নবীদের কাহিনী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) - মাদানী জীবন ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব ১ টি

এ সময় আয়াত নাযিল হ’ল -إِذْ تَسْتَغِيْثُوْنَ رَبَّكُمْ فَاسْتَجَابَ لَكُمْ أَنِّيْ مُمِدُّكُمْ بِأَلْفٍ مِّنَ الْمَلآئِكَةِ مُرْدِفِيْنَ ‘যখন তোমরা তোমাদের পালনকর্তার নিকটে কাতর প্রার্থনা করছিলে, তখন তিনি তোমাদের দো‘আ কবুল করলেন এই মর্মে যে, আমি তোমাদেরকে সাহায্য করব এক হাযার ফেরেশতা দিয়ে, যারা ধারাবাহিকভাবে অবতরণ করবে’ (আনফাল ৮/৯)।[1] ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, বদরের যুদ্ধে ব্যতীত অন্য কোন যুদ্ধে ফেরেশতারা যোগদান করেননি (ইবনু কাছীর)। উল্লেখ্য যে, সূরা আনফাল ৯ আয়াতে ‘এক হাযার’, আলে ইমরান ১২৪ ও ১২৫ আয়াতে যথাক্রমে ‘তিন হাযার’ ও ‘পাঁচ হাযার’ ফেরেশতা অবতরণের কথা বলা হয়েছে’। এর ব্যাখ্যায় ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, ‘এক হাযার’ সংখ্যাটি তিন হাযার বা তার অধিক সংখ্যাকে নিষেধ করে না। কেননা উক্ত আয়াতের শেষে مُرْدِفِيْنَ শব্দ এসেছে। যার অর্থ ‘ধারাবাহিকভাবে আগত’। অতএব আল্লাহর হুকুমে যত হাযার প্রয়োজন, তত হাযার ফেরেশতা নাযিল হবে’।[2] বস্ত্ততঃ সংখ্যায় বেশী বলার উদ্দেশ্য মুসলিম বাহিনীকে অধিক উৎসাহিত করা এবং বিজয়ের ব্যাপারে নিশ্চিন্ত করা।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ছালাত অবস্থায় এক সময় সামান্য তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। অতঃপর তিনি জেগে উঠে বললেন, أَبْشِرْ يَا أَبَا بَكْرٍ أَتَاكَ نَصْرُ اللهِ، هَذَا جِبْرِيلُ آخِذٌ بِعِنَانِ فَرَسِهِ يَقُودُهُ عَلَى ثَنَايَاهُ النَّقْعُ ‘সুসংবাদ গ্রহণ কর হে আবুবকর! তোমার কাছে আল্লাহর সাহায্য এসে গেছে। এই যে জিব্রীল, তার ঘোড়ার লাগাম ধরে ধূলি উড়িয়ে এগিয়ে আসছেন’।[3]

ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেন,هَذَا جِبْرِيلُ آخِذٌ بِرَأْسِ فَرَسِهِ عَلَيْهِ أَدَاةُ الْحَرْبِ ‘ঐ যে জিব্রীল যুদ্ধসাজে সজ্জিত হয়ে তার ঘোড়ার লাগাম ধরে দাঁড়িয়ে আছেন’। অতঃপর তিনি তাঁবুর বাইরে এসে বললেন,سَيُهْزَمُ الْجَمْعُ وَيُوَلُّوْنَ الدُّبُرَ (‘সত্বর দলটি পরাজিত হবে এবং পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে পালাবে’-ক্বামার ৫৪/৪৫)।[4] অন্য বর্ণনায় এসেছে যে, তিনি বাইরে এসে আঙ্গুলের ইশারা করে করে বলেন, هَذَا مَصْرَعُ فُلاَنٍ ‘এটি অমুকের বধ্যভূমি’। এটি অমুকের, ওটি অমুকের’। রাবী আনাস (রাঃ) বলেন, তাদের কেউ ঐ স্থান অতিক্রম করতে পারেনি, যেখানে যেখানে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) ইশারা করেছিলেন।[5]

[1]. তাফসীর সূরা আনফাল ৯ আয়াত; বুখারী হা/৪৮৭৫; তিরমিযী হা/৩০৮১, সনদ হাসান।

[2]. ইবনু কাছীর, তাফসীর সূরা আলে ইমরান ১২৫ আয়াত।

[3]. আলবানী, ফিক্বহুস সীরাহ ২২৫ পৃঃ, সনদ হাসান; ইবনু হিশাম ১/৬২৬-২৭, সনদ ‘মুরসাল’ (তাহকীক ইবনু হিশাম ক্রমিক ৭৪৭)।

[4]. ইবনু হিশাম ১/৬২৭; বুখারী হা/৩৯৫৩, ৩৯৯৫; মিশকাত হা/৫৮৭২-৭৩ ‘ফাযায়েল ও শামায়েল’ অধ্যায়, মু‘জেযা অনুচ্ছেদ-৭ ; সীরাহ ছহীহাহ ২/৩৬৫ পৃঃ।

[5]. মুসলিম হা/১৭৭৯ (৮৩); মিশকাত হা/৫৮৭১।