জমিতে উৎপাদিত ফল ও ফসলের যাকাত ফরয হওয়ার দলীল

আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে আশরাফুল মাখলূকাত তথা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসাবে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। আর পৃথিবীকে করেছেন মানুষের জন্য বসবাস উপযোগী আবাস। যমীনকে করেছেন মানুষের জীবিকা নির্বাহের প্রধান উৎস। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَلَقَدْ مَكَّنَّاكُمْ فِيْ الْأَرْضِ وَجَعَلْنَا لَكُمْ فِيْهَا مَعَايِشَ قَلِيْلاً مَّا تَشْكُرُوْنَ-

‘আমরা তোমাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করেছি এবং সেখানে তোমাদের জীবিকার ব্যবস্থাও করেছি। তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর’ (আ‘রাফ ৭/১০)। তিনি অন্যত্র বলেন,

أَفَرَأَيْتُمْ مَا تَحْرُثُوْنَ- أَأَنْتُمْ تَزْرَعُوْنَهُ أَمْ نَحْنُ الزَّارِعُوْنَ- لَوْ نَشَاءُ لَجَعَلْنَاهُ حُطَامًا فَظَلْتُمْ تَفَكَّهُوْنَ- إِنَّا لَمُغْرَمُوْنَ- بَلْ نَحْنُ مَحْرُوْمُوْنَ-

‘তোমরা যে বীজ বপন কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি? তোমরা কি তাকে অংকুরিত কর, না আমরা অংকুরিত করি? আমরা ইচ্ছা করলে তাকে খড়কুটায় পরিণত করতে পারি, তখন তোমরা হতবুদ্ধি হয়ে পড়বে। বলবে, আমরা তো ঋণের চাপে পড়ে গেলাম; বরং আমরা হূত সর্বসব হয়ে পড়লাম’ (ওয়াকি‘আ ৫৬/৬৩-৬৭)। তিনি অন্যত্র বলেন,

فَلْيَنْظُرِ الْإِنْسَانُ إِلَى طَعَامِهِ- أَنَّا صَبَبْنَا الْمَاءَ صَبًّا- ثُمَّ شَقَقْنَا الْأَرْضَ شَقًّا- فَأَنْبَتْنَا فِيْهَا حَبًّا- وَعِنَبًا وَقَضْبًا- وَزَيْتُوْنًا وَنَخْلاً- وَحَدَائِقَ غُلْبًا- وَفَاكِهَةً وَأَبًّا- مَتَاعًا لَكُمْ وَلِأَنْعَامِكُمْ-

‘মানুষ তার খাদ্যের প্রতি লক্ষ্য করুক, আমরাই প্রচুর পানি বর্ষণ করেছি, এরপর আমরা ভূমিকে বিদীর্ণ করেছি, অতঃপর তাতে উৎপন্ন করেছি শস্য, আঙ্গুর, শাক-সব্জি, যয়তুন, খেজুর, ঘন উদ্যান, ফল এবং ঘাস তোমাদের ও তোমাদের চতুষ্পদ জন্তুদের উপকারার্থে’ (আবাসা ৮০/২৪-৩২)

আল্লাহ তা‘আলা যমীনকে যেমন মানুষের জীবিকা নির্বাহের প্রধান উৎস বানিয়েছেন, তেমনি তা হতে উৎপাদিত ফসলের যাকাত ফরয করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا أَنْفِقُوْا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا كَسَبْتُمْ وَمِمَّا أَخْرَجْنَا لَكُمْ مِنَ الْأَرْضِ وَلاَ تَيَمَّمُوْا الْخَبِيْثَ مِنْهُ تُنْفِقُوْنَ وَلَسْتُمْ بِآخِذِيْهِ إِلَّا أَنْ تُغْمِضُوْا فِيْهِ وَاعْلَمُوْا أَنَّ اللهَ غَنِيٌّ حَمِيْدٌ-

‘হে মুমিনগণ! তোমরা যা উপার্জন কর এবং আমরা যা ভূমি হতে তোমাদের জন্য উৎপাদন করে দেই তন্মধ্যে যা উৎকৃষ্ট তা ব্যয় কর এবং তার নিকৃষ্ট বস্ত্ত ব্যয় করার সংকল্প কর না; অথচ তোমরা তা গ্রহণ করবে না, যদি না তোমরা চোখ বন্ধ করে থাক। আর জেনে রেখ যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ অভাবমুক্ত, প্রশংসিত’ (বাক্বারাহ ২/২৬৭)। তিনি অন্যত্র বলেন,

وَهُوَ الَّذِيْ أَنْشَأَ جَنَّاتٍ مَعْرُوْشَاتٍ وَغَيْرَ مَعْرُوْشَاتٍ وَالنَّخْلَ وَالزَّرْعَ مُخْتَلِفًا أُكُلُهُ وَالزَّيْتُوْنَ وَالرُّمَّانَ مُتَشَابِهًا وَغَيْرَ مُتَشَابِهٍ كُلُوْا مِنْ ثَمَرِهِ إِذَا أَثْمَرَ وَآتُوْا حَقَّهُ يَوْمَ حَصَادِهِ وَلاَ تُسْرِفُوْا إِنَّهُ لاَ يُحِبُّ الْمُسْرِفِيْنَ-

‘তিনিই লতা ও বৃক্ষ-উদ্যানসমূহ সৃষ্টি করেছেন এবং খেজুর গাছ, বিভিন্ন স্বাদ বিশিষ্ট খাদ্যশস্য, যায়তুন ও ডালিমও সৃষ্টি করেছেন; এগুলি একে অপরের সদৃশ এবং বিসদৃশও। যখন তা ফলবান হয় তখন তার ফল আহার করবে আর ফসল কাটার দিনে তার হক (যাকাত) প্রদান করবে এবং অপচয় করবে না; নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদেরকে ভালবাসেন না’ (আন‘আম ৬/১৪১)