(ক) ইমামের জন্য অপেক্ষা করা। তার একটু দেরি হলে ধৈর্যহারা না হওয়া। তার অনুমতি ছাড়া তার জায়গায় অন্য কেউ ইমামতি না করা (মুসলিম)। খুব বেশি দেরি হলে জামাত শুরু করা যেতে পারে।
(খ) ইমামের পেছনে ইকতিদা করছেন, মনে মনে এ নিয়ত করবে। তবে ‘ইকতাদাইতু বিহাযাল ইমাম মুখে এরুপ বলা সঙ্গত নয়; বরং বিদআত।
(গ) ইকামাত হওয়ার সাথে সাথে সাথে দাঁড়িয়ে যাওয়া। কেননা, তাকবীরে উলা অর্থাৎ প্রথম তাকবীর পাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। তাছাড়া ফরজ সালাতের ইকামত হলে সুন্নাত পড়তে রাসূলুল্লাহ (স) নিষেধ করেছেন। (মুসলিম, নাসাঈ: ৮৬৮)।
(ঘ) নিজ দায়িত্বে কাতার সোজা করা, আর এজন্য দাগের মধ্যে পায়ের গোড়ালি রাখলে ভালো হয়; পায়ের আঙুলের মাথা নয়। কেননা, কাতার সোজা করা ওয়াজিব।
(ঙ) কাতারের মধ্যকার ফাঁকা জায়গা বন্ধ করা, এজন্য পরস্পর পা ও বাহু একে-অপরের সাথে মিলিয়ে একটু চেপে চেপে দাঁড়ানো। তা না হলে ফাকা জায়গায় ভেড়ার বাচ্চার আকৃতিতে শয়তান এসে দাঁড়ায়।
(চ) সামনের কাতারগুলো আগে পূরণ করা, যে ব্যক্তি কাতারে মিলিয়ে দাঁড়ায় আল্লাহ তার সাথে সম্পর্ক রাখেন। আর যে মিলিয়ে দাড়ায় না আল্লাহ তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন।(আবু দাউদ: ৬৬৬) নিয়ম মান্যকারীর উপর আল্লাহ রহমত বর্ষণ করেন ফেরেশতারা দু'আ করে এবং তার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি পায় (সহীহুল জামে: ১৮৪৩)। তার জন্য জান্নাতে আল্লাহ একটি গৃহ নির্মাণ করেন। (সহীহ তাবগীব: ৫০২)
(ছ) দুই কাতারের মাঝে ব্যবধান বেশি না রাখা।
(জ) দুই থামের মধ্যে না দাঁড়ানো (আবু দাউদ: ৬৭৩)। রাসূল (স)-এর যামানায় দুই পিলারের মাঝে কেউ দাঁড়ালে তাকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হতো (ইবনে মাজাহ ১০০২)। কারণ এতে কাতারটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তবে লোক সমাগম খুব বেশি হলে উযরের কারণে তখন তা বৈধ।
(ঝ) আগের কাতারে দাঁড়ানোর প্রাণান্তকর চেষ্টায় থাকা, এ জন্য আগে এসে জায়গা দখল করে নেওয়া। পরে এসে মানুষ ডিঙিয়ে গিয়ে নয়। ইবনুল কাইয়্যিম (রহ) বলেন, যারা প্রতিনিয়তই সালাতে পেছনে এসে দাঁড়ায় তাদের কিয়ামতের মাঠে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যাবে।
(ঞ) ইমামের অনুসরণ করা। রুকু, সিজদা, বসা বা উঠা কোনটাই ইমামের আগে আগে করা যাবে না। স্বেচ্ছায় করলে সালাত বাতিল হয়ে যাবে। এমনকি ইমামের সাথেও না, বরং ইমামের পরে পরে। কেউ যদি (রুকূ বা সিজদা থেকে) ইমামের আগে মাথা উঠায় তাহলে তার চেহারা বা তার আকৃতি গাধার আকৃতির মতো হয়ে যাবে।(বুখারী: ৬৯১)। সব কাজ ইমামের পরে পরে করবে। সাহাবী বারাআ ইবনে আযিব (রা) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (স.)-এর পিছনে সালাত আদায় করতাম। তিনি সামি'আলাহুলিমান হামিদা বলতেন, তখন আমাদের কেউই সিজদা করার জন্য আমরা পিঠ ঝুকাতাম না। যতক্ষণ পর্যন্ত তার কপাল মাটিতে গিয়ে স্পর্শ না করত। এরপর আমরা সিজদার জন্য মাথা ঝুকাতাম।(বুখারী: ৬৯০)
(ট) ইমাম দ্বিতীয় সালাম ফেরানোর পর মুক্তাদী প্রথম সালাম ফেরাবে। অতঃপর দ্বিতীয় সালাম ফেরাবে। ইমামের সাথে সাথে সালাম ফেরানো বৈধ নয়। যারা মক্কায় ও মদীনায় নামায পড়েছেন তারা মুক্তাদীর সালাম ফেরানোর বিশুদ্ধ পদ্ধতি দেখেছেন।
(ঠ) এক মাযহাবের ইমামের পেছনে অন্য মাযহাবের মুক্তাদীদের নামায শুদ্ধ। অনুরূপভাবে আহলে হাদীসের পেছনে মাযহাব অনুসারীদের এবং মাযহাব অনুসারীদের পেছনে আহলে হাদীসের নামাযও শুদ্ধ।