ফজরের আযানে ‘আস-সালাতু খাইরুম মিনান নাউম’ শুনলে উত্তরে বলা হয়: ‘‘সাদাকতা ও বারিরতা (বারারতা)’। এ কথাটি ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।
বুখারী ও মুসলিম বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: ‘‘মুয়াযযিনকে যখন আযান দিতে শুনবে তখন মুয়াযযিন যা যা বলবে তোমরা তাই বলবে।’’[1] অন্য হাদীসে আবু হুরাইরা (রা) বলেছেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর কাছে ছিলাম। তখন বিলাল দাঁড়িয়ে আযান দিলেন। বিলাল আযান শেষ করলে রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন : ‘‘এ ব্যক্তি (মুয়াযযিন) যা বলল, তা যদি কেউ দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে বলে তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’’[2]
উপরের হাদীসদ্বয় থেকে বুঝা যায় যে, মুয়াযযিন যা বলবেন, আযান শ্রবণকারী তাই বলবেন। কোনো ব্যতিক্রম বলতে বলা হয় নি। তবে মুসলিম সংকলিত অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এক্ষেত্রে একটি ব্যতিক্রম শিক্ষা দিয়েছেন, তা হলো, মুয়াযযিন ‘হাইয়া আলাস সালাহ’ ও ‘হাইয়া আলাল ফালাহ’ বললে, শ্রোতা ‘লা হাওলা ওয়া লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলবেন। এ হাদীসে তিনি বলেছেন : ‘‘এভাবে যে ব্যক্তি মুয়াযযিনের সাথে সাথে আযানের বাক্যগুলো অন্তর থেকে বলবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’’[3]
তাহলে, উপরের দুটি বাক্য ছাড়া বাকি সকল বাক্য মুয়ায্যিন যেভাবে বলবেন, ‘জওয়াব দানকারীও’ ঠিক সেভাবেই বলবেন। ‘আস-সালাতু খাইরুম মিনান নাউম’ বাক্যটিও এর ব্যতিক্রম নয়। এর জওয়াবেও এ বাক্যটিই বলতে হবে। এ বাক্যটির জন্য ব্যতিক্রম কিছু বলতে হবে তা কোনো হাদীসে বলা হয় নি। এজন্য মোল্লা আলী কারী ‘‘সাদাকতা ওয়া বারিরতা’’ বাক্যটিকে জাল হাদীসের তালিকাভুক্ত করে বলেছেন: ‘‘শাফিয়ী মাযহাবের লোকেরা এ বাক্যটি বলা মুস্তাহাব বলেছেন, তবে হাদীসে এর কোন অস্তিত্ব নেই।’’[4]
[2] হাদীসটি হাসান। সহীহ ইবনু হিববান ৪/৫৫৩, মুসতাদরাক হাকিম ১/৩২১, মুসনাদ আহমাদ ২/৩৫২, নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা ১/৫১০, ৬/১৪৬, সহীহুত তারগীব ১/১৭৭।
[3] সহীহ মুসলিম ১/২৮৯, নং ৩৮৫।
[4] দেখুন: মোল্লা আলী কারী, আল আসরারুল মারফুয়া, ১৪৬ পৃ