অতঃপর নাবী (ﷺ) আনসার ও মুহাজিরদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন রচনা করলেন। তাদের সংখ্যা ছিল ৯০ জন। তাদের অর্ধেক ছিলেন মুহাজির ও বাকী অর্ধেক ছিলেন আনসার। পারস্পরিক সহমর্মিতা ও সহযোগিতার ভিত্তিতে এই সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হলেও মৃত্যুর পরে তারা একে অন্যের সম্পদের ওয়ারিছ হতেন। বদরের যুদ্ধের ঘটনা পর্যন্ত এই নিয়ম বলবৎ ছিল। পরবর্তীতে যখন কুরআনের এই আয়াত নাযিল হল-
وَأُوْلُوْا الأَرْحَامِ بَعْضُهُمْ أَوْلَى بِبَعْضٍ فِى كِتَابِ اللهِ
‘‘বস্ত্ততঃ আত্মীয়দের কতক কতকের চেয়ে আল্লাহর বিধান মতে অধিক হকদার’’। (সূরা আনফাল-৮:৭৫) তখন থেকে মৃত্যুর পর ওয়ারিছ হওয়ার বিষয়টি শুধু আত্মীয়দের মাঝেই সীমিত হয়ে গেল। কেউ কেউ বলেন- দ্বিতীয়বার তিনি শুধু মুহাজিরদের কতকের মধ্যে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্বের বন্ধন রচনা করেন। এইবার তিনি আলীকে নিজের ভাই বানিয়ে নিলেন। কিন্তু প্রথম বার ভ্রাতৃত্বের বন্ধন রচনার ঘটনাটিই প্রমাণিত। দ্বিতীয়বার তিনি যদি কাউকে ভাই বানাতেন তাহলে তাঁর সর্বাধিক প্রিয় বন্ধু, হিজরতের ও গারে ছাওরের সাথী এবং সর্বোত্তম সাহাবী আবু বকরই তাঁর ভাই হওয়ার অধিক হকদার হতেন। তাঁর ব্যাপারে রসূল (ﷺ) বলেছেন-
لَوْ كُنْتُ مُتَّخِذاً مِنْ أَهْلِ الأَرْضِ خَلِيلاً لاتخَّذْتُ أَبَا بَكْر خَلِيلاً وَلَكِنْ أَخِى وَصَاحِبِى
‘‘আমি যদি যমীনের কাউকে বন্ধু বানাতাম তাহলে আবু বকরকেই বানাতাম। কিন্তু সে আমার ভাই ও সাথী’’। এটি ইসলামের সাধারণ ভ্রাতৃত্ব হলেও আবু বকর (রাঃ) ছিলেন এর সর্বোচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত। যেমন ছিলেন তিনি সাহাবীদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি। রসূল (ﷺ) বলেন- আমার আগ্রহ হয় যে আমাদের ভাইদেরকে দেখি। সাহাবীগণ বললেন- হে আল্লাহর রসূল! আমরা কি আপনার ভাই নই? তিনি বললেন- তোমরা আমার সাহাবী। আমার ভাই হচ্ছে এমন ব্যক্তিগণ, যারা আমার পরে আসবে এবং আমার প্রতি ঈমান আনয়ন করবে। তারা এখনও আমাকে দেখেনি।