নবীদের কাহিনী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) - মাদানী জীবন ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব ১ টি
রাসূল (ছাঃ)-এর হাজূনে অবতরণ (نزول الرسول صـ بحجون فى مكة)

এদিন তিনি তাঁর নিজ পিতৃগৃহে অবতরণ করেননি। বরং তাঁর জন্য হাজূনে (حَجُون) প্রস্ত্ততকৃত তাঁবুতে অবতরণ করেন।[1] এই স্থানেই কুরায়েশগণ বনু হাশেম ও মুসলমানদের সাথে বয়কটচুক্তি করেছিল, যা তিন বছর স্থায়ী হয়। উসামা বিন যায়েদ তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, বাড়িতে প্রবেশ করবেন কি? জবাবে রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘আক্বীল আমাদের জন্য কোন ঘর-বাড়ি ছেড়ে গেছেন কি?[2] অর্থাৎ ‘আক্বীল ও তার বড় ভাই ত্বালিব, যারা তখন কাফের ছিলেন। বদর যুদ্ধের বছর কাফের অবস্থায় ত্বালিবের মৃত্যুর পর ‘আক্বীল তাদের বাড়ি-ঘর সব বেঁচে দিয়েছিলেন। আর আলী ও জা‘ফর ইসলামের কারণে আবু ত্বালিবের অংশীদার হননি। এর দ্বারা তিনি বুঝাতে চেয়েছিলেন যে, মুসলিম কোন কাফিরের উত্তরাধিকারী হয় না।[3]

[1]. সীরাহ ছহীহাহ ২/৪৮২; মুসনাদ আবু ইয়া‘লা হা/৫৯৫৪; বুখারী হা/৩৫৭; মুসলিম হা/৩৩৬ (৮২)।

[2]. মুসলিম হা/১৩৫১; বুখারী হা/১৫৮৮।

[3]. ফাৎহুল বারী হা/১৫৮৮-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য। উল্লেখ্য যে, ২য় হিজরীতে বদর যুদ্ধ থেকে ফিরে সেই বছর কাফের অবস্থায় ত্বালিবের মৃত্যু হ’লে আক্বীল সব সম্পত্তির মালিক হন। পরে তিনি সবকিছু বেঁচে দেন। আক্বীল ৮ম হিজরীতে মক্কা বিজয়ের বছর মুসলমান হন। কেউ বলেছেন, ৬ষ্ঠ হিজরীতে হোদায়বিয়ার সন্ধির পর। তিনি ৮ম হিজরীর প্রথম দিকে মদীনায় হিজরত করেন। পরে মুতার যুদ্ধে যোগদান করেন। তিনি কুরায়েশদের চারজন প্রসিদ্ধ বিবাদ মীমাংসাকারী ব্যক্তির অন্যতম ছিলেন। বংশবিদ্যা বিষয়ে অভিজ্ঞ ছিলেন। তিনি (১০১ বছরের) দীর্ঘ বয়সে ইয়াযীদ বিন মু‘আবিয়ার শাসনকালের (৬০-৬৪ হি.) প্রথম দিকে মৃত্যুবরণ করেন (আল-ইছাবাহ, ‘আক্বীল ক্রমিক ৫৬৩২)।