ইয়ামন থেকে ১০ম হিজরীর শা‘বান মাসে দশ সদস্যের এই প্রতিনিধি দলটি মদীনায় আসে। তারা এসে বলেন, আমরা ইতিপূর্বে ঈমান এনেছি। কিন্তু দীর্ঘ পথ সফর করে আমাদের মদীনায় আসার একটাই কারণ প্রিয় রাসূল (ছাঃ)-এর সাক্ষাৎ লাভ করা।
অতঃপর রাসূল (ছাঃ) তাদের পূর্বের দেব-প্রতিমা ‘আম্মু আনাস’(عَمُّ أَنَسٍ) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তারা বলল, আল্লাহর হাযার শোকর! আপনার শিক্ষা আমাদেরকে ঐ ফিৎনা থেকে রক্ষা করেছে। কিছু বুড়া-বুড়ীই কেবল এখনো ঐ মূর্তির পূজা করে থাকে। এবার ফিরে গিয়ে ইনশাআল্লাহ আমরা মূর্তিটা গুঁড়িয়ে দেব। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, তোমরা ঐ মূর্তিপূজার দু’একটি ঘটনা শোনাও তো’। তারা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! একদিন আমরা একশ’ বলদ একত্রিত করি এবং সবগুলি একই দিনে ‘আম্মে আনাসের নামে কুরবানী করি। অতঃপর সেগুলি সব জন্তু-জানোয়ারে খেয়ে যায়। অথচ আমরা নিজেরাই ছিলাম অভাবী এবং মাংসের মুখাপেক্ষী’।
তারা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! গবাদিপশু এবং উৎপাদিত খাদ্যশস্য হ’তে আমরা ‘আম্মে আনাসের জন্য নির্ধারিত অংশ বের করে রাখতাম। উৎকৃষ্ট ফসলের অংশটি ‘আম্মে আনাসের জন্য এবং নিকৃষ্ট অংশটি আল্লাহর জন্য নির্ধারণ করতাম। আর ফসল খারাপ হলে আল্লাহর অংশ দিতাম না। বরং আল্লাহর অংশটা ‘আম্মে আনাসের নামে উৎসর্গ করতাম। কিন্তু ‘আম্মে আনাসের অংশ কখনোই বাদ যেত না’।
অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদেরকে দ্বীনের ফরয-ওয়াজিবাত শিক্ষা দিলেন এবং বিশেষ করে তাদেরকে নিম্নের বিষয়গুলি শিখালেন।-
(১) অঙ্গীকার পূর্ণ করা (২) আমানত রক্ষা করা (৩) প্রতিবেশীদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা (৪) কারু প্রতি যুলুম না করা। কেননা যুলুম ক্বিয়ামতের দিন ঘন অন্ধকার হয়ে দেখা দিবে(الظُّلْمُ ظُلُمَاتٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ)।[1]
[শিক্ষণীয় : শিরকী আক্বীদা দুনিয়া ও আখেরাত দু’টিই ধ্বংস করে। এযুগের কবরপূজারী ও অন্যান্য পূজারীদের দিকে তাকালেই এর দৃষ্টান্ত মিলবে। যারা ছবি-মূর্তি-স্মৃতিসৌধ শহীদ মিনার ও কবরে লাখ লাখ টাকা ঢালে। কিন্তু একজন অসহায় মানুষকে কিছুই দিতে চায় না।]