কুরআন কারীমের ইহূদী, খৃস্টান, আরবের কাফিরগণ ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। এরা সকলেই নিজদেরকে খাটি মুমিন বলেই দাবি ও বিশ্বাস করত। তার মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর দীনকেই বিভ্রান্তি ও পুর্বপুরুষদের মাধ্যমে প্রাপ্ত খাঁটি ধর্মের ব্যতিক্রম বলে মনে করত। অথচ তারা সকলেই ঈমান বিনষ্টকারী শিরক, কুফর ইত্যাদির মধ্যে লিপ্ত ছিল। তারা অনেক নেককর্ম করত এবং আল্লাহর ইবাদত বন্দেগি করত। কিন্তু ঈমান-বিনষ্টকারী বিষয়াদিতে বা শির্ক-কুফরে লিপ্ত থাকা অবস্থায় এ সকল কর্ম কখনোই আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এজন্য মহান আল্লাহ বলেন:
وَلَقَدْ أُوحِيَ إِلَيْكَ وَإِلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكَ لَئِنْ أَشْرَكْتَ لَيَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَلَتَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ
‘‘নিশ্চয়ই তোমার প্রতি এবং তোমার পূর্ববর্তীগণের প্রতি এ ওহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, যদি তুমি শিরকে লিপ্ত হও, তবে অবশ্যই তোমার কর্ম বিনষ্ট হয়ে যাবে এবং তুমি নিশ্চিতরূপে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তভুক্ত হবে।’’[1]
অন্যত্র ইরশাদ করা হয়েছে:
وَمَنْ يَكْفُرْ بِالإِيمَانِ فَقَدْ حَبِطَ عَمَلُهُ وَهُوَ فِي الآَخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ
‘‘আর কেউ ঈমান প্রত্যাখ্যান করলে তার কর্ম বিনষ্ট বা নিষ্ফল হবে এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’’[2]
মহান আল্লাহ আরো বলেন,
إِنَّ اللَّهَ لا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ وَمَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدِ افْتَرَى إِثْمًا عَظِيمًا
‘‘আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করার অপরাধ ক্ষমা করেন না। তা ছাড়া অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছ ক্ষমা করেন। এবং যে কেউ আল্লার সাথে শরীক করে সে এক মহাপাপ করে।’’[3]
এ মর্মে আরো অনেক আয়াত ও হাদীস আমরা পরবর্তী অধ্যায়গুলিতে দেখব। এজন্য ঈমান বিনষ্টকারী বিষয়ের স্বরূপ, এগুলির কারণ ও পূর্ববর্তী উম্মাতগুলির বিভ্রান্তির কারণ ও প্রেক্ষাপট অবগত হওয়া মুমিনের অন্যতম দায়িত্ব। অন্যথায় শয়তানের প্ররোচনায় অর্জিত ঈমান বিনষ্ট হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে।
[2] সূরা (৫) মায়িদা: ৫ আয়াত।
[3] সূরা (৪) নিসা: ৪৮ আয়াত।