মহান আল্লাহ বলেন,

اُتْلُ مَا أُوْحِيَ إِلَيْكَ مِنَ الْكِتَابِ وَأَقِمِ الصَّلاَةَ، إِنَّ الصَّلاَةَ تَنْهى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ، وَلَذِكْرُ اللهِ أَكْبَر

অর্থাৎ, তুমি তোমার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট গ্রন্থ পাঠ কর এবং যথাযথভাবে নামায পড়। নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও মন্দ কাজ হতে বিরত রাখে। আর অবশ্যই আল্লাহর যিক্‌র (স্মরণই) সর্বশ্রেষ্ঠ। (কুরআন মাজীদ ২৯/৪৫)

নামায মুমিনের চক্ষুকে শীতল করে, তার যাবতীয় ছোট ছোট গুনাহ বা লঘু ও উপপাপকে মোচন করে দেয়। হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (ﷺ) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, “কি অভিমত তোমাদের, যদি তোমাদের কারো দরজার সামনেই একটি নদী থাকে এবং সেই নদীতে সে প্রত্যহ্‌ পাঁচবার গোসল করে, তার শরীরে কোন ময়লা অবশিষ্ট থাকবে কি? সকলে বলল, ‘না, তার শরীরে কোন ময়লা অবশিষ্ট থাকবে না।’ তিনি বললেন, “অনুরুপই পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের উপমা। ঐ নামাযসমূহের ফলেই (নামাযীর) সমস্ত গুনাহকে আল্লাহ মোচন করে দেন।” (বুখারী ৫২৮নং, মুসলিম ৬৬৭নং, তিরমিযী, নাসাঈ)

আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেন, “কাবীরাহ্‌ গুনাহ না করলে পাঁচ ওয়াক্ত নামায, এক জুমুআহ থেকে অপর জুমুআহ -এর মধ্যবর্তীকালে সংঘটিত পাপসমূহের কাফফারা (প্রায়শ্চিত্ত)।” (মুসলিম ২৩৩নং, তিরমিযী, প্রমুখ)

হযরত আবু উসমান (রাঃ) বলেন, একদা একটি গাছের নিচে আমি সালমান (রাঃ) এর সাথে (বসে) ছিলাম। তিনি গাছের একটি শুষ্ক ডাল ধরে হিলিয়ে দিলেন। এতে ডালের সমস্ত পাতাগুলি ঝড়ে গেল। অত:পর তিনি বললেন, ‘হে আবু উসমান! তুমি আমাকে জিজ্ঞাসা করবে না কি যে, কেন আমি এরুপ করলাম?’ আমি বললাম, ‘কেন করলেন?’ তিনি বললেন, ‘ একদা আমিও আল্লাহর রসূল (ﷺ) এর সাথে গাছের নিচে ছিলাম। তিনি আমার সামনে অনুরুপ করলেন; গাছের একটি শুষ্ক ডাল ধরে হিলিয়ে দিলেন। এতে তার সমস্ত পাতা খসে পড়ল। অতঃপর বললেন, “হে সালমান! তুমি আমাকে জিজ্ঞাসা করবে না কি যে, কেন আমি এরুপ করলাম?” আমি বললাম, কেন করলেন? তিনি উত্তরে বললেন, “মুসলিম যখন সুন্দরভাবে ওযু করে পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ে তখন তার পাপরাশি ঠিক ঐভাবেই ঝরে যায় যেভাবে এই পাতাগুলো ঝরে গেল। আর তিনি এই আয়াত পাঠ করলেন,

وَأَقِمِ الصَّلاَةَ طَرَفَىِ النَّهَارِ وَزُلَفاً مِّنَ اللَّيْلِ، إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّآتِ، ذلِكَ ذِكْرى لِلذَّاكِرِيْنَ

অর্থাৎ, আর তুমি দিনের দু’ প্রান্তভাগে ও রাতের প্রথামাংশে নামায কায়েম কর। পুণ্যরাশি অবশ্যই পাপরাশিকে দূরীভূত করে দেয়। (আল্লাহর) স্মরণকারীদের জন্য এ হল এক স্মরণ। (সূরা হূদ ১১৪ আয়াত) (আহ্‌মদ, নাসাঈ, ত্বাবারানী, সহীহ তারগীব ৩৫৬নং)

মহানবী (ﷺ) বলেন, “বান্দা যখন নামাযে দাঁড়ায়, তখন তার সে তার সমস্ত গুনাহকে নিয়ে তার মাথায় ও দুই কাঁধে রাখা হয়। অতঃপর সে যখনই রুকূ ও সিজদা করে, তখনই একটি একটি করে সমস্ত গুনাহগুলি ঝরে পড়ে যায়।” (বাইহাকী, সহীহ জামে ১৬৭১নং)