মহানবী (সা.) বলেন, “আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু এখন তোমরা যিয়ারত কর। যাতে ঐ যিয়ারত তোমাদেরকে কল্যাণ (পরকাল-চিন্তা) স্মরণ করিয়ে দেয়।” (সহীহ, মুসনাদে আহমদ)
১। কবরস্থানে প্রবেশের সময় মৃত ব্যক্তিদের জন্য সালাম ও দুআ করা। সুন্নত। রসূল (সা.) তাঁর সাহাবাকে এই সালাম ও দুআ পড়তে শিখিয়েছেন।
السَّلامُ عَلَيكُمْ أَهْل الدِّيارِ مِنَ المُؤْمِنِينَ وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ بِكُمْ لاَحِقُونَ أَسْأَلُ اللَّه لَنَا وَلَكُمُ العافِيَةَ
আসালা-মু আলইকুম আহলাদ দিয়া-রি মিনাল মু'মিনীন, অইন্না ইনশাআল্লা-হু বিকুম লালা-হিন, আসআলুল্লা-হা লানা আলাকুমুল আ-ফিয়াহ।
অর্থাৎ, তোমাদের উপর শান্তি বর্ষণ হোক, হে কবরবাসী মুমিনগণ! আল্লাহ চাইলে আমরা তোমাদের সহিত মিলিত হব। আমি আমাদের এবং তোমাদের জন্য (আযাব হতে) নিরাপত্তা কামনা করি।” (মুসলিম)
২। কবরের উপর বসা তার উপর চলা ও দলা বৈধ নয়। কারণ রসূল ঐ বলেন, “তোমরা কবরের দিকে মুখ করে) নামায পড়ো না এবং তার উপর। বসো না।” (মুসলিম)
৩। কববাসীর নৈকট্যলাভের উদ্দেশ্যে কবরের তওয়াফ না করা। যেহেতু আল্লাহ তাআলা বলেন, (وَلْيَطَّوَّفُوا بِالْبَيْتِ الْعَتِيقِ) অর্থাৎ, তারা যেন প্রাচীন গৃহের তওয়াফ করে। (অর্থাৎ কেবল কা’বারই তাওয়াফ বিধেয়।)
৪। কবরস্থানে কুরআন শরীফের কোন অংশ না পড়া। যেহেতু নবী (সা.) প্রক বলেন, “তোমরা তোমাদের গৃহকে কবরস্থান বানিও না। যেহেতু শয়তান সেই গৃহ হতে পলায়ন করে; যে গৃহে সূরা বাক্বারাহ পাঠ করা হয়।” (মুসলিম)
উক্ত হাদীসে ইঙ্গিত রয়েছে যে, কবরস্থান কুরআন পাঠের স্থান নয়। পক্ষান্তরে গৃহে কুরআন পাঠ করতে হয়। প্রকাশ যে, কবরস্থানে বা কবরের পাশে কুরআন পাঠের ব্যাপারে বর্ণিত হাদীসগুলি সহীহ নয়।।
৫। মৃতব্যক্তির নিকট হতে মদদ ও সাহায্য ভিক্ষা করা শির্কে আকবর; যদিও তিনি নবী (সা.) অথবা অলী হন। কারণ আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَلَا تَدْعُ مِن دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَنفَعُكَ وَلَا يَضُرُّكَ ۖ فَإِن فَعَلْتَ فَإِنَّكَ إِذًا مِّنَ الظَّالِمِينَ
অর্থাৎ, তুমি আল্লাহর পরিবর্তে তাদেরকে আহবান করো না; যারা তোমার উপকার করতে পারে না এবং অপকারও করতে পারে না। করলে তুমি সীমালংঘনকারী (মুশরিকদের) শ্রেণীভুক্ত হবে। (সূরা ইউনুস ১০৬ আয়াত)
৬। কবরের উপর ফুলের তোড়া না রাখা অথবা রাখার জন্য পুষ্পস্তবক বহন না করা। কারণ তাতে খ্রিষ্টানদের আনুরূপ্য গ্রহণ করা হয় এবং অনর্থক নিষ্ফল বিষয়ে অর্থ নষ্ট হয়। অথচ ঐ অর্থ যদি মৃতের নামে গরীবদেরকে দান করা হয়, তাহলে মৃত ও গরীব সকলেই উপকৃত হয়।
৭। কবরের উপর ইমারত নির্মাণ অথবা তার উপর কুরআনের কোন অংশ অথবা কোন কবিতা-স্তোত্র লিখন বৈধ নয়। কারণ হাদীসে এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা এসেছে; “তিনি ধ্রু কবরকে পাকা-চুনকাম করতে এবং তার উপর ইমারত নির্মাণ করতে নিষেধ করেছেন।”
কবর চেনার জন্য বিঘত পরিমাণ উচু পাথর (শিয়রদেশে) রাখাই যথেষ্ট। যেমন রসূল (সা.) উসমান বিন মউনের কবরের উপর একটি পাথর রেখে। বলেছিলেন, “আমার ভায়ের কবরের উপর চিহ্ন রাখছি।” (হাদীসটিকে আবু দাউদ হাসান সনদ দ্বারা বর্ণনা করেছেন।