সহীহ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, এক লোক মোহরানা নির্ধারণ না করেই বিবাহ করল। তার সাথে বাসর করার পূর্বেই লোকটি মারা গেল। এই ক্ষেত্রে নাবী (ﷺ) ফয়সালা করলেন যে, এই মহিলার জন্য তার (আত্মীয়দের মধ্য হতে) তার সমমানের মহিলার মোহরানাই নির্ধারণ করা হবে। কমও করা হবেনা, বেশীও করা হবেনা। তার জন্য মিরাছও নির্ধারিত হবে। সে চার মাস দশ দিন ইদ্দতও পালন করবে।

তিরমিযী শরীফে বর্ণিত হয়েছে, নাবী (ﷺ) এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করলেন- তুমি কি চাও যে, উমুক মহিলার সাথে তোমার বিবাহ সম্পাদন করে দেই। লোকটি বলল- হ্যাঁ (তাই করা হোক)। অতঃপর মহিলাটি জিজ্ঞেস করলেন- তুমি কি চাও যে, উমুক পুরুষের সাথে তোমার বিবাহ সম্পাদন করে দেই? মহিলাটিও বলল- হ্যাঁ। এরপর তিনি তাদের উভয়কে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করে দিলেন। তারা উভয়ে বাসর করল। কিন্তু কোন মোহরানা নির্ধারণ করা হয়নি। পুরুষটি মহিলাকে কোন কিছুই দেয়নি। সেই লোকটির যখন মৃত্যু হল, তখন নাবী (ﷺ) এর খায়বারের সম্পদ হতে সেই মহিলাকে একটি অংশ প্রদান করলেন।[1] উপরে বর্ণিত আয়াত ও হাদীস থেকে নিম্নলিখিত আহকাম ও মাসায়েল জানা যাচ্ছেঃ


মোহরানা নির্ধারণ না করেও বিবাহ সম্পাদন করা জায়েয আছে।
মোহরানা নির্ধারণ না করে বিবাহ করলে স্ত্রীর সাথে নির্জনে মিলিত হওয়া এবং সহবাস করা জায়েয।
মোহরানা নির্ধারণ না করে বিবাহ সম্পাদন করা হলে এবং এই অবস্থায় স্বামীর মৃত্যু হলে মহরে মিছ্ল (মহিলার বোন বা ফুফু কিংবা তার বংশের অন্যান্য মহিলার মহর) নির্ধারিত হবে। স্ত্রীর সাথে সহবাস করা হোক বা না হোক।
স্ত্রী বেঁচে থাকা অবস্থায় স্বামীর মৃত্যু হলে স্ত্রীর উপর ইদ্দত পালন করা জরুরী। চাই স্ত্রীর সাথে বাসর হোক বা না হোক। এটিই আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ এবং ইরাকের আলেমদের মত।
একই ব্যক্তি বর ও কনের অভিভাবক হয়ে বিয়ের কাজ সম্পাদন করতে পারে। এখানে এতটুকু বলাই যথেষ্ট যে, আমি উমুক পুরুষকে উমুক মহিলার সাথে বিবাহ দিলাম।
যে অমুসলিম চারের অধিক স্ত্রীসহ ইসলাম গ্রহণ করবে, তাকে চারটি রেখে বাকীগুলোকে তালাক দেয়ার হুকুম করা হবে। এক লোক ইসলাম গ্রহণ করল। এমতাবস্থায় তার বিবাহাধীন দুই বোন একসাথে ছিল। নাবী (ﷺ) তাকে বললেন- তুমি দুইজনের যে কোন একজনকে রেখে অন্যজনকে বিচ্ছিন্ন করে দাও। এতে বুঝা যাচ্ছে, কুফুরীর হালতে কাফের-মুশরিকদের বিবাহ-সাদীও বিশুদ্ধ। মুসলমান হওয়ার পর তার স্বাধীনতা রয়েছে। সে তার পুরাতন ও নতুন স্ত্রীদের মধ্য হতে যে কোন চারজনকে রেখে বাকীদেরকে বিদায় করে দিতে পারবে। এটিই অধিকাংশ আলেমদের মত।

ইমাম তিরমিযী (রহঃ) বর্ণনা করেন, যে ক্রীতদাস স্বীয় মনিবের অনুমতি ছাড়াই বিবাহ করল, সে ব্যভিচারী হিসাবে গণ্য হবে।

হে আল্লাহই অধিক জ্ঞানী ও প্রজ্ঞাময়। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহু রাববুল আলামীনের জন্য। মুহাম্মাদ (ﷺ) তাঁর পরিবার ও সাহাবীদের উপর সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক। আমীন

[1]. আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি মোহরানা নির্ধারণ না করেই বিবাহ করল এবং মৃত্যুর পূর্বে তা পরিশোধ করল না। এই হাদীসের সনদটি হাসান।