কুযা‘আহ (قُضَاعَة) গোত্রের শাখা বনু সা‘দ হুযায়েম প্রতিনিধি দল আবু নু‘মানের নেতৃত্বে রাসূল (ছাঃ)-এর দরবারে আসে। আবু নু‘মান বলেন, এ সময় মানুষ দু’দলে বিভক্ত ছিল। একদল আগ্রহের সাথে ইসলামে প্রবেশকারী ছিল। অন্যদল তরবারীর ভয়ে ভীত ছিল। অতঃপর আমরা মদীনায় প্রবেশ করলাম। তখন রাসূল (ছাঃ) মসজিদে একটি জানাযার ছালাত পড়াচ্ছিলেন। আমরা তাতে যোগ দিলাম না। ছালাত শেষে রাসূল (ছাঃ) আমাদেরকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কারা? বললাম, বনু সা‘দ হুযায়েমের লোক। তিনি বললেন, তোমরা কি মুসলমান? বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহ’লে তোমরা কেন তোমাদের ভাইয়ের জানাযার ছালাতে যোগ দিলে না? বললাম, আমরা ধারণা করেছিলাম, যতক্ষণ আমরা আপনার হাতে বায়‘আত না করব, ততক্ষণ উক্ত ছালাত আদায় করা আমাদের জন্য জায়েয হবে না। তিনি বললেন, যেখানেই তোমরা মুসলমান হও না কেন, তোমরা মুসলমান’। অতঃপর আমরা রাসূল (ছাঃ)-এর হাতে ইসলামের বায়‘আত করলাম। বায়‘আত শেষে আমরা আমাদের মাল-সামানের কাছে ফিরে এলাম। যেগুলি আমাদের কাফেলার সর্বকনিষ্ঠ একটি ছেলের দায়িত্বে ছিল। ইতিমধ্যে রাসূল (ছাঃ) আমাদের সন্ধানে লোক পাঠালেন। অতঃপর আমাদেরকে তাঁর নিকটে নিয়ে যাওয়া হ’ল। তখন আমাদের ঐ ছেলেটি তাঁর দিকে এগিয়ে গেল ও বায়‘আত করল। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! ছেলেটি আমাদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ এবং আমাদের খাদেম। জবাবে রাসূল (ছাঃ) বললেন,أَصْغَرُ الْقَوْمِ خَادِمُهُمْ بَارَكَ اللهُ عَلَيْهِ ‘ছোটরাই কওমের খাদেম হয়। আল্লাহ তার উপরে বরকত দান করুন’!
আবু নু‘মান বলেন, আল্লাহর কসম! সে আমাদের মধ্যে উত্তম ছিল এবং রাসূল (ছাঃ)-এর দো‘আর বরকতে সে আমাদের মধ্যে কুরআনের সর্বোত্তম পাঠক ছিল। অতঃপর রাসূল (ছাঃ) তাকে আমাদের উপর ‘আমীর’ নিযুক্ত করলেন। অতঃপর যখন আমরা ফিরে আসতে চাইলাম, তখন রাসূল (ছাঃ) বেলালকে নির্দেশ দিলেন এবং আমাদের প্রত্যেককে বহু মূল্য রৌপ্যমুদ্রা উপহার দিলেন। আমরা ফিরে এসে আমাদের কওমকে দাওয়াত দিলাম। ফলে আল্লাহপাক তাদের সবাইকে ইসলাম কবুলের তাওফীক দিলেন’ (যাদুল মা‘আদ ৩/৫৬৯-৭০)।
[শিক্ষণীয় : (১) নিখাদ আনুগত্য থাকলে আমীরের হাতে বায়‘আত না করলেও চলবে। পরে সুযোগ মত বায়‘আত করবে। (২) কুরআনের পাঠক ও জ্ঞানী হওয়াই ইসলামী নেতৃত্বের মাপকাঠি। (৩) ছোটরা বড়দের উপর আমীর হ’তে পারে। (৪) দাওয়াতের মাধ্যমেই ইসলামের প্রসার ঘটে থাকে।]