المنكرون لعذاب القبر ونعيمه وشبهتهم والرد عليهم - কবরের আযাব ও নিয়ামত অস্বীকারকারীদের বিভ্রান্তি ও তাদের জবাব

নাস্তিক ও অবিশ্বাসীরাই কেবল কবরের আযাব ও সুখ-শান্তিকে অস্বীকার করেছে। তাদের কথা হলো, আমরা কবর খনন করলে তাতে ফেরেশতা দেখি না এবং মৃতদেরকে পিটাতেও দেখি না। সেখানে সাপ-বিচ্ছু দেখি না এবং আগুনও জ্বলতে দেখিনা। চোখের দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত কবর প্রশস্ত করে দেয়া কিংবা তা খুব সংকীর্ণ করে দেয়া হয় কিভাবে? অথচ আমরা কবরকে হুবহু আপন অবস্থায় পাই। কবর যে পরিমাণ খনন করা হয়, সে পরিমাণ প্রশস্ত হিসাবেই পাই। তাতে কোনো বৃদ্ধি কিংবা সংকীর্ণতা দেখিনা। সুতরাং কবর জান্নাতের বাগান কিংবা আগুনের গর্ত হয় কিভাবে!!

এর জবাব আমরা বিভিন্নভাবে দিতে পারি।

(১) বারযাখী জীবনের বিষয়গুলো গায়েবের অন্তর্ভুক্ত। নবী-রসূলগণ এ ব্যাপারে সংবাদ দিয়েছেন। তাদের খবরগুলো বিবেক-বুদ্ধি দ্বারা বোধগম্য হওয়া মূলত অসম্ভব নয়। সুতরাং তাদের খবরসমূহ বিশ্বাস করা আবশ্যক।

(২) কবরের আগুন ও সবুজ-শ্যামল পরিবেশ দুনিয়ার আগুন ও সবুজ-শ্যামল সশ্যময় পরিবেশ এক রকম নয়। যাতে করে যে ব্যক্তি দুনিয়ার আগুন ও সতেজ-সবুজ পরিবেশ দেখেছে, সে কবরের আগুন কিংবা সবুজ-শ্যামল ও আনন্দময় পরিবেশ দেখতে পারে। সেটি আখিরাতের আগুন কিংবা শান্তিময় অবস্থা। সেটি দুনিয়ার আগুনের চেয়ে ভয়াবহ। দুনিয়াবাসীরা সেটার উত্তাপ পাবে না। আল্লাহ তা‘আলা কবরবাসীর উপরের মাটি-পাথর এবং তার নীচের মাটি-পাথর উত্তপ্ত করেন। তা দুনিয়ার আগুনের চেয়ে বেশি গরম হয়। যদিও যমীনবাসীরা যদি সে মাটি-পাথর স্পর্শ করে, তা অনুভব করে না। আল্লাহ তা‘আলার ক্ষমতা এর চেয়ে অধিক সুপ্রশস্ত ও বিস্ময়কর।

তবে আল্লাহ তা‘আলা যখন ইচ্ছা তার কতিপয় বান্দাকে কবরের আযাব বা সুখ-শান্তি দেখান এবং অন্যদের থেকে সেটা গায়েব রাখেন। তিনি যদি সমস্ত মানুষকে কবরের আযাব দেখাতেন, তাহলে শরী‘আতের আদেশ-নির্দেশ দেয়া এবং গায়েবের প্রতি ঈমান আনয়নের হিকমত ছুটে যেতো। লোকেরা মরা লাশ দাফনও করতো না। যেমন সহীহ বুখারী-মুসলিমের হাদীছে এসেছে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

  فَلَوْلاَ أَنْ لاَ تَدَافَنُوا لَدَعَوْتُ اللَّهَ أَنْ يُسْمِعَكُمْ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ الَّذِى أَسْمَعُ مِنْهُ»

‘‘এ উম্মতকে কবরের ফিতনায় ফেলা হবে। আমার যদি এ আশঙ্কা না হতো যে কবরের আযাব শুনালে, তোমরা মৃতদেরকে দাফন করা বর্জন করবে, তাহলে আমি আল্লাহর কাছে দু‘আ করতাম, তিনি যেন কবরের আযাব থেকে তোমাদেরকেও কিছু শুনাতাম, যা আমি শুনতে পাই’’।[1]

পশু-পাখিকে কবরের আযাব না শুনানোর মধ্যে কোনো হিকমত ছিলনা, তাই তারা কবরের আযাব শুনতে পায় এবং তা অনুভব করতে সক্ষম হয়। যেমন রসূল সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন খচ্চরের উপর আরোহন করে এমন এক কিছু কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন, যেগুলোর অধিবাসীদেরকে শাস্তি দেয়া হচ্ছিল। খচ্চরের ছুটাছুটির কারণে তখন তিনি তার উপর থেকে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিলেন। কবরের আযাব দেখা ফেরেশতা ও জিন দেখার মতই। আল্লাহ তা‘আলা যাকে দেখাতে চান সে দেখতে পায়।

