১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন,
أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ يَزْعُمُونَ أَنَّهُمْ آَمَنُوا بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنْزِلَ مِنْ قَبْلِكَ يُرِيدُونَ أَنْ يَتَحَاكَمُوا إِلَى الطَّاغُوتِ وَقَدْ أُمِرُوا أَنْ يَكْفُرُوا بِهِ وَيُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَنْ يُضِلَّهُمْ ضَلَالًا بَعِيدًا. ﴿ألنساء: 60﴾
‘‘আপনি কি তাদেরকে দেখেননি যারা আপনার উপর যে কিতাব নাযিল হয়েছে এবং আপনার পূর্বে যা নাযিল হয়েছে তার প্রতি ঈমান এনেছে বলে দাবী করে? তারা বিচার ফয়সালার জন্য তাগুত [খোদাদ্রোহী শক্তি] এর কাছে যায়, অথচ তা অস্বীকার করার জন্য তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে আর শয়তান তাদেরকে চরম গোমরাহীতে নিমজ্জিত করতে চায়।’’ (নিসা . ৬০)
وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ لَا تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ قَالُوا إِنَّمَا نَحْنُ مُصْلِحُونَ .﴿ البقرة: 11﴾
‘‘তাদেরকে যখন বলা হয়, তোমরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না, তখন তারা বলে, আমরাইতে শান্তিকামী।’’ (বাকারা . ১১)
৩। আল্লাহ তাআলা অন্যত্র এরশাদ করেছেন,
وَلَا تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ بَعْدَ إِصْلَاحِهَا (الأعراف: 56)
‘‘পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর তোমর বিপর্যয় সৃষ্টি করো না।’’ (আ’রাফ . ৫৬)
৪। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেছেন,
أَفَحُكْمَ الْجَاهِلِيَّةِ يَبْغُونَ وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ اللَّهِ حُكْمًا لِقَوْمٍ يُوقِنُونَ ﴿المائدة: 50﴾
‘‘তারা কি বর্বর যুগের আইন চায়?’’ (মায়েদা . ৫০)
৫। আব্দুলাহ বিন ওমর থেকে বর্ণিত আছে, ‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম এরশাদ করেছেন,
لايؤمن أحدكم حتى يكون هواه تبعا لما جئت به
‘‘তোমাদের কেউ ঈমানাদর হতে পারবে না, যতক্ষণ না তার প্রবৃত্তি আমার আনীত আদর্শের অধীন হয়।’’ (ইমাম নববী হাদীসটিকে সহী বলেছেন)
৬। ইমাম শা’বী (রহ:) বলেছেন, একজন মুনাফিক এবং একজন ইহুদীর মধ্যে (একটি ব্যাপারে) ঝগড়া ছিলো। ইহুদী বললো, ‘আমরা এর বিচার- ফয়সালার জন্য মুহাম্মদ (স:) এর কাছে যাবো, কেননা মুহাম্মদ (স:) ঘুষ গ্রহণ করেন না, এটা তার জানা ছিলো। আর মুনাফিক বললো, ‘ফায়সালার জন্য আমরা ইহুদী বিচারকের কাছে যাবো, কেননা ইয়াহুদীরা ঘুষ খায়, এ কথা তার জানা ছিলো। পরিশেষে তারা উভয়েই এ সিদ্ধান্তে উপনীত হলো যে, তারা এর বিচার ও ফয়সালার জন্য জোহাইনা গোত্রের এক গণকের কাছে যাবে। তখন এ আয়াত নাযিল হয় .
ألم ترى إلى الذين يزعمون...... الأية
আরেকটি বর্ণনা মতে জানা যায়, ঝগড়া- বিবাদে লিপ্ত দু’জন লোকের ব্যাপারে এ আয়াত নাযিল হয়েছে। তাদের একজন বলেছিলো, মীমাংসার জন্য আমরা নবী (স:) এর কাছে যাবো, অপরজন বলেছিলো, কা’ব বিন আশরাফের কাছে যাবো।’ পরিশেষে তারা উভয়ে বিষয়টি মীমাংসার জন্য ওমর রা. এর কাছে সোপর্দ করলো। তারপর তাদের একজন ঘটনাটি তাঁর কাছে উলেখ করলো। সে ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম এর বিচার ফয়সালার ব্যাপারে সন্তুষ্ট হতে পারলো না, তাকে লক্ষ্য করে ওমর রা. বললেন, ঘটনাটি কি সত্যিই এরকম? সে বললো, হ্যা, তখন তিনি তরবারির আঘাতে তাকে হত্যা করে ফেললেন।’’
এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায়.
১। সূরা নিসার ৬০ নং আয়াতের তাফসীর এবং তাগুতের মর্মার্থ বুঝার ক্ষেত্রে সহযোগিতা।
২। সূরা বাকারার ১১ নং আয়াতের ব্যাখ্যা।
৩। সূরা আরাফের ৫৬ নং আয়াতের তাফসীর।
৪। সূরা মায়েদার أفحلكم الجاهلية يبغون এর তাফসীর।
৫। এ অধ্যায়ের প্রথম আয়াত
ألم ترى إلى الذين يزعمون ..... الأية
নাযিল হওয়ার সম্পর্কে শা’বী রহ. এর বক্তব্য।
৬। সত্যিকারের ঈমান এবং মিথ্যা ঈমানের ব্যাখ্যা।
৭। মুনাফিকের সাথে ওমর রা. এর ব্যবহার সংক্রান্ত ঘটনা।
৮। প্রবৃত্তি যতক্ষণ পর্যন্ত রাসূল স. এর আনীত আদর্শের অনুগত হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত কারো ঈমান পূর্ণাঙ্গ না হওয়ার বিষয়।