আর-রাহীকুল মাখতূম দ্বিতীয় পর্যায় (الْمَرْحَلَةُ الثَّانِيَةُ) আল্লামা সফিউর রহমান মোবারকপুরী (রহঃ) ১ টি
৬. ইয়ামামা প্রধান বিন আলীর নিকট পত্র (الْكِتَابُ إِلٰى هَوْذَةَ بْنِ عَلِيْ صَاحِبُ الْيَمَامَةِ):

নাবী কারীম (ﷺ) ইয়ামামার গভর্ণর হাওযাহ বিন আলীর নিকট যে পত্র প্রেরণ করেছিলেন তা নিম্নে লিপিবদ্ধ করা হল।

‏(‏بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ . مِنْ مُحَمَّدٍ رَّسُوْلِ اللهِ إِلٰى هَوْذَةَ بْنِ عَلِيْ، سَلَامٌ عَلٰى مَنْ اِتَّبَعَ الْهُدٰى، وَاعْلَمْ أَنَّ دِيْنِيْ سَيَظْهَرُ إِلٰى مُنْتَهَي الْخفِّ وَالْحَافِرِ، فَأَسْلِمْ تَسْلَمْ، وَأجْعَلْ لَكَ مَا تَحْتَ يَدَيْكَ‏)‏‏.‏

বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম

আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর পক্ষ হতে হাওযাহ বিন আলীর প্রতি-

সে ব্যক্তির উপর শান্তি বর্ষিত হোক যে হেদায়াতের অনুসরণ করে। আপনাদের জানা উচিত যে আমার দ্বীন উট এবং ঘোড়াগুলোর উপস্থিতির শেষ পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করে থাকবে। অতএব, ইসলাম গ্রহণ করুন, শান্তিতে থাকবেন। আপনার অধীনস্থ যা কিছু আছে তা আপনার জন্য স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত রাখব।’

এ পত্রখানা বহনের জন্য দূত বা প্রতিনিধি হিসেবে সালীত্ব বিন ‘আমর আমেরীকে (রাঃ) মনোনীত করা হয়। সালীত্ব (রাঃ) এ মোহরাঙ্কিত পত্রখানা নিয়ে হাওযাহর নিকট গমন করেন। হাওযাহ তাঁকে যথেষ্ট আদর আপ্যায়ন ও আতিথ্য প্রদান করেন। সালীত (রাঃ) তাঁকে পত্রখানা পাঠ করে শোনান। পত্রের মর্ম অবগত হওয়ার পর তিনি মধ্যম পন্থায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর খিদমতে লিখলেন,

ما احسن ما تدعون اليه واجمله والعرب تهاب مكانى فاجعل لي بعض الامر اتبعك

‘আপনি যে বিষয়ের প্রতি আহবান জানাচ্ছেন তার উৎকর্ষতা এবং শ্রেষ্ঠতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসার কিছুই নেই। এ ব্যাপারে আমার অন্তরে যথেষ্ট ভয় ভীতির সঞ্চার হয়েছে এবং আমি কিছু খিদমত প্রদানের মনস্থ করেছি। অতএব, আমার উপর কিছু কাজ কর্মের দায়িত্ব অর্পণ করা হলে আমি আপনার আনুগত্য করার জন্য প্রস্তুত আছি।’ তিনি সালীত্ব (রাঃ)-কে অনেক উপঢৌকনও প্রদান করেন। তাঁকে হিজরের তৈরি কাপড় চোপড়ও প্রদান করেন। সালীত্ব (রাঃ) এ সকল উপঢৌকনসহ মদীনায় ফিরে এসে খিদমতে নাবাবীতে উপস্থিত হন এবং সব কিছুর সম্পর্কে অবহিত করেন।

নাবী কারীম (ﷺ)-কে পত্রখানা পাঠ করে শোনানো হলে তিনি বললেন,

(‏لَوْ سَأَلَنِيْ قِطْعَةً مِّنْ الْأَرْضِ مَا فَعَلَتُ، بَادٍ، وَبَادِ مَا فِيْ يَدِيْهِ‏)‏‏

‘যদি সে জমিনের একটি অংশ আমার নিকট থেকে চায় তবুও আমি তাকে তা দিব না। সে নিজে ধ্বংস হবে এবং তার হাতে যা কিছু আছে সবই ধ্বংস হবে’’। অতঃপর যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মক্কা বিজয়ের পর ফিরে আসেন তখন জিবরাঈল (আঃ) এ সংবাদ প্রদান করেন যে, হাওযার মৃত্যু হয়েছে।

নাবী কারীম (ﷺ) বললেন,

(‏أَمَا إِنَّ الْيَمَامَةَ سَيَخْرِجُ بِهَا كَذَّابٌ يَتَنَبّيٰ، يُقْتَلُ بَعْدِيْ‏)

‘শোন! ইয়ামামায় একজন মিথ্যুকের আবির্ভাব ঘটবে যাকে আমার পর হত্যা করা হবে।’

একজন বলে উঠলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! তাকে কে হত্যা করবে।’ নাবী কারীম (ﷺ) বললেন, ‏(‏أَنْتَ وَأَصْحَابُكَ‏)‏ ‘তুমি ও তোমার সাথীরা। বাস্তবিক পক্ষে তাই হয়েছিল।[1]

[1] যা’দুল মা’আদ ৩য় খন্ড ৬৩ পৃঃ।