সুতরাং যারা আল্লাহ তা‘আলার সীমাহীন ক্ষমতা সম্পর্কে জ্ঞান রাখে ও তার স্বীকৃতি প্রদান করে তারা কিভাবে এমন ঘটনাসমূহ অস্বীকার করতে পারেন, যা তিনি ঘটান এবং বিশেষ হিকমত, বান্দাদের প্রতি দয়া ও তা দেখার ও শ্রবণ করতে সক্ষম নয় বলে তা থেকে তাদের দৃষ্টি ফিরিয়ে রাখেন? মূলত কবরের আযাব দেখতে বান্দার দৃষ্টি শক্তি দুর্বল এবং তার আযাব শোনাও তার শ্রবণ শক্তির ধারণ ক্ষমতার বাইরে।

আসলে কবরের প্রশস্ততা, সংকীর্ণতা, কবরের আলো, সবুজ-শ্যামল পরিবেশ কিংবা তার আগুন এ নশ্বর জগতের জ্ঞাত-পরিচিত জিনিস সমূহের মতো নয়। আল্লাহ তা‘আলা এ দুনিয়াতে কেবল এর মধ্যকার জিনিসগুলো দেখিয়েছেন। আর আখিরাতের বিষয়গুলোর উপর পর্দা ঝুলিয়ে রেখেছেন। যাতে না দেখে ও না শুনে তা বিশ্বাস করা ও স্বীকার করা তাদের সৌভাগ্যের উপকরণ হয়। তিনি যদি তার বান্দা থেকে গায়েবের পর্দা উন্মুক্ত করে দেন, তখন সেগুলো প্রত্যক্ষভাবে দেখা যাবে। সুতরাং আল্লাহ তা‘আলার হিকমত যেহেতু এমনই ছিল যে, মানুষ তাকে না দেখেই তার প্রতি ঈমান আনয়ন করুক, কবরের আযাব ও আখিরাতের অন্যান্য বিষয় না দেখেই বিশ্বাস করুক এবং এর মাধ্যমে তারা তার প্রিয় বান্দা হিসেব পরিণত হোক ও দুনিয়া আখিরাতে সৌভাগ্যবান হোক, তাই হিকমতের দাবি হিসাবে তিনি গায়েবের বিষয়গুলো তাদের থেকে আড়াল করে রেখেছেন। গায়েবী বিষয়গুলো তাদের সামনে প্রকাশ করলে গায়েবের প্রতি ঈমান আনয়নের হিকমত ঠিক থাকতো না।

কবর ও আখিরাতের অন্যান্য গায়েবী বিষয়গুলোর উপর আল্লাহ তা‘আলা এমন পর্দা ঝুলিয়ে রেখেছেন যে, কোনো মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার আগেই তার জীবিত আত্মীয়-স্বজন ও অন্যান্য লোকদের সামনে নাকীর-মুনকার ফেরেশতাদ্বয় আগমন করে উপস্থিত লোকদের টের পাওয়া ছাড়াই জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে দেয়া মোটেই অসম্ভব নয়। মৃত ব্যক্তি ফেরেশতাদ্বয়ের প্রশ্নের জবাবে যা বলে উপস্থিত লোকদের তা শ্রবণ করারও কোনো পথ নেই। ফেরেশতারা মৃত ব্যক্তিকে মাটির উপরে থাকতেই মারপিট শুরু করলেও উপস্থিত লোকদের মারপিট দেখা ও তার ভয়ানক চিৎকারের আওয়াজ শ্রবণ করারও কোনো সুযোগ নেই।

আমাদের কেউ তার জাগ্রত সাথীর পাশে ঘুমিয়ে থাকে। তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় স্বপ্নের মধ্যে মারপিট করা হয়, শাস্তি দেয়া হয়, সে কষ্ট পায়। তার পার্শ্বের জাগ্রত লোকেরা এ সম্পর্কে কোনো খবরই রাখে না।

শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমীয়া রাহিমাহুল্লাহ বলেন, কবরের আযাব এবং নাকীর-মুনকার সম্পর্কে অনেক হাদীছ রয়েছে। এগুলো নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে মুতাওয়াতির হিসেব বর্ণিত হয়েছে। বুখারী ও মুসলিম শরীফে ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, একদা নবী করীম সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম দু’টি কবরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বললেন, এ দু’জনকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে, তবে বড় কোনো অপরাধের কারণে শাস্তি দেয়া হচ্ছে না। তাদের একজন চোগলখোরী করতো এবং অন্যজন পেশাব করার সময় নিজেকে মানুষ থেকে আড়াল করতো না। অতঃপর খেজুর গাছের একটি তাজা ডাল এনে দ্বিখন্ডিত করে প্রত্যেক কবরের উপর একটি করে গেড়ে দিলেন। লোকেরা বললো, ইয়া রসূলাল্লাহ! কেন এমনটি করলেন? তিনি বললেন, সম্ভবত ডাল দু’টি না শুকানো পর্যন্ত তাদের কবরের আযাব হালকা করা হবে’’।

