ইঞ্জিলের কিছু কিছু বক্তব্য বাহ্যত যীশুর বিষয়ে অশালীন ধারণা জন্ম দেয়। সুস্পষ্টতই এগুলো ইঞ্জিল লেখকদের ভুল বর্ণনা। এগুলোর মধ্যে রয়েছে পুরুষে পুরুষে অশালীন প্রেমের ধারণা। ইউহোন্না বা যোহনের ইঞ্জিলে যীশুর এক জন শিষ্যের বিষয়ে বার বার উল্লেখ করা হয়েছে যে, যীশু তাকে ‘প্রেম’ বা ‘মহববত’ করতেন। (যোহন ১৯/২৬, ২০/২, ২১/৭)। আর এ প্রেমকৃত শিষ্যের সাথে যীশুর অন্তরঙ্গতা ও ঘনিষ্ঠতা বর্ণনা করে যোহন লেখেছেন:
‘‘এই কথা বলে ঈসা রূহে অস্থির হলেন, আর সাক্ষ্য দিয়ে বললেন, সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদেরকে বলছি, তোমাদের মধ্যে এক জন আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে। সাহাবীরা এক জন অন্যের দিকে তাকাতে লাগলেন, স্থির করতে পারলেন না, তিনি কার বিষয় বললেন। তখন ঈসার সাহাবীদের এক জন, যাঁকে ঈসা মহববত করতেন ( কেরি: যাঁহাকে যীশু প্রেম করিতেন), তিনি তাঁর কোলে হেলান দিয়ে বসে ছিলেন (there was leaning on Jesus’ bosom one of his disciples, whom Jesus loved)। তখন শিমোন পিতর তাঁকে ইঙ্গিত করলেন ও বললেন, বল, উনি যার বিষয় বলছেন, সে কে? তাতে তিনি সেরকম ভাবে বসে থাকাতে ঈসার বুকের দিকে মাথা কাত করে (lying on Jesus’ breast: বুকের উপর শুয়ে পড়ে; কেরি: পশ্চাতে হেলিয়া) বললেন, প্রভু, সে কে? (যোহন/ ইউহোন্না ১৩/২১-২৪, মো.-১৩)
পাঠক, কল্পনা করুন! একজন ধর্মগুরু বসে আছেন। তার একজন ‘প্রেমকৃত’ শিষ্য তারই কোলে হেলান দিয়ে বসে আছেন। আবার কিছু জিজ্ঞাসা করতে স্ত্রী যেমন স্বামীর বুকের মধ্যে মাথা এগিয়ে আদর করে কিছু জানতে চায় সেভাবেই তিনি জানতে চাচ্ছেন। কেউ একে নোংরা অর্থে ব্যাখ্যা করলে কি দোষ দেওয়া যায়?
এ প্রসঙ্গে বাইবেল সমালোচক গ্যারি ডেভানি লেখেছেন: “Doesn’t John seem to emphasize relationships of eating bodies, drinking blood, and (sorry) male to male intimacy?” ‘‘যোহনের ইঞ্জিল থেকে কি এটাই প্রতীমান নয় যে, তিনি নরমাংস ভক্ষণ, নররক্ত পান এবং (দুঃখিত) পুরুষে পুরুষে অন্তরঙ্গতা-ঘনিষ্ঠতার উপরে গুরুত্বারোপ করেছেন?’’[1]