১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন,
وَلَقَدْ عَلِمُوا لَمَنِ اشْتَرَاهُ مَا لَهُ فِي الْآَخِرَةِ مِنْ خَلَاقٍ (ألبقرة: 102)
‘‘তারা অবশ্যই অবগত আছে, যে ব্যক্তি তা [যাদু] ক্রয় করে নিয়েছে, পরকালে তার কোন সুফল পাওনা নেই।’’ (বাকারা: ১০২)
২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেছেন,
يؤمنون بالجبت والطاغوت (نساء : ৫১)
তারা ‘জিবত’ এবং ‘তাগুত’ কে বিশ্বাস করে। (নিসাঃ ৫১)
ওমর রা. বলেছেন, ‘জিবত’ হচ্ছে যাদু, আর ‘তাগুত’ হচ্ছে শয়তান।
জাবির রা. বলেছেন, ‘তাগুত’ হচ্ছে গণক। তাদের উপর শয়তান অবতীর্ণ হতো প্রত্যেক গোত্রের জন্যই একজন করে গণক নির্ধারিত ছিল।
৩। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন,
إجتنبوا السبع الموبقات، قالو: يا رسول الله، وما هن؟ قال: الشرك بالله، والسحر،وقتل التي حرم الله إلا بالحق، وأكل الربا، وأكل مال اليتيم، والتولى يوم الزحف وقذف المحصنات الغافلات المؤمنات.
‘‘তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক জিনিস থেকে বেঁচে থাকো। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ ঐ ধবংসাত্মক জিনিসগুলো কি? তিনি জবাবে বললেন,
১। আল্লাহর সাথে শিরক করা। ২। যাদু করা। ৩। অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা যা আল্লাহ তাআলা হারাম করে দিয়েছেন। ৪। সুদ খাওয়া। ৫। এতিমের সম্পদ আত্মসাৎ করা। ৬। যুদ্ধের ময়দান থেকে পলায়ন করা। ৭। সতী সাধ্বী মোমিন মহিলাকে অপবাদ দেয়া।
৪। যুনদুব রা. থেকে ‘মারফু’ হাদীসে বর্ণিত আছে,
حد الساحر ضربة بالسيف (رواه الترمذي)
‘‘যাদু করের শাস্তি হচ্ছে তলোয়ারের আঘাতে গর্দান উড়িয়ে দেয়া’’ [মৃত্যু দন্ড]। (তিরমিজি)
৫। সহীহ বুখারীতে বাজালা বিন আবাদাহ থেকে বর্ণিত আছে, ওমর রা. মুসলিম গভর্ণরদের কাছে পাঠানো নির্দেশনামায় লিখেছেন,
أن اقتلو كل ساحر وساحرة
‘‘তোমরা প্রত্যেক যাদুকর পুরুষ এবং যাদুকর নারীকে হত্যা করো।’’
বাজালা বলেন, এ নির্দেশের পর আমরা তিনজন যাদুকরকে হত্যা করেছি।
৬। হাফসা রা. থেকে বর্ণিত সহীহ হাদীসে আছে, তিনি তাঁর অধীনস্ত একজন বান্দী (ক্রীতদাসী) কে হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন, যে দাসী তাঁকে যাদু করেছিলো। অতঃপর উক্ত নির্দেশে তাকে হত্যা করা হয়েছে। একই রকম হাদীস জুনদাব থেকে সহীহভাবে বর্ণিত হয়েছে। ইমাম আহমাদ রহ. বলেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর তিনজন সাহাবী থেকে একথা সহীহ ভাবে বর্ণিত হয়েছে।
এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায়ঃ
১। সূরা বাকারার ১০২ নং আয়াতের তাফসীর।
২। সূরা নিসার ৫১ নং আয়াতের তাফসীর।
৩। ‘জিবত’ এবং ‘তাগুত’ এর ব্যাখ্যা এবং উভয়ের মধ্যে পার্থক্য।
৪। ‘তাগুত’ কখনো জিন আবার কখনো মানুষ হতে পারে।
৫। ধ্বংসাত্মক সাতটি এমন বিশেষ বিষয়ের জ্ঞান যে ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে।
৬। যাদুকরকে কাফের ঘোষণা দিতে হবে।
৭। তাওবার সুযোগ ছাড়াই যাদুকরকে হত্যা করতে হবে।
যদি ওমর রা. এর যুগে যাদু বিদ্যার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়, তাহলে তাঁর পরবর্তী যুগের অবস্থা কি দাঁড়াবে? [অর্থাৎ তাঁর পরবর্তী যুগে যাদু বিদ্যার প্রচলন অবশ্যই আছে।]