জবাব: রূহ দু’প্রকার:
১- ‘আযাবপ্রাপ্ত রূহ – আল্লাহর কাছে পানাহ চাচ্ছি- এ ধরণের রূহ শাস্তি ভোগের কারণে ব্যস্ত থাকবে বলে পরস্পর দেখা সাক্ষাৎ ও মিলিত হওয়া থেকে বিরত থাকবে।
২- নি‘আমতপ্রাপ্ত রূহ। এসব রূহ বিচরণকারী হবে, এরা আবদ্ধ থাকবে না। তারা পরস্পর মিলিত হয়ে দুনিয়া ও দুনিয়ায় বসবাসকারীদের ব্যাপারে কথাবার্তা বলবেন এবং নিজেরা নিজেদের পরিচিতদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করবেন। প্রত্যেক রূহ তার আমল অনুযায়ী তার পরিচিত বন্ধুর সাথে থাকবেন। আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বোচ্চ বন্ধুর সাথে থাকবেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
﴿وَمَن يُطِعِ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَ فَأُوْلَٰٓئِكَ مَعَ ٱلَّذِينَ أَنۡعَمَ ٱللَّهُ عَلَيۡهِم مِّنَ ٱلنَّبِيِّۧنَ وَٱلصِّدِّيقِينَ وَٱلشُّهَدَآءِ وَٱلصَّٰلِحِينَۚ وَحَسُنَ أُوْلَٰٓئِكَ رَفِيقٗا٦٩﴾ [النساء : ٦٩]
“আর যারা আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করে তারা তাদের সাথে থাকবে, আল্লাহ যাদের উপর অনুগ্রহ করেছেন নবী, সিদ্দীক, শহীদ ও সৎকর্মশীলদের মধ্য থেকে। আর সাথী হিসেবে তারা হবে অনেক উত্তম।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৬৯]
দুনিয়ায়, বারযাখে ও জান্নাতে এভাবে একত্রে থাকা সাব্যস্ত আছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
﴿يَٰٓأَيَّتُهَا ٱلنَّفۡسُ ٱلۡمُطۡمَئِنَّةُ ٢٧ ٱرۡجِعِيٓ إِلَىٰ رَبِّكِ رَاضِيَةٗ مَّرۡضِيَّةٗ ٢٨ فَٱدۡخُلِي فِي عِبَٰدِي ٢٩ وَٱدۡخُلِي جَنَّتِي٣٠﴾ [الفجر: ٢٧، ٣١]
“হে প্রশান্ত আত্মা! তুমি ফিরে এসো তোমার রবের প্রতি সন্তুষ্টচিত্তে, সন্তোষভাজন হয়ে। অতঃপর আমার বান্দাদের মধ্যে শামিল হয়ে যাও। আর প্রবেশ করো আমার জান্নাতে।” [সূরা আল-ফাজর, আয়াত: ২৭-৩১] অর্থাৎ তাদের সাথে শামিল হও এবং তাদের সাথে থাকো। আর এ কথা মৃত্যুর সময় আত্মাকে বলা হবে।
আল্লাহ তা‘আলা শহীদদের সম্পর্কে বলেছেন,
﴿أَحۡيَآءٌ عِندَ رَبِّهِمۡ يُرۡزَقُونَ ١٦٩﴾
“তারা তাদের রবের নিকট জীবিত। তাদেরকে রিযিক দেওয়া হয়।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৬৯]
আল্লাহ তা‘আলা শহীদদের সম্পর্কে আরও বলেছেন,
﴿يَسۡتَبۡشِرُونَ بِٱلَّذِينَ لَمۡ يَلۡحَقُواْ بِهِم مِّنۡ خَلۡفِهِمۡ﴾
“আর তারা উৎফুল্ল হয়, পরবর্তীদের থেকে যারা এখনো তাদের সাথে মিলিত হয় নি তাদের বিষয়ে।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৭০]
আল্লাহ তা‘আলা শহীদদের সম্পর্কে আরও বলেছেন,
﴿يَسۡتَبۡشِرُونَ بِنِعۡمَةٖ مِّنَ ٱللَّهِ وَفَضۡلٖ١٧١ ﴾ [ال عمران: ١٦٩، ١٧١]
“তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে নি‘আমত ও অনুগ্রহ লাভ করে খুশি হয়।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৭১] এ আয়াতসমূহ দ্বারা তাদের পরস্পর মিলিত হওয়া তিনভাবে প্রমাণিত হয়:
১- তারা (শহীদগণ) জীবিত। আর জীবিতরা পরস্পর পরস্পরের সাথে মিলিত হয়, দেখা সাক্ষাৎ করে।
২- তারা তাদের পরবর্তীতে আগমনকারী ভাইদের আগমন ও তাদের সাথে দেখা হওয়ার ব্যাপারে আনন্দিত ও উৎফুল্ল।
৩-﴿يَسۡتَبۡشِرُونَ﴾ শব্দ প্রমাণ করে যে, তারা পরস্পর পরস্পরে সুসংবাদ দেয় ও খুশি হয়।