 সহীহ মুসলিম এবং সুনান গ্রন্থসমূহে আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন শেষ তাশাহুদ পাঠ করবে তখন সে যেন আল্লাহর কাছে চারটি বিষয় থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করে। সে যেন বলে,

«اللَّهُمَّ إِنِّى أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جهنم و من عذاب الْقَبْرِ وفِتْنَةِ الْمَحْيَا وَ الْمَمَاتِ ومِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ»

‘‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি কবরের আযাব হতে, জাহান্নামের শাস্তি হতে, জীবণ ও মরন কালীন ফিতনা হতে এবং মসীহ দাজ্জালের ফিতনা হতে’’।

শাইখুল ইসলাম কবরের আযাব সংক্রান্ত বিষয়ে আরো হাদীছ বর্ণনা করার পর বলেন, যে ব্যক্তি কবরের আযাব ভোগ করার হকদার এবং যে তার সুখ-শান্তি  উপভোগ করার যোগ্য, তার জন্য তা সাব্যস্ত হওয়া এবং কবরে নাকীর-মুনকার ফেরেশতাদ্বয়ের প্রশ্ন সাব্যস্ত হওয়ার অনেক মুতাওয়াতির হাদীছ রয়েছে। সুতরাং এটি বিশ্বাস করা আবশ্যক। তবে কবরের আযাব ও নিয়ামতপ্রাপ্ত হওয়ার ধরণ-পদ্ধতি সম্পর্কে আমরা কথা বলবো না। বিবেক-বুদ্ধি এটি উপলব্ধি করতে সক্ষম নয়। কারণ দুনিয়ার জীবনে বিবেক-বুদ্ধির এ বিষয়ে কোনো অভিজ্ঞতা নেই। আর শরী‘আত বিবেক-বুদ্ধি দ্বারা বোধগম্য নয়, এমন কোনো বিষয় নির্ধারণ করে না। তবে কখনো কখনো এমন বিষয় শরী‘আতভুক্ত করা হয়, যা মানুষের বিবেক-বুদ্ধিকে হয়রান করে ফেলে। কেননা মৃতদেহে রূহ ফিরে আসা দুনিয়ায় পরিচিত স্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়। বরং মৃতদেহে রূহ এমনভাবে ফেরত দেয়া হবে, যা দুনিয়ার মানুষের নিকট পরিচিত পদ্ধতির ব্যতিক্রম।

শাইখুল ইসলাম আরো বলেন, কবরের আযাব হলো বারযাখী জগতের আযাব। বারযাখী জীবনে আযাবের হকদার প্রত্যেক মৃত ব্যক্তিই তার অংশ ভোগ করবে। তাকে কবরস্থ করা হোক বা না হোক। তাকে হিংস্র প্রাণী খেয়ে ফেলুক অথবা আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত করে দেয়া হোক। তাকে পিষে বাতাসে উড়িয়ে দেয়া হোক বা ক্রশবিদ্ধ করা হোক অথবা সাগরে ডুবে যাক কিংবা মাছের পেটে চলে যাক। তার রূহ ও দেহের মধ্যে ঐ শাস্তিই গিয়ে পেঁŠছাবে, যা কবরস্থ মৃত ব্যক্তির রূহ ও দেহের মধ্যে পৌছে থাকে। এমনি তাকে বসানো এবং তার একপাশের পাজরের হাড্ডী অন্যপাশের পাজরের হাড্ডীর মধ্যে ঢুকে পড়ার বিষয়টিও অনুরূপ। অতএব রসূল সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে যা এসেছে, বাড়ানো ও কমানো ছাড়া তা হুবহু সেভাবেই বুঝা আবশ্যক। তার কথা যে অর্থের সম্ভাবনা রাখে না সে অর্থে তাকে ব্যবহার করা যাবে না। তার কথা দ্বারা তিনি যা উদ্দেশ্য করছেন, যে হিদায়াত বর্ণনা করছেন তা উপেক্ষা করা যাবে না। কিন্তু উপরোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি কতই না অবহেলা করা হচ্ছে! তাকে উপেক্ষা করার কারণে কতই না বিভ্রান্তি হয়েছে! সঠিক পথ থেকে কতই না দূরে সরে যাওয়া হচ্ছে!

