করলেন :
لكنني أسأل الرحمن مغفــرة ** وضربة ذات فرع تقذف الزبدا
أو طعنة بيدي حران مجـهزة ** بحربة تنفذ الأحشـاء والكبدا
حتى يقال إذا مروا عَلٰى جدثي ** أرشده الله من غاز وقد رشدا
অর্থ : ‘কিন্তু আমি দয়ালু আল্লাহর নিকট ক্ষমা এবং হাড় কোকড়ান, মস্তিষ্ক বিচ্ছুরণকারী তরবারীর কর্তন অথবা কোন বর্শা পরিচালনাকারীর হাতগুলো, নাড়িভূঁড়িসমূহ এবং কলিজার উপর অতিক্রমকারী বর্শার আঘাতের প্রার্থনা করছি। যাতে লোকজনেরা যখন আমার কবরের পাশ দিয়ে যাত্রা করবে তখন যেন তারা বলে কি আশ্চর্য এ সেই গাজী যাকে আল্লাহ তা‘আলা হিদায়াত দিয়েছিলেন এবং যিনি হিদায়াতপ্রাপ্ত হয়েছিল।
এরপর সৈন্যদল যাত্রা শুরু করলেন। রাসূলে কারীম (ﷺ) এঁদের অনুসরণ করে সান্নায়াতুল অদা’ নামক স্থান পর্যন্ত গমন করেন এবং সেখান হতে তাদের আলবিদা (বিদায়) বলেন।[1]