(৬) আবু জাহলের অভ্যাস ছিল এই যে,
(ক) যখন কোন অভিজাত বংশের লোক ইসলাম কবুল করতেন, তখন সে গিয়ে তাকে গালি-গালাজ করত ও তার ধন-সম্পদের ক্ষতি সাধন করবে বলে হুমকি দিত। নিজ আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে গরীব ও দুর্বল কেউ মুসলমান হয়েছে জানতে পারলে তাকে ধরে নির্দয়ভাবে পিটাতো এবং অন্যকে মারার জন্য প্ররোচিত করত। কোন ব্যবসায়ী ইসলাম কবুল করলে তাকে গিয়ে ধমক দিয়ে বলত, তোমার ব্যবসা বন্ধ করে দেব এবং তোমার মাল-সম্পদ ধ্বংস করে দেব’ (ইবনু হিশাম ১/৩২০)। এইভাবে সম্মানিত ব্যক্তিকে ইসলাম কবুলের অপরাধে অসম্মানিত করা মক্কার নেতাদের নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। আজকের সভ্য যুগেও যা চলছে বরং আরও জোরে-শোরে।
(খ) পবিত্র কুরআনেعَلَيْهَا تِسْعَةَ عَشَرَ ‘জাহান্নামের প্রহরী হ’ল ১৯জন ফেরেশতা’ (মুদ্দাছছির ৭৪/৩০) নাযিল হ’লে আবু জাহ্ল অহংকার বশে তার লোকদের বলে, ‘হে কুরায়েশ যুবকেরা! তোমাদের ১০জনে কি জাহান্নামের ১জন ফেরেশতাকে কাবু করতে পারবে না? (ইবনু কাছীর)। কেননা মুহাম্মাদ বলে, এরা তোমাদেরকে জাহান্নামে আটকে রেখে নির্যাতন করবে। অথচ তোমরা হ’লে সংখ্যায় ও শক্তিতে অনেক বেশী। তোমরা তাদের একশ’ জনের সমান’ (ইবনু হিশাম ১/৩১৩)। আবু জাহল অত্র আয়াতের ব্যাখ্যা বুঝেনি। অথবা বুঝেও দল ঠিক রাখার জন্য আসল কথা বলেনি। সেকারণ পরবর্তী আয়াতেই আল্লাহ বলে দিয়েছেন যে,
وَمَا جَعَلْنَا أَصْحَابَ النَّارِ إِلاَّ مَلاَئِكَةً وَمَا جَعَلْنَا عِدَّتَهُمْ إِلاَّ فِتْنَةً لِلَّذِيْنَ كَفَرُوْا لِيَسْتَيْقِنَ الَّذِيْنَ أُوْتُوْا الْكِتَابَ وَيَزْدَادَ الَّذِيْنَ آمَنُوْا إِيْمَانًا وَلاَ يَرْتَابَ الَّذِيْنَ أُوْتُوْا الْكِتَابَ وَالْمُؤْمِنُوْنَ وَلِيَقُوْلَ الَّذِيْنَ فِي قُلُوْبِهِمْ مَرَضٌ وَالْكَافِرُوْنَ مَاذَا أَرَادَ اللهُ بِهَذَا مَثَلاً- (مدثر ৩১)-
‘আমরা ফেরেশতাদের এই সংখ্যা নির্ধারণ করেছি কাফেরদের পরীক্ষা করার জন্য। যাতে কিতাবীরা (রাসূলের সত্যতার ব্যাপারে) দৃঢ় বিশ্বাসী হয়, মুমিনদের ঈমান বৃদ্ধি পায় এবং কিতাবীগণ ও মুমিনগণ সন্দেহ পোষণ না করে। আর যাতে যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে (মুনাফিকরা) ও কাফেররা বলে যে, এর (এই সংখ্যা) দ্বারা আল্লাহ কি বুঝাতে চেয়েছেন’? (মুদ্দাছছির ৭৪/৩১)। বর্তমান যুগেও অনেকে আবু জাহলের মত ঊনিশ-এর ব্যাখ্যায় বহু মনগড়া বিষয় উদঘাটন করে ফিৎনায় পড়েছে।[1]