কিতাবুত তাওহীদ ১ হতে ৬৭ তম অধ্যায় মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব ১ টি
৪৮ - আল্লাহর যিকির, কুরআন এবং রাসূল সম্পর্কিত কোন বিষয় নিয়ে খেল- তামাশা করা প্রসংগে

১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন,

وَلَئِنْ سَأَلْتَهُمْ لَيَقُولُنَّ إِنَّمَا كُنَّا نَخُوضُ وَنَلْعَبُ (التوبة :65)

‘‘আপনি যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, তবে তারা অবশ্যই বলবে, আমরা খেল- তামাশা করছিলাম।’’ (ফুসসিলাত . ৫০)

২। ইবনে ওমর, মুহাম্মদ বিন কা’ব, যায়েদ বিন আসলাম এবং কাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, [তাদের একের কথা অপরের কথার মধ্যে সামঞ্জস্য আছে] তাবুক যুদ্ধে একজন লোক বললো, এ ক্বারীদের [কুরআন পাঠকারীর] মত এত অধিক পেটুক, কথায় এত অধিক মিথ্যুক এবং যুদ্ধের ময়দানে শত্রুর সাক্ষাতে এত অধিক ভীরু আর কোন লোক দেখিনি। অর্থাৎ লোকটি তার কথা দ্বারা মুহাম্মদ সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম এবং তাঁর ক্বারী সাহাবায়ে কেরামের দিকে ইঙ্গিত করেছিলো। আওফ বিন মালেক লোকটিকে বললেন, ‘তুমি মিথ্যা কথা বলেছো। কারণ, তুমি মুনাফিক।’

আমি অবশ্যই রাসূল সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়াসাল্ল­ামকে এ খবর জানাবো। আওফ তখন এ খবর জানানোর জন্য রাসূল সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়াসাল্ল­াম এর কাছে চলে গেলেন। গিয়ে দেখলেন কুরআন তাঁর চেয়েও অগ্রগামী [অর্থাৎ আওফ পৌছার পূর্বেই অহীর মাধ্যমে রাসূল সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়াসাল্ল­াম ব্যাপারটি জেনে ফেলেছেন] এ ফাঁকে মুনাফিক লোকটি তার উটে চড়ে রাসূল সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়াসাল্ল­াম এর কাছে চলে আসলো। তারপর সে বললো, ‘হে আল্ল­াহর রাসূল, চলার পথে আমরা অন্যান্য পথচারীদের মত পরস্পরের হাসি, রং- তামাশা করছিলাম’ যাতে করে আমাদের পথ চলার কষ্ট লাঘব হয়। ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন, এর উটের গদির রশির সাথে লেগে আমি যেন তার দিকে তাকিয়ে দেখছিলাম। পাথর তার পায়ের উপর পড়ছিলো, আর সে বলছিলো, ‘আমরা হাসি ঠাট্টা করছিলাম।’ তখন রাসূল সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়াসাল্ল­াম তাকে উদ্দেশ্য করে বললেন,

أبالله وآياته ورسوله كنتم تستهزئون

‘‘তোমরা কি আল্ল­াহ, তাঁর আয়াত [কুরআন] এবং তাঁর রাসূলের সাথে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করছিলে?

তিনি তার দিকে [মুনাফিকের দিকে] দৃষ্টিও দেননি। এর অতিরিক্ত কোন কথাও বলেননি।

এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায় :

১। এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে একথা অনুধাবন করা যে, আল্লাহ, কুরআন ও রাসূলের সাথে যারা ঠাট্টা বিদ্রুপ করে তারা কাফের।

২। এ ঘটনা সংশি­ষ্ট আয়াতের তাফসীর ঐ ব্যক্তির জন্য যে, এ ধরনের কাজ করে অর্থাৎ আল্ল­াহ, কুরআন ও রাসূলের সাথে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে।

৩। চোগলখুরী এবং আল্ল­াহ ও তাঁর রাসূলের উদ্দেশ্যে নসীহতের মধ্যে পার্থক্য।

৪। এমন ওযরও রয়েছে যা গ্রহণ করা উচিৎ নয়।