কুরায়েশ নির্মিত চতুষ্কোণ বিশিষ্ট কা‘বা (যার রূপ বর্তমানে রয়েছে), তার দেওয়ালের উচ্চতা প্রায় ১৫ মিটার। উত্তর ও দক্ষিণ দেওয়াল দশ দশ মিটার এবং পূর্ব ও পশ্চিম দেওয়াল বারো বারো মিটার করে প্রশস্ত। ৬টি খাম্বার উপরে নির্মিত ছাদ। মাত্বাফ থেকে দেড় মিটার উচ্চতায় দক্ষিণ-পূর্ব কোণে ‘হাজারে আসওয়াদ’ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে ‘রুকনে ইয়ামানী’ অবস্থিত। দরজার নীচের চৌকাঠ ২ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত (আর-রাহীক্ব পৃঃ ৬২)। অথচ রাসূল (ছাঃ)-এর ইচ্ছা ছিল, হাত্বীমকে অন্তর্ভুক্ত করে মূল ভিতের উপর কা‘বাগৃহ নির্মাণ করা, যা মাটি সমান হবে। যার পূর্ব দরজা দিয়ে মুছল্লী প্রবেশ করবে ও ছালাত শেষে পশ্চিম দরজা দিয়ে বেরিয়ে যাবে। কিন্তু কুরায়েশরা তা না করে অনেক উঁচুতে দরজা নির্মাণ করে। যাতে তাদের ইচ্ছার বাইরে কেউ সেখানে প্রবেশ করতে না পারে’।[1]
খালা আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট এ হাদীছ শোনার পর হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু যুবায়ের (রাঃ) স্বীয় খেলাফতকালে (৬৪-৭৩ হিঃ) ৬৪ হিজরী সনে কা‘বাগৃহ ভেঙ্গে রাসূল (ছাঃ)-এর ইচ্ছানুযায়ী তা পুনর্নির্মাণ করেন। কিন্তু ৭৩ হিজরী সনে তিনি যুদ্ধে নিহত হ’লে উমাইয়া খলীফা আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ানের নির্দেশে গভর্ণর হাজ্জাজ বিন ইউসুফ তা পুনরায় ভেঙ্গে আগের মত হাত্বীমকে বাইরে রেখে নির্মাণ করেন। যা আজও রয়েছে। পরবর্তীতে আববাসীয় খলীফা মাহদী ও হারূণ এটি পুনর্নির্মাণ করে রাসূল (ছাঃ)-এর ইচ্ছা পূরণ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ইমাম মালেক (৯৩-১৭৯ হি.) তাদের বলেন,لاَ تَجْعَلْ كَعْبَةَ اللهِ مَلْعَبَةً لِلْمُلُوْكِ ‘আপনারা কা‘বাগৃহকে রাজা-বাদশাহদের খেল-তামাশার বস্ত্ততে পরিণত করবেন না’।[2] ফলে কা‘বাগৃহ ঐ অবস্থায় রয়ে যায়। ইবরাহীমী ভিতে আজও ফিরে আসেনি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর আকাংখাও পূর্ণ হয়নি।
[2]. ইবনু কাছীর, তাফসীর সূরা বাক্বারাহ ১২৭-২৮ আয়াত; ঐ, আল-বিদায়াহ ৮/২৫৩; সুহায়লী, আর-রাউযুল উনুফ ২/১৭৩।