এরূপ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর কঠোর আদেশ এবং সেনাপতির নিষেধ অমান্য করার ফলও ফলতে শুরু হল। আরবের বিখ্যাত বীর এবং রণকুশলী সেনাপতি খালিদ ইবনু ওয়ালীদ ঘোড়সওয়ার সেনাদল নিয়ে চারদিকে চক্রাকারে সুযোগের সন্ধান করে বেড়াচ্ছিল। সে আর কালবিলম্ব না করে সেই অরক্ষিত পথের দিকে নক্ষত্রবেগে ঘোড়া ছুটিয়ে দিল এবং দেখতে দেখতে পশ্চাদদিক দিয়ে মুসলিমগণের মাথার উপর এসে উপস্থিত হ’ল। শ্রেষ্ঠবীর আব্দুল্লাহ তাঁর সহচর কয়েকজনকে নিয়ে জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর আদেশ পালন করে চললেন। কিন্তু অল্পক্ষণের মধ্যে তাঁরা সবাই শাহাদত বরণ করলেন। এদিকে মুসলিম সৈন্যরা নির্ভাবনায় গণীমতের মাল সংগ্রহ করতে ব্যাপৃত আছেন। এমন সময় প্রথমে খালিদের ঘোড়সওয়ার সেনাদল এবং তার পর অন্যান্য ঘোড়সওয়ার ও পদাতিক সেনাদল অতর্কিত অবস্থায় তাদেরকে ভীষণভাবে আক্রমণ করল এবং সতর্ক হবার আগেই বহু মুসলিমকে কুরাইশদের হাতে নিহত হতে হল। কুরাইশদের জাতীয় পতাকা এতক্ষণ মাটিতে গড়াগড়ি যাচ্ছিল। খালিদের এ আক্রমণ এবং মুসলিমগণের উপস্থিত সংকটাপন্ন অবস্থা দেখে আমরাহ বিনতু আলকামা নামে জনৈকা কুরাইশ বীরাঙ্গনা আবার তা তুলে ধরল। সম্পূর্ণ পরাজয়ের পর ভূলুণ্ঠিত জাতীয় পতাকাকে পুনরায় যুদ্ধ ক্ষেত্রে উড্ডীয়মান হতে দেখে ছুটে বিক্ষিপ্ত ও পলায়নপর কুরাইশ সৈন্যগণ আবার সেই পতাকার দিকে ছুটে আসল এবং তারা আবার দলবদ্ধভাবে মুসলিমগণকে আক্রমণ করল। এবার মুসলিমরা অগ্রপশ্চাৎ দু’ দিক হতে আক্রান্ত হয়ে যাঁতার মধ্যস্থলে পড়লে যে অবস্থা হয় তাই হল।