১। আল্লাহ পাক বলেন,
وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ تَعَالَوْا إِلَىٰ مَا أَنزَلَ اللَّهُ وَإِلَى الرَّسُولِ قَالُوا حَسْبُنَا مَا وَجَدْنَا عَلَيْهِ آبَاءَنَا ۚ أَوَلَوْ كَانَ آبَاؤُهُمْ لَا يَعْلَمُونَ شَيْئًا وَلَا يَهْتَدُونَ
অর্থাৎ, আর ওদেরকে যখন বলা হয় যে, তোমরা আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তার দিকে এবং রসূলের দিকে এস তখন ওরা বলে, আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যাতে (যে মতাদর্শে) পেয়েছি তাই আমাদের জন্য যথেষ্ট। যদিও ওদের পূর্বপুরুষগণ কিছুই জানত না এবং সৎপথপ্রাপ্ত ছিল না, তথাপিও?! (সূরা মায়েদাহ ১০৪ আয়াত)
উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে মুশরিকদের অবস্থা বর্ণনা করে বলেন যে, রসূল ঐ যখন তাদেরকে বললেন, তোমরা কুরআন, আল্লাহর তওহীদ ও একমাত্র তাকেই আহবান করার প্রতি এসো’, তখন তারা বলল, ‘আমাদের বাপ-দাদাদের আকীদা ও বিশ্বাসই আমাদের জন্য যথেষ্ট। কুরআন ঐ দাদু-পন্থীদের প্রতিবাদ করে বলে, তোমাদের বাপ-দাদারা মুখ। ছিল, তারা কিছু জানতো না এবং সৎপথের পথিকও ছিল না।
২। বহু মুসলমানই এই অন্ধানুকরণে আপতিত। এক বক্তা আলেমকে তাঁর বক্তৃতায় বলতে শুনেছি, আপনাদের পূর্বপুরুষরা কি জানত যে, আল্লাহর হাত আছে?
অর্থাৎ, তিনি তাঁর বাপদাদাদেরকে দলীল করে আল্লাহর হাত অস্বীকার করতে চান। অথচ কুরআন তা সাব্যস্ত করে। আল্লাহ তাআলা আদম সৃষ্টির ব্যাপারে বলেন, (مَا مَنَعَكَ أَن تَسْجُدَ لِمَا خَلَقْتُ بِيَدَيَّ) অর্থাৎ, (হে ইবলীস!) আমি যাকে স্বীয় হস্তদ্বয় দ্বারা সৃষ্টি করেছি তাকে সিজদা করতে তোমাকে কে বাধা দিল ? (সূরা সাদ ৭৫ আয়াত)
কিন্তু তাঁর হাত কোন সৃষ্টির হাতের মত নয়। কারণ তিনি বলেন,
(لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ ۖ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ)
অর্থাৎ, কোন কিছু তার সদৃশ নয় এবং তিনি সর্বশ্রোতা সর্বদ্রষ্টা। (সূরা শূরা : ১)
৩। অন্য ক্ষেত্রে আর এক প্রকার ক্ষতিকর তকলীদ (অন্ধানুকরণ) রয়েছে; আর তা হল অশ্লীলতা, নগ্নতা, বেপর্দা ও টাইট-ফিট পরিচ্ছদে পাশ্চাত্যের অন্ধানুকরণ করা। অথচ হায়! যদি আমরা ফলপ্রসু বিজ্ঞান ও আবিষ্কারে যেমন বিমান ইত্যাদি উপকারী আধুনিক যন্ত্রাদি নির্মাণে তাদের অনুকরণ করতাম তাহলে কৃতার্থ হতে পারতাম।
৪। বহু মানুষ আছে তাদেরকে যদি কোন বিষয়ে আপনি বলেন, 'আল্লাহ বলেছেন, আল্লাহর রসূল বলেছেন- তাহলে তারা উত্তর দেয়, আমাদের হুযুর বা পীর সাহেব বা গুরু এই বলেছেন!!’ তারা কি আল্লাহর এই বাণী শ্রবণ করেনি?
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تُقَدِّمُوا بَيْنَ يَدَيِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ
অর্থাৎ, হে মুমিনগণ! তোমরা (কোন বিষয়ে) আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সামনে অগ্রণী হয়ো না। (সূরা হুজরাত ১ আয়াত)
অর্থাৎ আল্লাহ ও রসূলের কথার উপর আর কারো কথাকে শ্রেষ্ঠত্ব ও প্রাধান্য দিও না। ইবনে আব্বাস ৩৬ বলেন, 'আমার মনে হয় ওরা ধ্বংস হয়ে যাবে। আমি বলছি, নবী (সা.) বলেছেন, আর ওরা বলছে, আবু বকর ও উমার বলেছেন!’ (মুসনাদে আহমদ প্রমুখ আহমদ শাকের এটিকে শুদ্ধ বলেছেন)।
যারা তাদের হুযুর ও গুরুর কথাকে দলীলরূপে পেশ করে, তাদের প্রতি বিস্ময় প্রকাশ করে ও প্রতিবাদ করে কবি বলেন,
“আমি বলছি, আল্লাহ বলেছেন ও তাঁর রসূল বলেছেন,
আর তুমি উত্তরে বলছ, আমার শায়খ বলেছেন ?!