১. সমাজের মুষ্টিমেয় নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও শক্তিশালী শ্রেণী সবার আগে শয়তানের পাতানো ফাঁদে পা দেয় ও সমাজকে জাহান্নামের পথে আহবান করে এবং তাদেরকে ধ্বংসের পথে পরিচালনা করে। যেমন কওমে ছামূদ-এর প্রধান নয় কুচক্রী নেতা করেছিল (নামল ২৭/৪৮)।
২. দুর্বল শ্রেণীর লোকেরা সাধারণতঃ অন্যদের আগে আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাসী হয় ও এজন্য যেকোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্ত্তত হয়ে যায়।
৩. অবিশ্বাসীরা মূলতঃ দুনিয়াবী স্বার্থে আল্লাহ প্রেরিত শরী‘আতে বিশ্বাস ও তদনুযায়ী আমল প্রত্যাখ্যান করে এবং নিজেদের কল্পিত শিরকী আক্বীদায় বিশ্বাস ও তদনুযায়ী আমলে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে এবং তারা সর্বদা তাদের বাপ-দাদা ও প্রচলিত প্রথার দোহাই দেয়।
৪. নবী ও সংস্কারকগণ সাধারণতঃ উপদেশদাতা হয়ে থাকেন- শাসক নন।
৫. নবী ও সংস্কারকদের বিরুদ্ধে শাসক ও সমাজ নেতাগণ যুলুম করলে সরাসরি আল্লাহর গযব নেমে আসা অবশ্যম্ভাবী।
৬. মানুষকে বিপথে নেওয়ার জন্য শয়তানের সবচাইতে বড় হাতিয়ার হ’ল নারী ও অর্থ-সম্পদ।
৭. হঠকারী ও পদগর্বী নেতারা সাধারণতঃ চাটুকার ও চক্রান্তকারী হয়ে থাকে ও ঈমানদারগণের বিরুদ্ধে সাময়িকভাবে জয়ী হয়। কিন্তু অবশেষে আল্লাহর কৌশল বিজয়ী হয় এবং কখনো কখনো তারা দুনিয়াতেই আল্লাহর গযবে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়। আর আখেরাতের আযাব হয় তার চাইতে কঠিনতর (ক্বলম ৬৮/৩৩)।
৮. আল্লাহ পাক তাঁর বান্দাকে নে‘মতরাজি দান করেন তাকে পরীক্ষা করার জন্য। শুকরিয়া আদায় করলে সে আরও বেশী পায়। কিন্তু কুফরী করলে সে ধ্বংস হয় এবং উক্ত নে‘মত তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
৯. অহংকারীদের অন্তর শক্ত হয়। তারা এলাহী গযব প্রত্যক্ষ করার পরেও তাকে তাচ্ছিল্য করে। যেমন নয় নেতা ১ম দিন গযবে ধ্বংস হ’লেও অন্যেরা তওবা না করে তাচ্ছিল্য করেছিল। ফলে অবশেষে ৪র্থ দিন তারা সবাই ধ্বংস হয়ে যায়।
১০. আল্লাহ যালেম জনপদকে ধ্বংস করেন অন্যদের শিক্ষা গ্রহণের জন্য।
১১. আল্লাহ সংশোধনকামী জনপদকে কখনোই ধ্বংস করেন না।
১২. কখনো মাত্র একজন বা দু’জনের কারণে গোটা সমাজ ধ্বংস হয়ে যায়। ছালেহ (আঃ)-এর উষ্ট্রী হত্যাকারী ছিল মাত্র দু’জন। অতএব মুষ্টিমেয় কুচক্রীদের বিরুদ্ধে বৃহত্তর সমাজকে সদা সতর্ক থাকতে হয়।
১৩. কুচক্রীদের কৌশল আল্লাহ ব্যর্থ করে দেন। কিন্তু তারা বুঝতে পারে না। যেমন ছামূদ কওমের নেতারা বুঝতে না পেরে অযথা দম্ভ করেছিল (নামল ২৭/৫০-৫১)।
১৪. আল্লাহ মানুষকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার জন্যই দুনিয়াতে ছোট-খাট শাস্তির আস্বাদন করিয়ে থাকেন ও তাদেরকে ভয় দেখান (ইসরা ১৭/৫৯; সাজদাহ ৩২/২১)।
১৫. সত্য ও মিথ্যার দ্বন্দ্বে অবশেষে সত্য সেবীদেরই জয় হয়। যেমন হযরত ছালেহ (আঃ) ও তাঁর ঈমানদার দুর্বল শ্রেণীর লোকেরা এলাহী গযব থেকে নাজাত পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন ও মিথ্যার পূজারী শক্তিশালীরা ধ্বংস হয়েছিল।