প্রিয় নবী (ﷺ) বলেন, “আমি উম্মতের জন্য কষ্টকর না জানলে এশার নামাযকে দেরী করে পড়তে এবং প্রত্যেক নামাযের সময় দাঁতন করতে আদেশ দিতাম।” (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ৩৭৬নং)
তিনি আরো বলেন, “আমি আমার উম্মতের পক্ষে কষ্টকর না জানলে (প্রত্যেক) ওযুর সাথে দাঁতন করা ফরয করতাম এবং এশার নামায অর্ধেক রাত পর্যন্ত দেরী করে পড়তাম।” (হাকেম, মুস্তাদরাক, বায়হাকী, সহীহ জামে ৫৩১৯ নং)
তাই সাহাবী যায়েদ বিন খালেদ জুহানী (রাঃ) মসজিদে নামায পড়তেহাজির হতেন, আর তাঁর দাঁতনকে কলমের মত তাঁর কানে গুঁজে রাখতেন। নামাযে দাঁড়াবার সময় তিনি দাঁতন করে পুনরায় কানে গুঁজে নিতেন। (আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, মিশকাত ৩৯০ নং)
মুসলিমের প্রকৃতিগত কর্মসমূহের একটি হল, মিসওয়াক করে মুখ সাফ করা। (মুসলিম, মিশকাত ৩৭৯নং)
বিশেষ করে জুমআর দিন গোসল ও দাঁতন করা এবং আতর ব্যবহার করা কর্তব্য। (আহমাদ, মুসনাদ, বুখারী, মুসলিম, আবূদাঊদ, সুনান, সহীহ জামে ৪১৭৮ নং)
মহানবী (ﷺ) বলেন, “জিবরীল (আহমাদ, মুসনাদ) আমাকে (এত বেশী) দাঁতন করতে আদেশ করেছেন, যাতে আমি আমার দাঁত ঝরে যাওয়ার আশঙ্কা করছি।” (সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ১৫৫৬ নং) অন্য এক বর্ণনায় তিনি বলেন, “---এতে আমার ভয় হয় যে, দাঁতন করা আমার উপর ফরয করে দেওয়া হবে।” (সহীহ জামে ১৩৭৬ নং)
বাড়িতে প্রবেশ করা মাত্র তিনি প্রথম যে কাজ করতেন, তা হল দাঁতন। (মুসলিম, মিশকাত ৩৭৭নং) তাহাজ্জুদ পড়তে উঠলেই তিনি দাঁতন করে দাঁত মাজতেন। (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ৩৭৮নং) আবার রাত্রের অন্যান্য সময়েও যখন জেগে উঠতেন, তখন মিসওয়াক করতেন। (সহীহ জামে ৪৮৫৩ নং) আর এই জন্যই রাত্রে শোবার সময় শিথানে দাঁতন রেখে নিতেন। (ঐ ৪৮৭২ নং)
তিনি বলেন, “দাঁতন করায় রয়েছে মুখের পবিত্রতা এবং প্রতিপালক আল্লাহর সন্তুষ্টি। (আহমাদ, মুসনাদ, দারেমী, সুনান, নাসাঈ, সুনান, ইবনে খুযাইমাহ্, সহীহ, ইবনে হিব্বান, সহীহ, বুখারী (বিনা সনদে), মিশকাত ৩৮১নং)
একদা হযরত আলী (রাঃ) দাঁতন আনতে আদেশ করে বললেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন, “বান্দা যখন নামায পড়তে দন্ডায়মান হয় তখন ফিরিশ্তা তার পিছনে দন্ডায়মান হয়ে তার ক্বিরাআত শুনতে থাকেন। ফিরিশ্তা তার নিকটবর্তী হন; (অথবা বর্ণনাকারী অনুরুপ কিছু বললেন।) পরিশেষে তিনি নিজ মুখ তার (বান্দার) মুখে মিলিয়ে দেন! ফলে তার মুখ হতে কুরআনের যেটুকুই অংশ বের হয় সেটুকু অংশই ফিরিশ্তার পেটে প্রবেশ করে যায়। সুতরাং কুরআনের জন্য তোমরা তোমাদের মুখকে পবিত্র কর।” (বাযযার, সহিহ তারগিব২১০নং)
তিনি বলেন, “মিসওয়াক করে তোমরা তোমাদের মুখকে পবিত্র কর। কারণ, মুখ হল কুরআনের পথ।” (বাযয়ীফ, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ১২১৩ নং)
হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘নবী (ﷺ) মিসওয়াক করে আমাকে তা ধুতে দিতেন। কিন্তু ধোয়ার আগে আমি মিসওয়াক করে নিতাম। তারপর তা ধুয়ে তাঁকে দিতাম।’ (আবূদাঊদ, সুনান, মিশকাত ৩৮৪নং)
তাঁর নিকট মিসওয়াকের এত গুরুত্ব ছিল যে, তিরোধানের পূর্ব মুহূর্তেও তিনি হযরত আয়েশার দাঁতে চিবিয়ে নরম করে নিজে দাঁতন করেছেন। (বুখারী, মিশকাত ৫৯৫৯ নং)
তিনি আরাক (পিল্লু) গাছের (ডাল বা শিকড়ের) দাঁতন করতেন। (আহমাদ, মুসনাদ, ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ১/১০৪)
আঙ্গুল দ্বারা দাঁত মাজা যায়। তবে এটা সুন্নত কি না বা এতেও ঐ সওয়াব অর্জন হবে কি না, সে ব্যাপারে কোন সহীহ হাদীস মিলে না। হাফেয ইবনে হাজার (রহঃ) তালখীসে (১/৭০) এ সম্পর্কে কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করার পর বলেন, ‘এগুলির চেয়ে মুসনাদে আহ্মাদে আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসটি অধিকতর সহীহ।’ কিন্তু সে হাদীসটিরও সনদ যয়ীফ। (মুসনাদে আহমাদ, তাহক্বীক্ব আহমাদ শাকের ১৩৫৫ নং)