শীত-গ্রীষ্ম যে কোন সময়ে মোজা পরে থাকলে তার উপর মাসাহ্ বৈধ। মোজা পরা শীতের জন্যই হতে হবে, এমন কোন শর্ত নেই। (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ্, সঊদী উলামা-কমিটি ১/২৩৫)
একেবারে পাতলা (যাতে পা দেখা যায় এমন) মোজা হলে তাতে মাসাহ্ চলবে না। (ঐ ১/২৩৪)
উত্তম ও সতর্কতামূলক আমল এই যে, উভয় পা ধোয়া শেষ হলে তবেই মোজা পরা হবে। নচেৎ ডান পা ধুয়ে মোজা পরে নিয়ে তারপর বাম পা ধোয়া ও মোজা পরা উত্তম নয়। (ঐ ১/২৩৩-২৩৪)
মোজা পরার সময় ‘এর উপর মাসাহ্ করব’ বা ‘এতদিন মাসাহ্ করব’ এমন কোন নিয়ত শর্ত বা জরুরী নয়। (ফাতাওয়া ফিল মাসহি আলাল খুফফাইন, ইবনে উসাইমীন ৬নং)
ওযু করার পরই মোজা পরলে তার উপর মাসাহ্ করা যায়। তায়াম্মুম করার পর মোজা পরলে (পুনরায় পানি পেলে ও ওযু করলে সেই সময়) মাসাহ্ করা যায় না। পক্ষান্তরে পানি না পেলে এবং ওযু না করলে যতদিন তায়াম্মুম করবে ততদিন পায়ে মোজা থাকবে। এ সময় মোজার উপর মাসাহ্ করা বা মোজা খুলে ফেলা জরুরী নয়। যেহেতু তায়াম্মুমের সাথে পায়ের কোন সম্পর্ক নেই। (ফাতাওয়া ফিল মাসহি আলাল খুফফাইন, ইবনে উসাইমীন ৫নং)
যে সফরে নামাযের কসর বৈধ, সেই সফরে ৩ দিন ৩ রাত মাসাহ্ বৈধ। (ঐ ৭নং) ঘরে থেকে মাসাহ্ শুরু করার পর সফর করলে মুসাফিরের মত ৭২ ঘন্টাই মাসাহ্ করতে পারা যাবে। অনুরুপ সফরে মাসাহ্ শুরু করে ঘরে ফিরে এলে গৃহ্বাসীর মত কেবল ২৪ ঘন্টাই মাসাহ্ করা যাবে। (ঐ ৮নং)
মাসাহ্র নির্ধারিত সময়কাল শেষ হয়ে যাওয়ার পর মাসাহ্ করে নামায পড়লে নামায হয় না। (ঐ ১০নং)
ওযু করার পর মোজা পরে ওযু না ভাঙ্গার পূর্বেই যদি খুলে পুনরায় পরে নেওয়া হয়, তাহলে তাতেও মাসাহ্ করা চলবে। কিন্তু একবার মাসাহ্ করার পর মোজা খুলে ফেললে তারপর পুনরায় (ওযু থাকলেও) পরার পর আর মাসাহ্ চলবে না। কারণ, যে ওযুতে পা ধোওয়া হয় কেবল সেই ওযুর পরই মোজা পরলে তার উপর মাসাহ্ করা যাবে। (ঐ ১১নং)
মোজার উপর মাসাহ্ করার পর জুতো পরলে বা ডবল মোজা পরলে অথবা ডবল মোজা বা জুতোর উপর মাসাহ্ করার পর একটি মোজা বা জুতো খুলে ফেললে উভয় অবস্থাতেই মাসাহ্ বৈধ। তবে মাসাহ্র সময়কাল ধরতে হবে প্রথম অবস্থা থেকে। (ঐ ১২নং)
মহিলারাও পুরুষদের মতই মাসাহ্ করবে। (ঐ ১৬নং)
মোজা নামিয়ে পা চুলকালে বা পাথর আদি বের করলে যদি অধিকাংশ পা বের হয়ে যায়, তাহলে তার উপর আর মাসাহ্ বৈধ হবে না। মোজার তলায় হাত ভরলে বা সামান্য পা বের হয়ে গেলে মাসাহতে কোন প্রভাব পড়বে না। (ঐ ১৭নং)
মোজার উপর মাসাহ্ করার পর মোজা খুলে ফেললে ঐ ওযু নষ্ট হয়ে যায় না। তবে পুনরায় (পা না ধুয়ে ওযু করে) মোজা পরলে তার উপর মাসাহ্ চলে না। (ঐ ১৯নং)
ওযুর মধ্যে যতটা পা ধোয়া ফরয মোজাতে ততটা পা-ই ঢাকতে হবে; নচেৎ মাসাহ্ হবে না -এ কথার কোন দলীল নেই। অতএব ফাটা, কাটা ও ছেঁড়া মোজার উপরেও মাসাহ্ চলবে। (ঐ ৪নং) তবে যদি অধিকাংশ পা বেরিয়ে থাকে, তাহলে সে কথা ভিন্ন।
ওযু না করে মোজা পরে তাতে মাসাহ্ করে ওযু করলে নামায হয় না। যেমন ক্ষতস্থানে মাসাহ্ ভুলে গিয়ে ওযু করে নামায পড়লেও নামায হয় না। (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ্, সঊদী উলামা-কমিটি ১/২৩২, মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ্ ৫/২৯৮)