১- কখনো তাবে‘ঈর কথা বা কর্ম দ্বারা মারফূ‘ হাদিসের ইল্লত জানা যায়, যেমন কোনো হাদিস এক সনদে মারফূ‘ ও অপর সনদে মাকতু‘ বর্ণিত, তবে মারফূ‘ অপেক্ষা মাকতুর সনদ অধিক বিশুদ্ধ, তখন মাকতু‘র কারণে মারফূ‘ মু‘আল্ হবে।
২- তাবে‘ঈর বাণী কখনো হুকমান মারফূ‘ হয়, যেমন কোনো তাবে‘ঈ বলল: “এরূপ করা সুন্নত”; অথবা বললেন: “আমাদেরকে এরূপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে”, অথবা কোনো গায়েবি বিষয়ে সংবাদ দিলেন, যেখানে গবেষণার সুযোগ নেই। তাদের এ জাতীয় সংবাদ মারফূ‘ মুরসাল, যা ‘শাহিদ’ দ্বারা শক্তিশালী হয়ে মাকবুল পর্যন্ত উত্তীর্ণ হয়। কেউ তাবে‘ঈর এ জাতীয় সংবাদকে মাওকুফ বলেন; মাওকুফ কখনো দলিল হয়, সামনে তার বর্ণনা আসছে।
৩- সাহাবিদের ন্যায় তাবে‘ঈগণ আমাদের আদর্শ পুরুষ, আমরা তাদের অনুসরণ করে কুরআন ও সুন্নাহ বুঝি। অতএব কারো কথা ও ইজতিহাদ কোনো তাবে‘ঈর কথা ও ইজতিহাদের ন্যায় হলে ইজতিহাদ মজবুত হয় যে, অমুক তাবে‘ঈ তার মত বলেছেন। যার কথা ও ইজতিহাদ আদর্শ পুরুষদের কথা ও ইজতিহাদের মত নয়, আমরা সেগুলো প্রত্যাখ্যান করব।
৪- তাবে‘ঈদের বাণী ও কর্ম সংরক্ষণ করার ফলে তাদের ইখতিলাফ তথা মতপার্থক্য ও ইত্তিফাক তথা মতৈক্য জানা যায়। আমরা তাদের ইত্তিফাক থেকে বের হব না, আর তাদের ইখতিলাফের ক্ষেত্রে দলিল ও উসুলের ভিত্তিতে বিশুদ্ধ অভিমত গ্রহণ করব। নতুন কোনো মত সৃষ্টি করব না এবং তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হব না।
৫- তাবে‘ঈদের ইখতিলাফ (মতপার্থক্য) থেকে মুজতাহিদ সঠিক মত গ্রহণ করতে সক্ষম হন। কোনো মুজতাহিদ কোনো তাবে‘ঈর মত গ্রহণ করে জমহুর বা একাধিক আলেমের বিপরীত অবস্থান নিলে তাকে কাফের, ফাসেক বা গোমরাহ বলা যাবে না, কারণ তার স্বপক্ষে তাবে‘ঈ রয়েছে এবং বিষয়টি ইজতিহাদ ও গবেষণাধর্মী। শায়খুল ইসলাম ইব্ন তাইমিয়া রাহিমাহুল্লাহ্ এ জাতীয় অনেক ইখতিলাফ করেছেন।
৬- কখনো মাকতু দ্বারা মারফূ‘র অর্থ জানা যায়।
জ্ঞাতব্য: ইমাম যারকাশি রাহিমাহুল্লাহ্ মাকতু‘কে হাদিসের প্রকার বলার ব্যাপারে আপত্তি করেছেন। তিনি বলেন: মাকতু‘কে হাদিস বলা ভুল, কারণ তাবে‘ঈর বাণী ও মাযহাব হাদিস নয়।
তার আপত্তির উত্তর: একটি হাদিস মারফূ‘ ও মাকতু উভয় সনদে বর্ণিত হলে শক্তিশালী সনদের ভিত্তিতে ফয়সালা করা হয়, যদি মাকতু‘কে হাদিসের প্রকার হিসেবে সংরক্ষণ করা না হয়, তাহলে এটা সম্ভব নয়। দ্বিতীয়ত তাবে‘ঈর কতক বাণী মারফূ‘র হুকুম রাখে, এ হিসেবে মাকতু‘কে হাদিসের প্রকার গণ্য করা যথাযথ। এ বিষয়টি যারকাশি নিজেও স্বীকার করেছেন। তৃতীয়ত অনেক মুহাদ্দিস এ প্রকারকে হাদিস বলেছেন, তাই তাকে হাদিস গণ্য করা যথাযথ”।[1]
>