ঐতিহাসিক ইবনে ইসহাক (রহঃ) বলেন- রসূল (ﷺ) তাবুক হতে ফেরত এসে রামাযানের বাকী দিনগুলো, শাওয়াল মাস এবং যুল-কাদ মাস মদ্বীনাতে কাটালেন। অতঃপর নবম হিজরী সালে আবু বকর (রাঃ) এর নের্তৃত্বে মুসলিমদেরকে মক্কায় পাঠালেন। যাতে করে তিনি মুসলিমদের হজ্জের কার্যাবলী পরিচালিত করতে পারেন। আবু বকর (রাঃ) তিনশত লোক নিয়ে বের হয়ে পড়লেন। রওয়ানা দেয়ার পর রসূল (ﷺ)-এর উপর সূরা তাওবা নাযিল হয়। এতে মদ্বীনার মুসলিম এবং মক্কার কুরাইশদের মধ্যকার চুক্তির অবসানের ঘোষণা দেয়া হয়। তাই আলী (রাঃ) নাবী (ﷺ) এর উটনীর উপর আরোহন করে বের হয়ে রাস্তায় আবু বকর (রাঃ) এর কাফেলার সাথে মিলিত হলেন। আবু বকর (রাঃ) তাঁকে দেখে বললেন- আপনাকে কি আমীর বানিয়ে পাঠানো হয়েছে? না মামুর বানিয়ে? তিনি বললেন- বরং মামুর বানিয়ে পাঠানো হয়েছে। যাতে করে আমি মক্কাবাসীদের নিকট সুরা তাওবা পাঠ করে শুনাই এবং তাদের সাথে সকল চুক্তির মেয়াদের পরিসমাপ্তির কথা জানিয়ে দেই।
আবু বকর (রাঃ) লোকদেরকে হাজ্জ করাচ্ছিলেন। যখন যুল-হাজ্জ মাসের দশ তারিখ আসল, তখন আলী (রাঃ) দাঁড়ালেন। আবু বকর (রাঃ) বলেন- তিনি আমার নিকট দাঁড়িয়ে ঐ সমস্ত বিষয় ঘোষণা করলেন, যা ঘোষণা করার জন্য রসূল (ﷺ) তাকে আদেশ দিয়েছিলেন। আলী (রাঃ) বলেন- আমাকে রসূল (ﷺ) চারটি বিষয়ে ঘোষণা করার জন্য প্রেরণ করেছিলেন।
এ বারের পর মুসলমান এবং মুশরিক মসজিদে হারামে একত্রিত হতে পারবেনা। অর্থাৎ কোন মুশরিক কাবায় প্রবেশ করতে পারবেনা।
উলঙ্গ হয়ে কেউ কাবার তাওয়াফ করতে পারবেনা।
যাদের সাথে রসূল (ﷺ)-এর চুক্তি রয়েছে, তাদের সাথে নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত চুক্তি বহাল থাকবে। আর যাদের সাথে কোন চুক্তি নাই, তাদেরকে মাত্র চার মাস অবকাশ দেয়া হল।
মুমিন ব্যক্তি ব্যতীত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। ইবনে ইসহাক (রহঃ) বলেন- নাবী (ﷺ) মক্কা বিজয় এবং তাবুকের অভিযান থেকে ফারেগ হলেন, তখন ছাকীফ গোত্র ইসলামে প্রবেশ করল। তার পর থেকেই সকল দিক থেকে আরব গোত্রের প্রতিনিধিরা আসতে লাগল। আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম (রহঃ) এখানে বনী তামীম গোত্র, বনী তাঈ, বনী আমের, আব্দুল কায়েস গোত্র, বনী হানীফা, বনী কেন্দাহ, কবীলায়ে আশআরী, আয্দ গোত্র, নাজরানবাসী, হামদান গোত্র এবং নাজরানের খৃষ্টানদের প্রতিনিধিদলসহ অন্যান্যদের আগমণের এবং রসূল (ﷺ) কর্তৃক বিভিন্ন রাজা-বাদশার নিকট ইসলামের দাওয়াত দিয়ে চিঠি লেখার বিষয় উল্লেখ করেছেন।