শায়খ আহমাদ ইবনে ইয়াহ্‌ইয়া আন-নাজমী'র বক্তব্য

মুক্বীম অবস্থায় আমীর মনোনয়ন করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হাদীছে যে আমীর নিযুক্ত করার কথা বলা হয়েছে, তা সফরের সাথে নির্দিষ্ট। মুক্বীম অবস্থায় রাষ্ট্রের মুসলিম শাসকই সবার জন্য যথেষ্ট। অন্য কোনো আমীর নিযুক্ত করা বৈধ নয়। কারণ, সেক্ষেত্রে দ্বন্দ্ব ও ফাসাদ সৃষ্টি হবে। অতএব, যে ব্যক্তি বলবে, মুসলিম শাসক ছাড়া মুক্বীম অবস্থায় অন্য কোনো আমীর নিযুক্ত করা শরী‘আত সম্মত, তাকে তার পক্ষে দলীল পেশ করতে হবে। আর একথা সত্য যে, সে কস্মিনকালেও তার পক্ষের দলীল পাবে না।([1])

অন্যত্র তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক আমীর নিযুক্তের অনুমতির বিষয়টি সফরের সাথে নির্দিষ্ট। যে ব্যক্তি বলবে, সফরে আমীর নিযুক্ত করা বৈধ হলে মুক্বীম অবস্থায় আমীর নিযু্ক্ত করাও বৈধ, সে মূর্খ; সে শরী‘আতের কিছুই জানে না। তার উচিৎ, মূর্খতা বাইরে প্রকাশ না করে লুকানোর চেষ্টা করা।([2])

বায়‘আত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বায়‘আত হচ্ছে মুসলিম শাসকের অধিকার। সুতরাং শাসক ছাড়া অন্য কেউ কারো নিকট থেকে বায়‘আত গ্রহণ করল, সে দ্বীনের মধ্যে নিন্দিত বিদ‘আত সৃষ্টি করল। আমরা যদি হক্কানী আলেমগণের জীবনীর দিকে দৃষ্টিপাত করি, তাহলে সহজেই বুঝতে পারব, তাঁরা দা‘ওয়াতী কাজ করতে গিয়ে কারো কাছ থেকে আনুগত্যের বায়‘আত গ্রহণ করেন নি। শায়খ মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল ওয়াহহাব হিজরী ১২ শতাব্দীতে নাজদে দা‘ওয়াতী কাজ করেছেন। কিন্তু কারো কাছ থেকে আনুগত্যের বায়‘আত গ্রহণ করেন নি। তেমনিভাবে শায়খ আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ আল-ক্বার‘আবী সঊদী আরবের দক্ষিণাঞ্চলে দা‘ওয়াতী কাজ করেছেন। তিনিও কারো থেকে বায়‘আত নেন নি। আমরা যদি আরেকটু পূর্বে ফিরে যায়, তাহলে লক্ষ্য করব, শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াও কারো কাছ থেকে বায়‘আত গ্রহণ করেন নি। অথচ মহান আল্লাহ তাঁদের সকলের দা‘ওয়াতে বরকত দান করেছেন। প্রকৃতপক্ষে তাঁরাই সালাফী দা‘ওয়াতের ধারক ও বাহক। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বিদ‘আতীরা বিদ‘আত প্রচার করা থেকে বিরত হয় নি।([3])

([1]) আহমাদ আন-নাজমী, আল-মাওরেদুল আযবুয-যালাল ফীমা উনতুক্বিদা আলা বা‘যিল মানাহিজিদ-দা‘বিইয়াহ মিনাল আক্বাইদি ওয়াল আ‘মাল, পৃ: ২০৫।

([2]) আহমাদ আন-নাজমী, আল-ফাতাওয়া আল-জালিইয়াহ আনিল মানাহিজ আদ-দা‘বিইয়াহ, (ফুরকান লাইব্রেরী, আজমান, দ্বিতীয় প্রকাশ: ১৪২১ হি:), পৃষ্ঠাঃ ৪৪-৫১।

([3]) আল-মাওরেদুল আযবুয-যালাল ফীমা উনতুক্বিদা আলা বা‘যিল মানাহিজিদ-দা‘বিইয়াহ মিনাল আক্বাইদি ওয়াল আ‘মাল, পৃ: ২০৫।
----------------------
বিখ্যাত মুহাদ্দিছ এবং ফক্বীহ আহমাদ আন-নাজমী ১৩৪৬ হিজরীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি খ্যাতিমান আলেমগণের নিকট থেকে শিক্ষাগ্রহণ করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য শিক্ষকবৃন্দের মধ্যে রয়েছেনঃ সঊদী আরবের সাবেক প্রধান মুফতী শায়খ মুহাম্মাদ ইবনে ইবরাহীম, আব্দুল্লাহ আল-ক্বারআবী, হাফেয ইবনে আহমাদ আল-হাকামী প্রমুখ। তাঁর উল্লেখযোগ্য ছাত্রবৃন্দের মধ্যে রয়েছেনঃ শায়খ রবী আল-মাদখালী, আলী ইবনে নাছের আল-ফাক্বীহী প্রমুখ। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলীর মধ্যে ১. তা’সীসুল আহকাম শারহু উমদাতিল আহকাম ২. ফাতহুর-রব্বিল ওয়াদুদ ফিল ফাতাওয়া ওয়ার-রুদূদ ৩. তানযীহুশ-শারী‘আহ আন ইবাহাতিল আগানী আল-খালী‘আহ উল্লেখযোগ্য।