প্রথমত: ফরজ সালাত:
(ক) নৌকা, লঞ্চ, জাহাজ ও রেলগাড়ী ইত্যাকার-
(১) বাহনের চড়ে সালাত আদায় জায়েয,
(২) সুযোগ ও ক্ষমতা থাকলে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করবে,
(৩) সম্ভব হলে জামাআতে আদায় করবে,
(৪) দাঁড়ানো সম্ভব হলে ফরজ সালাত সেখানে বসে আদায় করলে হবে না,
(৫) বাহনেও কিবলামুখী হয়ে ফরজ সালাত আদায় করবে, বাহন এদিক-ওদিক ঘুরে গেলে সম্ভব হলে কিবলামুখী হওয়ার চেষ্টা করবে।
(খ) উড়োজাহাজে
(৬) সেখানেও দাঁড়িয়েই সালাত আদায় করবে, দাঁড়ানো সম্ভব না হলে বিমানবন্দরে পৌছে আদায় করবে। আর ওয়াক্ত শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে অপারগরায় বসেই আদায় করবে। অথবা বিমান ছাড়ার আগে ঐ বিমান বন্দরেই অগ্রীম জমা করে নেবে। যেমন যোহরের সাথে আসর বা মাগরিবের সাথে এশা। কিন্তু প্রথমটার ওয়াক্ত হওয়ার আগে নয়।
(৭) যদি উড়োজাহাজ আকাশে থাকা অবস্থায় সালাতের সময় হয়ে যায়, আর অবতরণের পূর্বেই সময় শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে উড়োজাহাজেই সালাত আদায় করে নেবে। পারলে দাঁড়িয়ে, না পারলে বসে।
(গ) বাস বা টেক্সিতে:
(৮) যদি গাড়িটা বড় হয় দাঁড়িয়ে ফরজ আদায় করার মতো হয় তাহলে পূর্ববর্তী বাহনগুলোর মত এর ভিতরই পড়বে কিবলা ঠিক রেখে।
(৯) আর যদি গাড়িতে দাড়িয়ে পড়া সম্ভব না হয় তাহলে গাড়ি থেকে নেমে সালাত আদায় করবে। আর তাও সম্ভব না হলে, সময়ও শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে উযর হিসেবে বসে সালাত আদায় করতে পারে।
(ঘ) ঘোড়া, গাধা, উট, গরু বা মহিষে আরোহণ অবস্থায়:
(১০) এগুলো থেকে নেমে ফরজ সালাত আদায় করবে।
(১১) যদি মাটি কর্দমাক্ত থাকে তাহলে এগুলোর পিঠে আরোহণ অবস্থায় অথবা গরু-মহিষের গাড়িতে থেকেই সালাত আদায় করতে পারবে। সম্ভব হলে সকল অবস্থায়ই কিবলা ঠিক রাখার চেষ্টা করবে। তাছাড়া নামলে সফর সঙ্গীদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে, নিজের কোন প্রকার নিরাপত্তাহীনতার ভয় বা শত্রুর ভয় থাকলে অথবা, নামলে আবার আরোহণ করতে না পারা এ ধরনের উযরের কারণে ঐসব প্রাণীর উপর আরোহণ অবস্থায়ই ফরজ সালাত আদায় করতে পারবে। তবে কিবলা ঠিক রাখার জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করবে।
(১২) আরোহণে থেকেই রুকু সিজদা করবে। তবে রুকুর তুলনায় সিজদাতে মাথা একটু বেশি নুয়াবে।
দ্বিতীয়ত : নফল সালাত
(১৩) নৌকা, জাহাজ, বাস, টেক্সি, রেল, উড়োজাহাজ ও গরু-মহিষসহ সকল প্রকার বাহনের উপর নফল সালাত আদায় করা জায়েয। রাসূলুল্লাহ (স.) উটের পিঠে চড়ে বিতরের সালাত আদায় করেছেন। (বুখারী: ৯৯১)।
(১৪) বাহনে সুন্নাত-নফল আদায়ের শুরুতে তাকবীরে তাহরীমার সময় কিবলা ঠিক করে নেওয়া উত্তম। বাহনকে প্রথমে কিবলামুখী করে সালাত শুরু করবে, এরপর বাহন যেদিকে চলতে থাকে সেদিকে ফিরেই বাকি সালাত আদায় করতে পারবে। (আবু দাউদ: ১২২৫)