৭. ২. ২. বেদনার্ত যীশুকে রেখে প্রেরিতদের ঘুম

ইহুদিদের হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে গেৎশিমানী (Gethsemane) বাগানে যীশুর মর্মান্তিক দুঃখ, প্রার্থনা ও শিষ্যদের নির্বিকার ঘুমিয়ে পড়ার বিষয়টা আমরা ইতোপূর্বে আলোচনা করেছি। যীশু বলেন: ‘‘আমার প্রাণ মরণ পর্যন্ত দুঃখার্ত হইয়াছে (দুঃখে যেন আমার প্রাণ বেরিয়ে যাচ্ছে); তোমরা এখানে থাক, আমার সাথে জাগিয়া থাক।’’ (মথি ২৬/৩৮; মার্ক ১৪/৩৪)। যে কোনো মানুষ তার প্রিয়জনকে এরূপ দুঃখার্ত দেখলে ইচ্ছা করলেও ঘুমাতে পারবে না। অথচ পাঠক এ অধ্যায়টা পড়ে দেখবেন, যীশুর শিষ্যরা গুরুর নির্দেশ সত্ত্বেও একটা ঘণ্টাও  জেগে থাকতে পারলেন না। যীশু কিছু সময় প্রার্থনা করে ফিরে এসে দেখেন যে, তাঁরা ঘুমিয়ে পড়েছেন! তখন তিনি পিতরকে বললেন, এ কী? এক ঘণ্টাও কি আমার সঙ্গে জেগে থাকতে তোমাদের শক্তি হল না? জেগে থাক ও প্রার্থনা কর। এরপর তিনি দ্বিতীয় বার গিয়ে আবার প্রার্থনা করলেন। পরে তিনি আবার এসে দেখেন যে, তাঁরা ঘুমিয়ে পড়েছেন। এভাবে বারবার যীশু তাঁদেরকে ঘুমন্ত দেখে খুবই কষ্ট পেলেন, দুঃখ প্রকাশ করলেন এবং তাঁদেরকে জাগ্রত থাকতে নির্দেশ দিলেন। কিন্তু তারপরও বারবারই তাঁরা অঘোরে ঘুমিয়ে গেলেন! (মথি ২৬/৩৬-৪৭; মার্ক ১৪/৩২-৪২; লূক ২২/৩৯-৪৬)

সুপ্রিয় পাঠক, পৃথিবীর সাধারণ পাপী মানুষদের দিকে তাকান। যদি তাদের কোনো নেতা বা কোনো আপনজন অত্যন্ত দুঃখার্ত ও অস্থির থাকেন তবে তারা সে রাতে ঘুমাতে পারেন না। জগতের সবচেয়ে পাপী মানুষটাও এরূপ অবস্থায় ঘুমাতে পারবেন না। কোনো সিনেমায় বা গল্পে কোনো বেদনার্ত গুরু এরূপ সকাতর আবেদনের পরে কয়েক মিনিটের মধ্যে শিষ্যদের ঘুমিয়ে পড়তে দেখলে সে গুরু ও শিষ্যদের প্রতি আপনি কী ধারণা করবেন?