জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে বলে, হে আল্লাহর রাসূল, আমি ইসলাম গ্রহণ করেছি, তিনি বললেন, কুফরির চুল মুণ্ডিয়ে ফেল আর খাৎনা কর।[1]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মানুষের প্রকৃতিগত স্বভাব পাঁচটি। যথা:
ক. খাৎনা করা।
খ. নাভির নিচের পশম পরিস্কার করা।
গ. বগলের নিচের পশম উপড়ানো।
ঘ. নখ কর্তন করা।
ঙ. মোচ ছোট করা।[2]
ইমাম নববি রহ. বলেন, এখানে প্রকৃতগত স্বভাবের অর্থ সুন্নত।
খাৎনার সময়: সপ্তম দিন খাৎনা করানো সুন্নত। জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম হাসান এবং হুসাইনের সপ্তম দিন আকিকা দিয়েছেন ও খাৎনা করিয়েছেন।[3]
সহীহ বুখারী ও মুসলিমের হাদীস দ্বারা প্রমাণিত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম আশি বছর বয়সে খাৎনা করেছেন। আর ইবরাহীম আলাইহিস সালামের অনুসরণ করার জন্য আমরা আদিষ্ট। আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সম্বোধন করে বলেন,
﴿ثُمَّ أَوۡحَيۡنَآ إِلَيۡكَ أَنِ ٱتَّبِعۡ مِلَّةَ إِبۡرَٰهِيمَ حَنِيفٗاۖ وَمَا كَانَ مِنَ ٱلۡمُشۡرِكِينَ ١٢٣﴾ [النحل: ١٢٣]
“তারপর আমরা আপনার প্রতি অহী পঠিয়েছি যে, আপনি মিল্লাতে ইবরাহীমের অনুসরণ করেন, যে ছিল একনিষ্ঠ এবং ছিল না মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত।” [সূরা আন-নাহল, আয়াত: ১২৩]
মূলতঃ খাৎনার বয়স জন্মের এক সপ্তাহ পর থেকে শুরু হয়। তবে সাত বছর পুরো হওয়ার আগেই তা সেরে নেওয়া ভালো। সাবালক হওয়ার পূর্বে খাৎনা করা অবশ্য জরুরি। ডাক্তারি বিদ্যা প্রমাণ করেছে যে, জন্মের এক সপ্তাহ পর থেকে তিন বৎসরের মধ্যে খাৎনা সম্পাদন করা উত্তম।
খাৎনার বিধানের ব্যাপারে ইমাম আবু হানিফা রহ. বলেন, খাৎনা সুন্নত। ইমাম শাফি, মালেক ও আহমদ রহ. বলেন, খাৎনা ওয়াজিব। এ ব্যাপারে ইমাম মালেক রহ. আরো কঠোর অবস্থান নিয়ে বলেছেন, যে খাৎনা করবে না তার ইমামত ও সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয়। কাজি আয়াজ রহ. বলেছেন, অধিকাংশ আলেমদের নিকট খাৎনা সুন্নত, এ সুন্নত পরিত্যাগ করা গোনাহ।
[2] সহীহ বুখারী
[3] তাবরানী ফিল আওসাত ও বায়হাকী