রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর মৃত্যুতে শোকাতুর কন্যা ফাতেমা বলে ওঠেন,
يَا أَبَتَاهْ، أَجَابَ رَبًّا دَعَاهُ، يَا أَبَتَاهْ مَنْ جَنَّةُ الْفِرْدَوْسِ مَأْوَاهُ، يَا أَبَتَاهْ إِلَى جِبْرِيْلَ نَنْعَاهْ فَلَمَّا دُفِنَ قَالَتْ فَاطِمَةُ، عَلَيْهَا السَّلاَمُ، يَا أَنَسُ، أَطَابَتْ أَنْفُسُكُمْ أَنْ تَحْثُوا عَلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم التُّرَابَ- رواه البخارىُّ-
‘হায় আববা! যিনি প্রভুর ডাকে সাড়া দিয়েছেন। হায় আববা! জান্নাতুল ফেরদৌসে যার ঠিকানা। হায় আববা! জিব্রীলকে আমরা তাঁর মৃত্যু সংবাদ জানাচ্ছি’। অতঃপর দাফন হয়ে গেলে তিনি বলেন, হে আনাস! রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর উপর মাটি ফেলে তোমাদের অন্তর কি খুশী হয়েছে’?[1]
সাধারণভাবে ছাহাবীগণের অবস্থা ছিল এই যে, তাঁরা তাঁদের প্রাণপ্রিয় রাসূল (ছাঃ)-এর বিয়োগব্যথা সহ্য করতে পারছিলেন না। অনেকে দিগ্বিদিক জ্ঞানহারা হয়ে এদিক-সেদিক ছুটাছুটি করতে থাকেন। অনেকে জঙ্গলে চলে যান। ওমর ফারূক (রাঃ) হতবুদ্ধি হয়ে বলতে থাকেন, কিছু মুনাফিক লোক ধারণা করে যে, রাসূল (ছাঃ)-এর মৃত্যু হয়েছে। অথচ নিশ্চয়ই তিনি মৃত্যুবরণ করেননি। বরং স্বীয় প্রতিপালকের নিকটে গমন করেছেন। যেমন মূসা (আঃ) নিজ সম্প্রদায় থেকে ৪০ দিন অনুপস্থিত থাকার পর পুনরায় ফিরে এসেছিলেন’ (ইবনু হিশাম ২/৬৫৫)। তিনি বলেন,وَلَيَبْعَثَنَّهُ اللهُ فَلَيَقْطَعَنَّ أَيْدِىَ رِجَالٍ وَأَرْجُلَهُمْ ‘অবশ্যই আল্লাহ তাঁকে ফিরিয়ে দিবেন। অতঃপর তিনি ঐসব লোকদের হাত-পা কেটে দিবেন’ (বুখারী হা/৩৬৬৭)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেন,وَاللهِ مَا مَاتَ رَسُولُ اللهِ- صلى الله عليه وسلم- وَلاَ يَمُوتُ حَتَّى يَقْطَعَ أَيْدِىَ أُنَاسٍ مِنَ الْمُنَافِقِينَ كَثِيرٍ وَأَرْجُلَهُمْ ‘আল্লাহর কসম! রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মরেননি এবং মরবেনও না, যতক্ষণ না তিনি মুনাফিকদের বহু লোকের হাত-পা কেটে দেন’ (ইবনু মাজাহ হা/১৬২৭, হাদীছ ছহীহ)।
উল্লেখ্য যে, আনাস বিন মালেক (রাঃ) ছিলেন রাসূল (ছাঃ)-এর দীর্ঘ ১০ বছরের প্রিয়তম গোলাম’ (আবুদাঊদ হা/৪৭৭৪; আহমাদ হা/১৩৩৪১)। এখানে প্রসিদ্ধ আছে যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর মৃত্যুর পরে কন্যা ফাতেমা নিম্নোক্ত শোকগাথা পাঠ করেছিলেন।-
صُبَّتْ عَلَيَّ مَصَائِبُ لَوْ أنَّهَا + صُبَّتْ عَلَى الْأَيَّامِ عُدْنَ لَيَالِيَا
مَاذَا عَلَى مَنْ شَمَّ تُرْبَة َ أَحْمَدٍ + أَنْ لاَ يَشَمَّ مُدَى الزَّمَانِ غَوَالِيَا
(১) ‘আমার উপরে এমন বিপদ আপতিত হয়েছে, যদি তা দিনসমূহের উপরে পড়ত, তবে সেগুলি রাতে পরিণত হয়ে যেত’। (২) ‘যে কেউ আহমাদের কবরের মাটি শুঁকবে, তার উপরে ওয়াজিব হবে যে, সে জীবনে আর কোন সুগন্ধি শুঁকবে না’। যাহাবী বলেন, এটি ‘ছহীহ নয়’ (لاَ يَصِحُّ) (যাহাবী, সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ৩/৪২৬)।