নাবী (ﷺ) তাবুক থেকে মদ্বীনায় ফেরত আসছিলেন। পথিমধ্যে কতিপয় মুনাফেক তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের এক নীলনকশা তৈরী করল। পথ চলার সময় তাঁকে কোন এক গিরিপথ হতে ধাক্কা দিয়ে নীচে ফেলে দিয়ে হত্যা করার ফন্দি করল। তিনি যখন গিরিপথের নিকটবর্তী হলেন, তখন মুনাফেকরা তাঁর সাথে সাথে চলতে চাইল। কিন্তু আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর নাবীকে এই ষড়যন্ত্রের কথা জানিয়ে দিলেন। তখন তিনি লোকদের উদ্দেশ্যে বললেন- তোমাদের মধ্যে যে উপত্যকা দিয়ে তথা নিম্নভূমিতে চলতে চায়, তার কোন সমস্যা নেই। কারণ এ রাস্তাটিই তোমাদের জন্য অধিক প্রশস্ত। এ কথা বলে তিনি নিজে পাহাড়ী পথে চলতে লাগলেন। আর লোকেরা উপত্যকা দিয়ে চলতে লাগল। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা মুখোশ পরিধান করে রসূল (ﷺ) এর সাথে চলার ইচ্ছা পোষণ করল। নাবী (ﷺ) হুযায়ফা বিন ইয়ামান এবং আম্মার বিন ইয়াসার (রাঃ) কে তাঁর সাথে চলার আদেশ দিলেন। আম্মারকে তিনি উটের লাগাম ধরার আদেশ দিলেন এবং হুযায়ফাকে পিছন থেকে উট চালিয়ে নেওয়ার হুকুম করলেন। তারা চলছিলেন। এমন সময় হঠাৎ পিছন দিক থেকে একদল লোকের আক্রমণের আওয়াজ শুনা গেল। ইতিমধ্যেই তারা নাবী (ﷺ) কে ঘিরে ফেলল। নাবী (ﷺ) তখন রসূান্বিত হয়ে হুযায়ফাকে আদেশ করলেন যে, তাদেরকে প্রতিহত কর। হুযায়ফা (রাঃ) রসূল (ﷺ) কে রসূান্বিত দেখে ডান্ডা (লাঠি) হাতে নিয়ে পিছনে ফিরে মুনাফেকদের বাহনগুলোর মুখে আঘাত করলেন। তিনি দেখলেন তারা সকলেই মুসাফিরদের ন্যায় মুখোশ পরিহিত। হুযায়ফাকে দেখে তারা ভীত হয়ে গেল এবং তারা বুঝতে পারল যে, তাদের ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে গেছে। তারা দ্রুতগতিতে সরে পড়ল এবং জনগণের সাথে মিশে গেল। রসূল (ﷺ) তখন হুযায়ফাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি তাদের কাউকে চিনতে পেরেছ? হুযায়ফা (রাঃ) বললেন- আমি উমুক এবং উমুকের সওয়ারী চিনতে পেরেছি। রাত ছিল অন্ধকার। তাই তাদেরকে চেনা সম্ভব হয়নি। রসূল (ﷺ) আবার জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি তাদের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরেছ। তিনি বললেন- না, বুঝতে পারিনি। রসূল (ﷺ) তখন বললেন- তাদের ষড়যন্ত্র ছিল, তারা আমার সাথে চলবে। যখন আমি গিরিপথে উঠব, তখন তারা গিরি থেকে আমাকে নীচে ফেলে দিবে। হুযায়ফা বললেন- তাহলে আপনি তাদের গর্দান উড়িয়ে দিচ্ছেন না কেন? তিনি বললেন- আমি চাইনা, লোকেরা বলাবলি করুক যে, মুহাম্মাদ তাঁর সাথীদেরকে হত্যা করা শুরু করছে।

অতঃপর তিনি হুযায়ফাকে ঐ দুইজন মুনাফেক এবং অন্যান্য সকল মুনাফেকের নাম বলে দিলেন এবং ঘটনা গোপন রাখতে বললেন।