নবীদের কাহিনী ২৫. হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) - মাক্কী জীবন ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব ১ টি

আবু ত্বালিবের নাম ছিল আব্দু মানাফ। কিন্তু তিনি আবু ত্বালিব নামেই প্রসিদ্ধি লাভ করেন। তাঁর ৪ পুত্র ও ২ কন্যা ছিল : ত্বালিব, ‘আক্বীল, জা‘ফর ও আলী। ত্বালিব ‘আক্বীলের চাইতে দশ বছরের বড় ছিলেন।[1] তাঁর মৃত্যুর অবস্থা জানা যায় না। বাকী সকলেই ছাহাবী ছিলেন। দুই কন্যা উম্মে হানী ও জুমানাহ দু’জনেই ইসলাম কবুল করেন’ (রহমাতুল্লিল ‘আলামীন ২/৭৫-৮৩ পৃঃ)। আব্দুল মুত্ত্বালিবের পরে আবু ত্বালিব বনু হাশিমের নেতা হন। তিনি আমৃত্যু রাসূল (ছাঃ)-এর অকৃত্রিম অভিভাবক ছিলেন। তাঁর আহবানে সাড়া দিয়ে বয়কটকালের তিন বছরসহ সর্বদা বনু মুত্ত্বালিব ও বনু হাশিম রাসূল (ছাঃ)-এর সহযোগী ছিলেন। যদিও আবু ত্বালিব ও অন্য অনেকে ইসলাম কবুল করেন নি।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর আপন চাচাদের মধ্যে তিন ধরনের মানুষ ছিলেন। ১. যারা তাঁর উপরে ঈমান এনেছিলেন ও তাঁর সাথে জিহাদ করেছিলেন। যেমন হামযাহ ও আববাস (রাঃ)। ২. যারা তাঁকে সাহায্য করেছিলেন। কিন্তু জাহেলিয়াতের উপর মৃত্যুবরণ করেন। যেমন আবু ত্বালিব। ৩. যারা শুরু থেকে মৃত্যু অবধি শত্রুতা করেন। যেমন আবু লাহাব। উল্লেখ্য যে, আবু সুফিয়ান ছিলেন বনু ‘আব্দে শামস গোত্রের, আবু জাহল ছিলেন বনু মাখযূম গোত্রের এবং উমাইয়া বিন খালাফ ছিলেন বনু জুমাহ গোত্রের। যদিও সকলেই ছিলেন কুরায়েশ বংশের অন্তর্ভুক্ত এবং সবাই ছিলেন রাসূল (ছাঃ)-এর সম্পর্কীয় চাচা।

[1]. ইবনু সা‘দ ১/৯৭। উল্লেখ্য যে, আলী (রাঃ)-এর বড় ভাই ত্বালিব বিন আবু ত্বালিব বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলেও জনৈক কুরায়েশ নেতার সাথে বাদানুবাদের প্রেক্ষিতে প্রত্যাবর্তনকারীদের সাথে মক্কায় ফিরে যান (ইবনু হিশাম ১/৬১৯)। তিনি বদরের যুদ্ধে বিজয় লাভে রাসূল (ছাঃ)-এর প্রশংসা করে এবং নিহত নেতাদের স্মরণে শোক প্রকাশ করে কবিতা বলেন’ (ইবনু হিশাম ২/২৬)। ইবনু সা‘দ বলেন, অন্যান্যদের সাথে তিনিও বদর যুদ্ধে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। অতঃপর যখন কুরায়েশরা পরাজিত হয়, তখন তাঁকে নিহত বা বন্দীদের মধ্যে পাওয়া যায়নি। তিনি মক্কায়ও ফিরে যাননি। তাঁর কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাঁর কোন সন্তানাদিও ছিল না’ (ইবনু সা‘দ ১/৯৭)। অতএব তিনি ঈমান এনে মৃত্যুবরণ করেছিলেন কি না, তা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না।