কুরবানী এক ইবাদত। যা তার নির্ধারিত সময় ছাড়া অন্য সময়ে সিদ্ধ হয় না। এই কুরবানীর সময় দশই যুলহজ্জ ঈদের নামাযের পর। নামাযের পূর্বে কেউ যবেহ করলে তার কুরবানী হয় না এবং নামাযের পর ওর পরিবর্তে কুরবানী করা জরুরী হয়।
জুনদুব বিন সুফ্য়যান আল-বাজালী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে কুরবানীতে উপস্থিত ছিলাম। তিনি যখন নামায সমাপ্ত করলেন তখন কতক ছাগ ও মেষকে দেখলেন যবেহ করা হয়ে গেছে। অতঃপর বললেন, ‘‘যে ব্যক্তি নামাযের পূর্বে যবেহ করেছে, সে যেন ওর পরিবর্তে আর এক পশু যবেহ করে। আর যে ব্যক্তি যবেহ করে নি, সে যেন আল্লাহর নাম নিয়ে যবেহ করে।’’
ঈদের খুতবায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘আজকের এই দিন আমরা যা দিয়ে শুরু করব তা হচ্ছে নামায। অতঃপর ফিরে গিয়ে কুরবানী করব। অতএব যে ব্যক্তি এরূপ করবে সে আমাদের সুন্নাহ (তরীকার) অনুবর্তী। আর যে ব্যক্তি (নামাযের পূর্বে) কুরবানী করে নিয়েছে, তাহলে তা মাংসই; যা সে নিজের পরিবারের জন্য পেশ করবে এবং তা কুরবানীর কিছু নয়।’’[1]
আর আফযল এটাই যে, নামাযের পর খুতবা শেষ হলে তবে যবেহ করা। যে ব্যক্তি ভালরূপে যবেহ করতে পারে তার উচিত, নিজের কুরবানী নিজের হাতে যবেহ করা এবং অপরকে তার দায়িত্ব না দেওয়া। যেহেতু আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বহস্তে নিজ কুরবানী যবেহ করেছেন। এবং যেহেতু কুরবানী নৈকট্যদানকারী এক ইবাদত, তাই এই নৈকট্য লাভের কাজে অপরের সাহায্য না নিয়ে নিজস্ব কর্মবলে লাভ করা উত্তম। ইমাম বুখারী (রঃ) বলেন, ‘আবু মূসা (রাঃ) তাঁর কন্যাদেরকে আদেশ করেছিলেন যে, তারা যেন নিজের কুরবানী নিজের হাতে যবেহ করে।’[2]
পক্ষান্তরে যবেহ করার জন্য অপরকে নায়েব করাও বৈধ। যেহেতু এক সময়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের হাতে তেষট্টিটি কুরবানী যবেহ করেছিলেন এবং বাকী উঁট যবেহ করতে আলী (রাঃ)-কে প্রতিনিধি করছিলেন।[3]
[2] (ফাতহুল বারী ১০/১৯)
[3] (মুসলিম)