(১) জন্মের বৎসরাধিক কাল পরেই মায়ের মৃত্যু (২) অতঃপর ফুফুর কাছে লালন-পালন (৩) ফুফু ও পিতার স্নেহের দ্বন্দ্বে ফুফু কর্তৃক চুরির অপবাদ প্রদান। অতঃপর চুরির শাস্তি স্বরূপ ফুফুর দাসত্ব বরণ (৪) শৈশবে স্বপ্ন দর্শন ও পিতার নিকটে বর্ণনা (৫) পিতৃস্নেহের আধিক্যের কারণে ভ্রাতৃ হিংসায় পতিত হন এবং তাকে হত্যার চক্রান্ত হয় (৬) পরে জঙ্গলে নিয়ে হত্যার বদলে অন্ধকূপে নিক্ষেপ করা হয় (৭) সেখান থেকে প্রসিদ্ধ মতে তিন দিন পরে একটি পথহারা ব্যবসায়ী কাফেলার নিক্ষিপ্ত বালতিতে করে উপরে উঠে আসেন (৮) অতঃপর ভাইদের মাধ্যমে ব্যবসায়ী কাফেলার নিকটে ক্রীতদাস হিসাবে স্বল্পমূল্যে বিক্রি হয়ে যান (৯) অতঃপর ‘আযীযে মিছর’ ক্বিৎফীরের গৃহে ক্রীতদাস হিসাবে পদার্পণ করেন ও পুত্রস্নেহে লালিত-পালিত হন (১০) যৌবনে গৃহস্বামীর স্ত্রী যোলায়খার কু-নযরে পড়েন (১১) অতঃপর সেখান থেকে ব্যভিচার চেষ্টার মিথ্যা অপবাদে কারাগারে নিক্ষিপ্ত হন (১২) প্রসিদ্ধ মতে সাত বছর কারাগারে থাকার পর বাদশাহর স্বপ্ন ব্যাখ্যা দানের অসীলায় বেকসূর খালাস পান এবং তার পূর্বে সম্ভবতঃ জেলখানাতেই তাঁর নবুঅত লাভ হয় (১৩) অতঃপর বাদশাহর নৈকট্যশীল হিসাবে বরিত হন (১৪) এ সময় ক্বিৎফীরের মৃত্যু এবং বাদশাহর উদ্যোগে যুলায়খার সাথে ইউসুফের বিবাহ হয় বলে ইস্রাঈলী বর্ণনায় প্রতিভাত হয়। তবে এতে মতভেদ রয়েছে। (১৫) বাদশাহ ইসলাম কবুল করেন বলে বর্ণিত হয়েছে এবং ইউসুফকে অর্থ মন্ত্রণালয় সহ দেশের পুরা শাসনভার অর্পণ করে তিনি নির্জনবাসী হন (১৬) দুর্ভিক্ষের সাত বছরের শুরুতে কেন‘আন থেকে ইউসুফের সৎ ভাইয়েরা খাদ্যের সন্ধানে মিসরে আসেন এবং তিনি তাদের চিনতে পারেন। দ্বিতীয়বার আসার সময় তিনি বেনিয়ামীনকে সাথে আনতে বলেন (১৭) বেনিয়ামীনকে আনার পর বিদায়ের সময় তার খাদ্য-শস্যের বস্তার মধ্যে ওযনপাত্র রেখে দিয়ে কৌশলে ‘চোর’(?) বানিয়ে তাকে নিজের কাছে আটকে রাখেন (১৮) বেনিয়ামীনকে হারানোর মনোকষ্টে বেদনাহত পিতা ইয়াকূব স্বীয় পুত্র ইউসুফ ও বেনিয়ামীনকে একত্রে পাওয়ার ব্যাপারে আল্লাহর নিকট থেকে বিশেষ জ্ঞান অথবা গোপন অহী লাভ করেন (১৯) ইউসুফ ও বেনিয়ামীনকে খুঁজে আনার জন্য ছেলেদের প্রতি তিনি কড়া নির্দেশ দেন এবং সেমতে তারা পুনরায় মিসর গমন করেন (২০) এই সময় আযীযে মিছরের সঙ্গে সাক্ষাৎ কালে ভাইদের মুখে বৃদ্ধ পিতার ও দুস্থ পরিবারের দুরবস্থার কথা শুনে ব্যথিত ইউসুফ নিজেকে প্রকাশ করে দেন। (২১) তখন ভাইয়েরা তার নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেন (২২) ইউসুফের নির্দেশে ভাইয়েরা কেন‘আনে ফিরে যান এবং ইউসুফের দেওয়া তার ব্যবহৃত জামা তার পরামর্শমতে অন্ধ পিতার চেহারার উপরে রাখার সাথে সাথে তিনি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পান (২৩) অতঃপর ইউসুফের আবেদনক্রমে গোটা ইয়াকূব-পরিবার মিসরে স্থায়ীভাবে হিজরত করে (২৪) মিসরে তাদেরকে রাজকীয় সন্বর্ধনা প্রদান করা হয় এবং প্রসিদ্ধ মতে চল্লিশ বছর পর পিতা ও পুত্রের মিলন হয়। (২৫) অতঃপর পিতা-মাতা ও ১১ ভাই ইউসুফকে সম্মানের সিজদা করেন। (২৬) এভাবে শৈশবে দেখা ইউসুফের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয় এবং একটি করুণ কাহিনীর আনন্দময় সমাপ্তি ঘটে।