নবীদের কাহিনী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) - মাদানী জীবন ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব ১ টি
আবু বকরের ইমামতি শুরু (بدء إمامة أبى بكرـــــللصلاة)

এশার ছালাতের জন্য আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) তিনবার ওযূ করেন ও তিনবার অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। অবশেষে ব্যর্থ হয়ে আবুবকরকে ইমামতি করার নির্দেশ পাঠান। এরপর থেকে রাসূল (ছাঃ)-এর মৃত্যু পর্যন্ত আবুবকর (রাঃ) একটানা ১৭ ওয়াক্ত ছালাতের ইমামতি করেন।[1] লোকেরা খারাপ ধারণা করবে মনে করে আয়েশা (রাঃ) তিন থেকে চারবার তার পিতার ইমামতির ব্যাপারে আপত্তি তুলে অন্যকে ইমামতির দায়িত্ব প্রদানের অনুরোধ করেন। কিন্তু আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) উক্ত অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে বলেন,إِنَّكُنَّ صَوَاحِبُ يُوْسُفَ، مُرُوْا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ ‘তোমরা ইউসুফের সহচরীদের মত হয়ে গেছ। আবুবকরকে বলে দাও যেন সে ছালাতে ইমামতি করে’।[2] অর্থাৎ যুলায়খা ও তার সহচরী মহিলারা যেভাবে ইউসুফকে অন্যায় কাজে প্রলুব্ধ করতে চেয়েছিল, তোমরাও তেমনি আমাকে আবুবকরকে বাদ দিয়ে অন্যকে ইমামতি করার মত অন্যায় নির্দেশ দানে প্ররোচিত করতে চাও? এর মাধ্যমে ভবিষ্যৎ খেলাফতের জন্য আবুবকরের প্রতি ইঙ্গিত ছিল। হযরত ওমর (রাঃ) সেটা বুঝতে পেরেই সম্ভবতঃ তাঁর নাম খলীফা হিসাবে প্রস্তাব করেছিলেন এবং সাথে সাথেই সর্বসম্মতভাবে তা গৃহীত ও অভিনন্দিত হয়। তাছাড়া তাঁর তুলনীয় ব্যক্তিত্ব উম্মতের মধ্যে তখনও কেউ ছিল না। ভবিষ্যতেও হবে না।

[1]. এই ১৭ ওয়াক্ত ছালাতের কোন ক্বাযা বা কাফফারা রাসূল (ছাঃ)-এর পক্ষ থেকে কেউ আদায় করেননি। কারণ এটি দৈহিক ইবাদত। যা নিজেকেই আদায় করতে হয়। অন্যের উপর তা বর্তায় না। ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, لاَ يَصُومُ أَحَدٌ عَنْ أَحَدٍ وَلاَ يُصَلِّي أَحَدٌ عَنْ أَحَدٍ ‘একজনের ছিয়াম বা ছালাত অন্যজনে আদায় করতে পারে না’ (মুওয়াত্ত্বা হা/১০৬৯; সনদ মুনক্বাতে‘ বা ছিন্নসূত্র। কিন্তু বায়হাক্বীতে এটি সংযুক্ত সনদে এসেছে (বায়হাক্বী হা/৮০০৪, ৪/২৫৪)। যার সনদ ছহীহ। আলবানী, হিদায়াতুর রুওয়াত শরহ মিশকাত হা/১৯৭৭ টীকা-২, ২/৩৩৬; মিশকাত হা/২০৩৫)। অতএব জানাযাকালে মৃতের ক্বাযা ছিয়াম ও ছালাতের কাফফারা স্বরূপ টাকা-পয়সা নেওয়া বা দান করা সম্পূর্ণরূপে একটি বিদ‘আতী প্রথা মাত্র।

[2]. বুখারী হা/৬৭৯ ‘আযান’ অধ্যায়-১০, অনুচ্ছেদ-৪৬; মিশকাত হা/১১৪০।