শাইখুল ইসলাম আরো বলেন, মোটকথা ঘর হলো তিনটি। দুনিয়ার ঘর, বারযাখের ঘর ও স্থায়ীভাবে বসবাসের ঘর। আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক ঘরের জন্য আলাদা আলাদা হুকুম-আহকাম নির্ধারণ করেছেন। দুনিয়ার হুকুম-আহকাম শরীরের জন্য। রূহসমূহ তার অনুগামী। বারযাখের হুকুম রূহের উপর। শরীর তার অনুগামী। কিন্তু যখন শরীরসমূহ একত্রিত করার দিন উপস্থিত হবে এবং লোকেরা কবর থেকে উঠবে, তখন রূহ এবং শরীর উভয়ের জন্যই শাস্তি বা আযাব কিংবা অন্যান্য হুকুম-আহকাম শুরু হবে। প্রিয় পাঠক! আপনি যখন উপরোক্ত বিষয়টি নিয়ে ভালোভাবে চিন্তা-গবেষণা করবেন, তখন বুঝতে সক্ষম হবেন যে, কবর জান্নাতের একটি বাগান কিংবা আগুনের একটি গর্ত হওয়া বিবেক-বুদ্ধি দ্বারা পূর্ণ সমর্থিত। তা সত্য হওয়াতে কোনো সন্দেহ নেই। উপরোক্ত বিষয়গুলো বিশ্বাস করার মাধ্যমেই মুমিনগণ অন্যদের থেকে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট সম্পন্ন হতে পেরেছেন।

আরো জেনে রাখা আবশ্যক যে, কবরের আগুন ও সবুজ-শ্যামল অবস্থা দুনিয়ার আগুন ও সবুজ-শ্যামল অবস্থার মত নয়। আল্লাহ তা‘আলা কবরে দাফনকৃত ব্যক্তির উপর এবং নীচের মাটি ও পাথর গরম করবেন। ফলে তা দুনিয়ার আগুনের চেয়ে বেশি উত্তপ্ত হবে। দুনিয়াবাসী যদি কবরের উপরের মাটি ও পাথর স্পর্শ করে তাহলে উত্তাপ অনুভব করে না; বরং এর চেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, দু’জন মৃত ব্যক্তিকে পাশাপাশি দাফন করা হয়। তাদের একজন আগুনের গর্তের মধ্যে থাকে এবং অন্যজন থাকে জান্নাতের বাগানে। আগুনের গর্তে অবস্থানকারীর নিকট থেকে উত্তাপের কোনো অংশ জান্নাতের বাগানে অবস্থানরত ব্যক্তির কাছে যায় না এবং জান্নাতের বাগানে অবস্থানকারীর আনন্দের কোনো অংশ আগুনের গর্তে শাস্তিভোগ কারীর কাছে যায় না। আল্লাহর কুদরত এর চেয়ে আরো ব্যাপক ও বিস্ময়কর। তবে সমস্যা হলো মানুষের জ্ঞান যা আয়ত্ত করতে অক্ষম, তারা তা অস্বীকার করার ক্ষেত্রে খুব অগ্রগামী।

আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে দুনিয়াতে তার এমন কিছু বিস্ময়কর কুদরত দেখিয়েছেন, যা কবরের আযাব কিংবা তার শাস্তি সংক্রান্ত বিষয়ের চেয়েও ভয়াবহ। তিনি যখন তার কোনো কোনো বান্দাকে কবরের আযাব দেখানোর ইচ্ছা করেন, তখন তাকে তা দেখান এবং অন্যদের থেকে তা গোপন রাখেন। সমস্ত মানুষকে তা দেখালে শরী‘আতের আদেশ-নির্দেশের হিকমত শেষ হয়ে যেতো এবং গায়েবের প্রতি বিশ্বাস করার উদ্দেশ্য নিঃশেষ হয়ে যেতো। সেই সঙ্গে মানুষ তাদের স্বজনদের লাশ মাটির নীচে দাফন করাও বাদ দিতো। যেমন সহীহ বুখারীর হাদীছে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত হয়েছে,

  فَلَوْلاَ أَنْ لاَ تَدَافَنُوا لَدَعَوْتُ اللَّهَ أَنْ يُسْمِعَكُمْ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ الَّذِى أَسْمَعُ مِنْهُ»

‘‘এই উম্মতকে কবরের ফিতনায় ফেলা হবে। আমার যদি এ আশঙ্কা না হতো যে, কবরের আযাব শোনালে তোমরা মৃতদেরকে দাফন করা বর্জন করবে, তাহলে আমি আল্লাহর কাছে দু‘আ করতাম, তিনি যেন কবরের আযাব থেকে তোমাদেরকেও কিছু শুনান, যা আমি শুনতে পাই’’।


[1]. সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং- ৭৩৯২।