(ক) স্পষ্ট কানা (এক চক্ষের অন্ধ) যার একটি চক্ষু ধসে গেছে অথবা বেরিয়ে আছে। দৃষ্টিহীন হলে তো অধিক ত্রুটি হবে। তবে যার চক্ষু সাদা হয়ে গেছে, কিন্তু নষ্ট হয়নি তার কুরবানী সিদ্ধ হবে। কারণ, তা স্পষ্ট কানা নয়।
(খ) স্পষ্ট রোগের রোগা; যার উপর রোগের চিহ্ন প্রকাশিত। যে চরতে অথবা খেতে পারে না; যার দরুন দুর্বলতা ও মাংসবিকৃতি হয়ে থাকে। তদনুরূপ চর্মরোগও একটি ত্রুটি; যার কারণে চর্বি ও মাংস খারাপ হয়ে থাকে। তেমনি স্পষ্ট ক্ষত একটি ত্রুটি; যদি তার ফলে পশুর উপর কোন প্রভাব পড়ে থাকে।
গর্ভধারণ কোন ত্রুটি নয়। তবে গর্ভপাত বা প্রসবের নিকটবর্তী পশু একপ্রকার রোগগ্রস্ত এবং তা একটি ক্রটি। যেহেতু গাভীন পশুর মাংস অনেকের নিকট অরুচিকর, সেহেতু জেনেশুনে তা ক্রয় করা উচিত নয়। অবশ্য কুরবানীর জন্য নির্দিষ্ট বা ক্রয় করার পর গর্ভের কথা জানা গেলে তা কুরবানীরূপে যথেষ্ট হবে। তার পেটের বাচ্চা খাওয়া যাবে। জীবিত থাকলে তাকে যবেহ করতে হবে। মৃত হলে যবেহ না করেই খাওয়া যাবে। কেননা, মায়ের যবেহতে সেও হালাল হয়ে যায়।[1] কারো রুচি না হলে সে কথা ভিন্ন।
(গ) দুরারোগ্য ভগ্নপদ। (ঘ) দুর্বলতা ও বার্ধক্যের কারণে যার চর্বি ও মজ্জা নষ্ট অথবা শুষ্ক হয়ে গেছে।
উল্লেখিত হাদীস শরীফটিতে উপরোক্ত ত্রুটিযুক্ত পশুর কুরবানী সিদ্ধ নয় বলে বিবৃত হয়েছে এবং বাকী অন্যান্য ত্রুটির কথা বর্ণনা হয়নি। কিন্তু অধিকাংশ উলামাগণের মতে, যদি ঐ ত্রুটিসমূহের অনুরূপ বা ততোধিক মন্দ ত্রুটি কোন পশুতে পাওয়া যায় তাহলে তাতেও কুরবানী সিদ্ধ হবে না; যেমন, দুই চক্ষের অন্ধ বা পা কাটা প্রভৃতি।[2]
খাত্তাবী (রঃ) বলেন, হাদীসে এ কথার দলীল রয়েছে যে, কুরবানীর পশুতে সামান্য ত্রুটি মার্জনীয়। যেহেতু হাদীসের বক্তব্য, ‘‘স্পষ্ট কানা, স্পষ্ট রোগা, স্পষ্ট খঞ্জ’’ অতএব ঐ ত্রুটির সামান্য অংশ অস্পষ্ট হবে এবং তা মার্জনীয় ও অধর্তব্য হবে।[3]
পক্ষান্তরে আরো কতকগুলি ত্রুটি রয়েছে যাতে কুরবানী সিদ্ধ হয়ে যায়; কিন্তু তা মকরূহ বলে বিবেচিত হয়। তাই এ জাতীয় ত্রুটি থেকেও কুরবানীর পশুকে মুক্ত করা উত্তম।
[2] (শারহুন নওবী ১৩/২৮)
[3] (মাআলিমুস সুনান ৪/১০৬)