ঘুমিয়ে গেলে বা ঘুমিয়ে থাকলে বা ভুলে গেলে অচেতন অবস্থায় যে নামায তার ওয়াক্তমতো পড়া গেল না, সে নামায ওয়াক্তের পরে পড়া হলো কাযা নামায। যে নামায তার নির্দিষ্ট ওয়াক্তে পড়তে পারা গেল না সে নামায পরে কাযা আদায় করতেই হবে। এর কোন কাফফারা নাই। কাযা যেভাবে আদায় করতে হবে:
(১) ঘুমের কারণে কাযা হলে ঘুম ভাঙ্গার সাথে সাথে আদায় করবে।
(২) ভুলে আদায় করা না হলে স্মরণ হওয়া মাত্র আদায় করবে।
(৩) অজ্ঞান হয়ে পরলে সে সময়ের বাদ পরা সালাত আর আদায় করা লাগবে না। তবে ইচ্ছাকৃত হলে যেমন- চিকিৎসার জন্য বা অপারেশনের জন্য অজ্ঞান হলে জ্ঞান ফেরার পর কাযা আদায় করতে হবে।(মিশকাত: ৩২৮৭)।
(৪) পরপর একাধিক ওয়াক্ত কাযা সালাত আদায় করতে আযান দিবে মাত্র একবার, কিন্তু ইকামাত দিবে প্রতি সালাতেরই।
(৫) রাতের নামায দিনে কাযা করলে ঐ নামায রাতের মতো স্বশব্দে পড়বে। ঠিক এভাবে দিনের নামায রাতে কাযা করলে দিনের মতোই চুপিসারে তিলাওয়াত করবে।
(৬) সফরে থাকার কসরের নামায কাযা হলে বাড়ি ফিরে কসরই পড়বে এবং বাড়ি থাকা অবস্থার নামায কাযা হলে সফরে গিয়ে পুরা করেই পড়বে। মোট কথা যেমন নামায তেমন কাযা করবে। (৭) এক সঙ্গে কয়েক ওয়াক্ত নামায বাদ পড়ে গেলে ঐ কাযা নামাযগুলো ধারাবাহিকভাবে পড়বে। যেমন ফজর, যোহর, আসর, মাগরিব এ সিরিয়ালে।ক্রমধারা ভঙ্গ করা যাবে না।
(৮) কেউ যদি যোহর না পড়ে আসরের ওয়াক্তে পৌঁছে যায় তাহলে আগে যোহর কাযা পড়বে, এরপর পড়বে আসর।
(৯) কেউ যদি মসজিদে গিয়ে দেখে আসরের জামাআত চলছে, অথচ তার যোহর পড়া হয় নাই, তাহলে আসরের জামাআতেই শরীক হবে। কিন্তু সে নিয়ত করবে যোহরের নামাযের। এরপর সে আবার আসর পড়বে একাকী। তবু ক্রমধারা ভঙ্গ করা যাবে না। যোহরের আগে আসর পড়া যাবে না। ইমাম ও মুক্তাদীর নিয়ত ভিন্ন ভিন্ন হলেও নামায শুদ্ধ হয়ে যাবে ।
(১০) নফল-সুন্নাতের জামাআতের পেছনে ফরয সালাত এবং ফরয সালাতের জামাআতের পেছনে সুন্নাত নফল সালাত পড়া জায়েয আছে। রাসূল (স.)-এর যানামায় এ ধরনের দৃষ্টান্ত রয়েছে। (১১) একই নামায দু’বারও পড়া যায়। মুয়ায ইবনে জাবাল (রা) মসজিদে নববীতে নামায পড়ে নিজ গোত্রে ফিরে গিয়ে একই নামায আবার পড়েছেন ইমাম হয়ে।(বুখারী)
(১২) একান্ত অপারগতায় ক্রমধারা লঙ্ঘন করা বৈধ। যেমন- পর্ববর্তী সালাত এশা পড়ে নাই, আবার ফজরের সময়ও প্রায় চলে যাচ্ছে- এমতাবস্থায় ফজর পড়েও এশা পড়া যাবে।