স্বালাতে মুবাশ্‌শির ক্বিবলাহ্‌ আবদুল হামীদ ফাইযী ১ টি

কোন অচেনা-অজানা স্থানে অন্ধকার বা মেঘের কারণে চাঁদ, সূর্য, তারা দেখতে না পাওয়ার ফলে ক্বিবলার দিক কোন্‌টা নির্ণয় করতে না পারলে এবং জানার মত সে রকম কোন যন্ত্র বা উপায় না থাকলে, মনে মনে সঠিক ধারণার উপর ভিত্তি করেই নামায পড়তে হবে। অবশ্য নামাযের পর ক্বিবলার সঠিক দিক অন্য বুঝতে পারলেও নামায শুদ্ধ হয়ে যাবে। পুনরায় ঐ নামায সঠিক ক্বিবলাহ্‌-মুখে আর পড়তে হবে না।

হযরত জাবের (রাঃ) বলেন, আমরা আল্লাহর রসূল (ﷺ) এর সঙ্গে কোন এক সফর বা অভিযানে ছিলাম। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে (নামাযের সময়) আমরা ক্বিবলার দিক নির্ণয়ে মতভেদ করলাম। এতে প্রত্যেকে নিজ নিজ মতে পৃথক পৃথক নামায পড়ে নিল। (তখন নবী (ﷺ) সেখানে ছিলেন না।) সঠিক ক্বিবলার দিকে নামায হয়েছে কি না তা পরীক্ষা করার জন্য প্রত্যেকে নিজের নিজের সামনে দাগ দিয়ে রাখল। সকাল হলে সে দাগগুলো আমরা দেখলাম; দেখলাম, আমরা ক্বিবলার ভিন্ন দিকে মুখ করে নামায পড়ে ফেলেছি। অতঃপর ব্যাপারটি নবী (ﷺ) এর নিকট উল্লেখ করলে তিনি আমাদেরকে ঐ নামায পুনরায় পড়তে আদেশ করলেন না। বরং তিনি বললেন, “তোমাদের নামায শুদ্ধ হয়ে গেছে।” (দারাক্বুত্বনী, সুনান,হাকেম, মুস্তাদরাক, বায়হাকী, ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ২৯৬নং)

নামায পড়া অবস্থায় যদি কারো বা কিছুর মাধ্যমে ক্বিবলার সঠিক দিক জানা যায়, তাহলে সাথে সাথে সেদিকে ফিরে যাওয়া জরুরী। মহানবী (ﷺ) শুরুতে বাইতুল মাক্বদেসের দিকে মুখ করে নামায পড়তেন। তিনি মনে মনে চাইতেন যে, কা’বাই তাঁর ক্বিবলাহ্‌ হোক। সে সময় এই আয়াত অবতীর্ণ হল,

قَدْ نَرَىٰ تَقَلُّبَ وَجْهِكَ فِي السَّمَاءِ ۖ فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضَاهَا ۚ فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ۚ وَحَيْثُ مَا كُنْتُمْ فَوَلُّوا وُجُوهَكُمْ شَطْرَهُ ۗ وَإِنَّ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ لَيَعْلَمُونَ أَنَّهُ الْحَقُّ مِنْ رَبِّهِمْ ۗ وَمَا اللَّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا يَعْمَلُونَ

অর্থাৎ, আকাশের দিকে তোমার বারবার তাকানোকে আমি প্রায় লক্ষ্য করি। সুতরাং আমি তোমাকে এমন ক্বিবলার দিকে ফিরিয়ে দেব, যা তুমি পছন্দ কর। অতএব তুমি (এখন) মাসজিদুলহারামের দিকে মুখ ফেরাও। (কুরআন মাজীদ ২/১৪৪) এরপর থেকে তিনি কা’বার দিকে মুখ ফিরিয়ে নামায পড়তে লাগলেন। কুবার মসজিদে লোকেরা ফজরের নামায পড়ছিল। ইত্যবসরে এক আগন্তুক তাদেরকে এসে বলল, ‘আজ রাত্রে আল্লাহর রসূলের উপর কিছু আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে, যাতে তাঁকে কা’বার দিকে মুখ করে নামায পড়তে আদেশ করা হয়েছে। সুতরাং শোন! তোমরা কা’বার দিকে মুখ ফেরাও।’ তখন তাদের মুখ ছিল শাম (বর্তমানে প্যালেস্টাইন) এর দিকে। সংবাদ শোনামাত্র তারা কা’বার দিকে ঘুরে গেল। (বুখারী, মুসলিম, আহমাদ, মুসনাদ, ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ২৯০নং)