কিন্তু বড় তাগুত আবূ জাহল যখন নিজ সারির সৈন্যদলের মধ্যে বিশৃঙ্খল অবস্থা প্রত্যক্ষ করল তখনও সে নিজ অবস্থানে সুদৃঢ় থাকার মনস্থ করল। কাজেই সে নিজ দলের সৈন্যগণকে উচ্চ কণ্ঠে এবং আত্মম্ভরিতার সঙ্গে বলতে থাকল যে, ‘যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সুরাক্বাহর সরে পড়ার কারণে তোমরা মনোবল হারিও না যেন, কারণ সে পূর্ব হতেই মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। ‘উতবাহ, শায়বাহ এবং ওয়ালীদের হত্যার কারণেও তোমাদের ভীত হওয়ার কোন কারণ নেই। তাড়াহুড়োর মধ্যে কাজ করতে গিয়েই তাদের এ অবস্থা হয়েছে। লাত ও উযযার শপথ! তাদেরকে রশি দ্বারা শক্ত করে বেঁধে না ফেলা পর্যন্ত আমরা প্রত্যাবর্তন করব না। দেখ, তোমাদের কোন ব্যক্তি তাদের কাউকেও যেন হত্যা না করে। আমরা যেন তাদেরকে অন্যায়ের শাস্তি দিতে পারি এ উদ্দেশ্যে তাদেরকে ধর এবং বন্দী কর।’
কিন্তু তার এ অসার অহমিকার প্রতিফল শীঘ্রই তাকে অনুধাবন করতে হল। কারণ মুহূর্তের মধ্যেই মুসলিমদের পক্ষ থেকে পাল্টা আক্রমণ শুরু হয়ে গেল এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই তাদের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে ছিন্ন ভিন্ন করে ফেলল। কিন্তু আবূ জাহল তার চতুষ্পাশের একদল জনতাকে বেশ সংঘবদ্ধ অবস্থাতেই রেখেছিল। এ জনতা তার চতুর্দিকে তরবারীর প্লাবন ও বর্শার জঙ্গল সৃষ্টি করে রেখেছিল। কিন্তু ইসলামী জনতার প্রলয়ঙ্করী তুফান তার তরবারীর প্লাবন এবং বর্শার জঙ্গলকে একদম তছনছ করে ফেলল। তারপর এ বড় তান্ডত মর্দে মু’মিনদের দৃষ্টিসীমার মধ্যে এসে গেল। মুসলিম সৈন্যরা দেখতে পেলেন যে, সে এক ঘোড়ার পিঠে চড়ে চক্কর দিয়ে বেড়াচ্ছে। এদিকে আনসারী যুবকের হাতে তার মৃত্যু রক্ত চুষে নেয়ার অপেক্ষায় ছিল।