হাদীসের নামে জালিয়াতি ৪. জালিয়াতি প্রতিরোধে মুসলিম উম্মাহ ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি

সাক্ষ্য বা বক্তব্যের নির্ভুলতা যাচাইয়ের অন্যতম পদ্ধতি বর্ণনাকারীকে বিভিন্ন সময়ে একই বিষয়ে প্রশ্ন করা। এ পদ্ধতি সাহাবীগণ ব্যবহার করতেন হাদীস বর্ণনাকারীর বর্ণনার নির্ভুলতা যাচাইয়ের জন্য। পরবর্তী মুহাদ্দিসগণও এ পদ্ধতি ব্যবহার করতেন। এখানে ২ টি উদাহরণ উল্লেখ করছি।

১. উমাইয়া শাসক মারওয়ান ইবনুল হাকাম (৬৫ হি) এর সেক্রেটারী আবুয যুআইযাহ বলেন, একদিন মারওয়ান আমাকে বলেন: আবু হুরাইরাহ (রা) কে ডেকে আনাও। আবু হুরাইরা উপস্থিত হলে তিনি আবু হুরাইরাকে বিভিন্ন বিষয়ে হাদীস জিজ্ঞাসা করতে লাগলেন। আর আমাকে পর্দার আড়ালে বসে সেগুলো লিখতে নির্দেশ দিলেন। এরপর এক বছর অতিবাহিত হয়ে গেলে মারওয়ান পুনরায় আবু হুরাইরাকে ডেকে পাঠান এবং আমাকে পর্দার আড়ালে আগের বছরে লেখা পান্ডুলিপি নিয়ে বসতে বলেন। তিনি আবু হুরাইরাকে সে বিষয়গুলো সম্পর্কে আবারো প্রশ্ন করেন এবং আবু হুরাইরা গত বছরে বলা হাদীসগুলো পুনরায় বলেন। আমি মিলিয়ে দেখলাম যে, তিনি একটুও কমবেশি করেন নি বা কোনো শব্দ আগে পিছেও করেন নি।[1]

২.উমারাহ ইবনুল কা’কা বলেন, আমাকে ইবরাহীম নাখয়ী (৯৬ হি) বলেন: তুমি আমাকে আবু যুর‘আ ইবনু আমর ইবনু জারীব থেকে হাদীস বর্ণনা কর। আবু যুর‘আর নির্ভরযোগ্যতার প্রমাণ হলো, আমি তাকে একটি হাদীস সম্পর্কে প্রশ্ন করি। এরপর দুই বছর পরে আমি তাকে হাদীসটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করি। দ্বিতীয়বার তিনি হুবহু প্রথম বারের মতই বর্ণনা করেন, একটি অক্ষরও বেশিকম করেন নি।’’[2]

[1] হাকিম, আল-মুসতাদরাক ৩/৫৮৩।

[2] ইবনু হাজার আসকালানী, তাহযীবুত তাহযীব ১২/১০৯।