তিনি দু’আ ও ইস্তেগফার করার জন্য তাঁর সাহাবীদের কবর যিয়ারত করতে যেতেন। এটিই হচ্ছে সেই যিয়ারত, যা রসূল (ﷺ) সুন্নাত হিসাবে সাব্যস্ত করেছেন। কবর যিয়ারতের সময় তিনি তাদেরকে এই দু’আ পাঠ করার আদেশ দিয়েছেন-

السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الدِّيَارِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُسْلِمِينَ وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللهُ لَلاَحِقُونَ أَسْأَلُ اللهَ لَنَا وَلَكُمُ الْعَافِيَةَ

‘‘সকল মুমিন ও মুসলিম কবরবাসীর উপর সালাম (শান্তি)। আল্লাহ্ চাহে তো আমরাও আপনাদের সাথে মিলিত হবো। আমরা আমাদের এবং আপনাদের ক্ষমার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি।’’[1] জানাযা সলাতে তিনি যে সমস্ত দু’আ পাঠ করতেন কবর যিয়ারতের সময়ও অনুরূপ দু’আ পাঠ করতেন। তবে মুশরিকদের (বর্তমানের অনেক নামধারী মুসলিমদের) অবস্থা হচ্ছে তারা নিজেদের প্রয়োজন পূরণের জন্য মৃতদেরকে আহবান করছে, আল্লাহর সাথে মৃতদেরকে শরীক করছে,

মৃতদের কাছে মদদ চাচ্ছে এবং তাদের দিকে মনোনিবেশ করছে। আর এটি রসূল (ﷺ) এর সুন্নাতের সম্পূর্ণ বিপরীত। কারণ ইসলামের ভিত্তি হচ্ছে এককভাবে আল্লাহর ইবাদতের উপর।

মৃতের আত্মীয় স্বজনদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করা তাঁর সুন্নাতে তায়্যেবার অন্তর্ভুক্ত ছিল। দিন বা তারিখ নির্দিষ্ট করে মৃত ব্যক্তির জন্য একত্রিত হওয়া এবং কুরআন পাঠ করা তাঁর সুন্নাত ছিল না। মূলতঃ কুরআন পড়ার জন্য কবরের পাশে বা অন্য কোন স্থানে একত্রিত হওয়া ইসলামে বৈধ নয়।

তাঁর পবিত্র সুন্নাতের মধ্যে এটিও ছিল যে, মৃতের পরিবারবর্গ লোকদের জন্য খানা বা অন্য কোন বস্ত্তর ব্যবস্থা করবে না। বরং তিনি লোকদেরকে আদেশ দিয়েছেন যে, তারা যেন মৃতের পরিবারের জন্য খাদ্য প্রস্ত্তত করে। জাফর (রাঃ) এর মৃত্যুর সংবাদ আসলে তিনি বলছেনঃ

اصْنَعُوا لِآلِ جَعْفَرٍ طَعَامًا فَإِنَّهُ قَدْ أَتَاهُمْ أَمْرٌ شَغَلَهُمْ

‘‘তোমরা জাফরের পরিবারের জন্য খাদ্য প্রস্ত্তত কর। কেননা তাদের কাছে এমন খবর এসেছে, যা তাদেরকে ব্যস্ত করে তুলেছে’’।[2] মৃত ব্যক্তির উপর উচ্চ স্বরে ক্রন্দন করা, ব্যাপকভাবে মৃত্যু সংবাদ প্রচার ও ঘোষণা করা তার সু্ন্নাত ছিল না। বরং তিনি এ সমস্ত কাজ করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন- এগুলো হচ্ছে জাহেলী যামানার কাজের অন্তর্ভুক্ত।

[1]. মুসলিম, হাএ. হা/২১৪৭, ইফা. হা/২১২৬, ইসে. হা/২১২৯, সহীহ ইবনে মাযাহ, মাশাা. হা/১২৫৭, মিশকাত, মাশাা. হা/১৭৬৪

[2]. আবু দাউদ, আলএ. হা/৩১৩২, ইমাম আলবানী রহঃ) হাদীসটিকে হাসান বলেছেন।