দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম [যাকাত অধ্যায়] যাকাত পরিচিতি শরীফুল ইসলাম বিন যয়নুল আবেদীন ১ টি
(১৪) যাকাত দারিদ্র্য বিমোচনের প্রধান মাধ্যম

(১৪) যাকাত দারিদ্র্য বিমোচনের প্রধান মাধ্যম : প্রাচীনকাল হতে মানুষ দু’টি শ্রেণীতে বিভক্ত। ধনী ও দরিদ্র। ধনিক শ্রেণীর সম্পদের আধিক্য সীমা ছাড়িয়ে গেছে, আর দরিদ্র শ্রেণী ক্ষীণ হতে হতে মাটির সাথে মিশে একাকার হয়ে গেছে। তেলহীন প্রদীপের ন্যায় নিভু নিভু জীবন প্রদীপ জ্বালিয়ে রেখেছে মাত্র। এর কারণ হল, প্রাচীন ধর্মগ্রন্থসমূহ দরিদ্রের প্রতি দয়া-অনুগ্রহ প্রদর্শনে উৎসাহ দিলেও তা বাধ্যতামূলক করেনি এবং দানের পরিমাণও নির্ধারণ করেনি। পক্ষান্তরে ইসলাম ‘যাকাত’ নামে এমন এক বিধান দিয়েছে, যার মাধ্যমে ধনীদের সম্পদের নির্দিষ্ট অংশ দরিদ্রের মাঝে বণ্টন বাধ্যতামূলক করে দারিদ্র্য বিমোচনে চূড়ান্ত ভূমিকা পালন করেছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,

أَنَّ اللهَ افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ صَدَقَةً فِيْ أَمْوَالِهِمْ، تُؤْخَذُ مِنْ أَغْنِيَائِهِمْ وَتُرَدُّ عَلَى فُقَرَائِهِمْ-

‘আল্লাহ তা‘আলা তাদের উপর তাদের সম্পদের মধ্য থেকে ছাদাক্বাহ্ (যাকাত) ফরয করেছেন। যেটা ধনীদের নিকট থেকে গৃহীত হবে আর দরিদ্রের মাঝে বণ্টন হবে’।[1]

অতএব ধনীদের সম্পদের নির্দিষ্ট অংশ গরীবদের মাঝে বণ্টনের মাধ্যমেই কেবল দারিদ্র্য বিমোচন সম্ভব। সূদ ভিত্তিক অর্থনীতি কখনোই দারিদ্র্য দূর করতে পারে না। বর্তমান সঊদী আরবের দিকে লক্ষ্য করলেই তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। যেখানে যাকাত ব্যবস্থা চালু থাকার কারণে যাকাত গ্রহণ করার মত দরিদ্র মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় না। ফলে সেই যাকাতের অর্থ অন্য রাষ্ট্রে প্রেরণ করতে হয়। পক্ষান্তরে ক্ষুদ্র ঋণের দোহাই দিয়ে যে দেশে যত সূদ ভিত্তিক অর্থনীতি চলছে সে দেশে তত দরিদ্রের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে।

[1]. বুখারী হা/১৩৯৫, ‘যাকাত’ অধ্যায়, ‘যাকাত ওয়াজিব হওয়া’ অনুচ্ছেদ, বঙ্গানুবাদ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন্স) ২/৭৫ পৃঃ; মুসলিম হা/১৯।