বান্দাকে তাক্বদীরের প্রতি ঈমান আনতে হবে এবং শরী‘আতের আদেশ-নিষেধ মেনে চলতে হবে। বান্দা সৎকর্ম করলে আল্লাহ্র প্রশংসা করবে। আর অন্যায় কিছু করে ফেললে আল্লাহ্র নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে। কারণ আমাদের আদি পিতা আদম (‘আলাইহিস্সালাম) পাপ করে আল্লাহ্র নিকট তওবা করেছিলেন। ফলে আল্লাহ তাঁর তওবা কবূল করেছিলেন এবং তাঁকে নবী হিসাবে মনোনীত করেছিলেন। পক্ষান্তরে ইবলীস পাপকে আঁকড়ে ধরে ছিল। ফলে আল্লাহ তাকে অভিশাপ করেছেন এবং তাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছেন। অতএব যে পাপ করে তওবা করবে, সে প্রকৃত মানুষ হিসাবে পরিগণিত হবে। কিন্তু যে পাপ করে তাক্বদীরের দোহাই দিবে, সে ইবলীসী কর্মকাণ্ডের ধ্বজাধারী হবে। সৌভাগ্যবান সে-ই, যে তার পিতার অনুসরণ করবে। আর দুর্ভাগা সে-ই, যে তার শত্রু ইবলীসের অনুসরণ করবে।[1]
একজন মুমিনকে তাক্বদীরের চারটি স্তরের উপর বিশ্বাস করতে হবে। সে মনে-প্রাণে বিশ্বাস করবে, আল্লাহ্র জ্ঞান, লিখন, ইচ্ছা এবং সৃষ্টির বাইরে কোন কিছুই ঘটে না। সে আরো বিশ্বাস করবে যে, আল্লাহ তাকে তাঁর অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন এবং পাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। ফলে সে সৎকাজ করে যাবে এবং পাপাচার বর্জন করে চলবে। আল্লাহ তাকে সৎকাজ করার এবং অসৎকাজ বর্জন করার তওফীক্ব দিলে সে আল্লাহ্র শুকরিয়া আদায় করবে। পক্ষান্তরে সৎকাজ সম্পাদন এবং অসৎকাজ বর্জনের তওফীক্বপ্রাপ্ত না হলে আল্লাহ্র নিকট ক্ষমা প্রার্থনা এবং তওবা করবে।
ইহলৌকিক সুযোগ-সুবিধা অর্জনেও বান্দাকে প্রচেষ্টা করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে সঠিক এবং বৈধ পন্থা অবলম্বন করতে হবে। সে তার কাঙ্খিত বস্তুটি অর্জন করতে পারলে আল্লাহ্র শুকরিয়া আদায় করবে। আর না পারলে তাক্বদীরের প্রতি সন্তুষ্ট থাকবে। সাথে সাথে তাকে বিশ্বাস করতে হবে, তাক্বদীরে যদি লেখা থাকে, সে সঠিক কিছু করবে, তাহলে তা কখনই ভুল হওয়ার নয়। পক্ষান্তরে তাক্বদীরে যদি লেখা থাকে, সে ভুল করবে, তাহলে তা কখনই সঠিক হওয়ার নয়।
মনে রাখতে হবে, তাক্বদীরের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম প্রতিটি বিষয়ে জ্ঞান রাখা সবার জন্য যরূরী নয়। সংক্ষিপ্তাকারে মৌলিক বিষয়গুলি জেনে নিলেই যথেষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ।[2]
[2]. আল-ঈমান বিল ক্বাযা ওয়াল ক্বাদার/৭১-৭২।